শেষ যুগের ফেতনা জুমু’য়ার খুতবাকেও বন্ধ করতে চাচ্ছে

এমন সময় এসে পড়েছে যখন মূর্খরা প্রতিপত্তি করে বেড়াবে। কোন এক ব্যক্তি আল্লাহ্‌র কালাম ও তার রাসূল হযরত মুহাম্মাদ ছাল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া সাল্লামের মহব্বতে আরবী ভাষা শিক্ষা লাভ করল যেন সে আরবীতে কুরআন বুঝতে পারে, যেন সে আরবীতেই হাদীস বুঝতে পারে, যেন জুম’য়ার খুৎবা, বিবাহের খুৎবা আরবীতেই বুঝতে পারে, এবং রাসূল ছাল্লাল্লাহু য়ালাইহ ওয়া সাল্লামের আরবভূমির মানুষের সাথে মন ভরে আরবীতে দুটো কথা বলতে পারে। এই লোক নিঃসন্দেহে অনেক কষ্ট করে আরবী শিখেছে। যেহেতু সে নেটিভ আরব নয়। — আরেকজন লোক আরবী শিখে নাই। সে আল্লাহ্‌র কালামের ভাষার জন্য, রাসূল ছাল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া সাল্লামের ভাষার জন্য ঐ পরিমাণ কষ্ট স্বীকার করতে রাজি নয়। এবং তার তলবও নেই। —

এই দু’জনের স্ট্যাটাস কি এক হলো? হাজার হাজার বেতলব মানুষের গুরুত্ব বেশী, না কি এই একজন মানুষের গুরুত্ব বেশী। নিশ্চয়ই হাজার হাজার বেতলব মানুষের থেকে এই একজন তলবওয়ালা লোকের গুরুত্ব বেশী।

কিন্তু বলা হচ্ছে, এই মূর্খ বেতলব লোকদের জন্য নাকি বাংলায় খুৎবা দিতে হবে। ফলে যে কষ্ট করে আরবী শিখল, অর্থাৎ এই তলবওয়ালা লোকটা মসজিদে গিয়ে দেখল তার আরবী শেখার কোন মূল্য নেই। মূল্য হলো ঐ হাজার হাজার বেতলব মূর্খ ব্যক্তিদের। কারণ সে মসজিদে গিয়ে দেখল সেখানে বাংলায় খুৎবা হচ্ছে। — এটা কি ইনসাফ হলো? আশ্চর্য হয়ে যাই। কিয়ামতের পূর্বলক্ষণ তো এটা যে মূর্খদের জন্য সমাজ সবকিছু উন্মুক্ত করে দিবে। আর যে কষ্ট করে শিখে, মেহনত করে জ্ঞান অর্জন করে তাদের কোন মূল্যায়ন নেই। মসজিদে গিয়ে তারা দেখবে বাংলায় খুৎবা হচ্ছে, ইংরেজীতে খুৎবা হচ্ছে। তার অন্তরের বেদনা কে অনুভব করবে? আমি জানি না কোন শায়খ এটা তরুণ যুবকদের মোটা মাথায় ঢুকাচ্ছেন। যারাই এসব করে থাকেন তারা নিঃসন্দেহে ভালো কাজ করছেন না। কেন মানুষের মনে হবে তার সুবিধার জন্য রাসূল ছাল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নতকে পরিবর্তন করে ফেলা হবে? আজ থেকে ১৪০০ বছর আগে হযরত হুযাইফা (রাযি) ইরানের শাহ কিসরার রাজদরবারে এ সমস্যার সমাধান করে গেছেন। যখন তিনি মাটিতে পড়ে যাওয়া খাবার তুলে খেয়ে বললেন, “আরে, আমি কি এই বেকুবদের কারণে নবীজি হযরত মুহাম্মাদ ছাল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নত ছেড়ে দিব?” — আর আজকে এইসব বেকুব মূর্খদের জন্য নাকি আরবীতে খুৎবা দেয়া চলবে না।

আরো আশ্চর্য, এদের অনেকে স্বপ্ন দেখেন তারাই ইমাম মাহদী (আলাইহিস সালাম) এর সাথে যোগ দিবেন, তার হাতে বাইয়াত হবেন। সেখানে উনাকে কি বলতে পারবেন, “হযরত বাংলায় খুৎবা দিন। বুঝতে পারতেছি না।” এখন যদি আরবী না জানেন ইমাম মাহদী (আ) আসলে তখন জানবেন এটা বিশ্বাস হয় না। এটা প্র্যাকটিকালি সম্ভব নয়। এক্ষেত্রেও যে ব্যক্তি আগে থেকে মাহদী (আ) এর সাথে দেখা করার জন্য, তার হাতে বাইয়াত হওয়ার জন্য ভাষার প্রস্তুতি নিয়েছে সে বেশী গুরুত্ব পাবে, না কি যে প্রস্তুতি নেয় নি সে বেশী গুরুত্ব পাবে? — আর সব থেকে বড় কথা, রাসূল (সা) তার পবিত্র জবানে আরবীতে কথা বলেছেন, আরবীতে খুৎবা দিয়েছেন রাসূল (সা) -কে যারা ভালবাসে তারা কিয়ামত পর্যন্ত এর অন্যথা হতে দেবে না। এটাই পরিষ্কার কথা। কোন শায়খ কি বলল, এটা কোন বিবেচ্য নয়।

মন্তব্যসহ

বিস্তারিত পড়ুন