যারা মুসলিম উম্মাহকে এক “করাতে” চান

যারা মুসলিম উম্মাহকে এক “করাতে” চান তারা তা ততক্ষণ পর্যন্ত পারবেন না যতক্ষণ না তিনি নিজেকে মুসলিম উম্মাহর সাথে এক করাতে পারবেন। আপনি কি ভাবে এক করাবেন? আপনি তো ইমাম মাহদী য়ালাইহিস সালামকেও মুসলিম উম্মাহর সাথে এক করাতে চেষ্টা করবেন। করবেন না? যতক্ষণ না তিনি আপনার মতের অনুসারী হয়ে যান। যতক্ষণ না তিনি আপনার ও আপনার মুরব্বির বা আপনার আমিরের বাতানো আমল করা শুরু করেন।

প্রজেক্ট নাম্বার এতো -২

হ্যামফারের ডায়েরি পড়ে আমরা জানি ইংরেজরা কিভাবে ওহাবি মতবাদকে সৃষ্টি করে ইসলামি খেলাফত ধ্বংসের মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহকে অনেকগুলো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভাগে বিভক্ত করে ফেলেছে। ইংরেজ গোয়েন্দারা ইসলাম শিক্ষা করে মুসলমান যুবকদের মধ্যে ঢুকে পড়ে তাদের ব্রেনকে কব্জা করে ওহাবি আন্দোলন তৈরি করে। ঠিক যেমন বর্তমানের আইএসকে যেভাবে তৈরি করা হয়েছে।

এটাতো ছিল মধ্যপ্রাচ্যের ঘটনা। ইংরেজ বেনিয়ারা ভারতে কি করেছে? তারা ইসলামি শিক্ষার প্রাণকেন্দ্র মাদ্রাসাকে দখল করে সেখানে ইংরেজ প্রিন্সিপাল সরাসরি বসিয়েছে। আলিয়া মাদ্রাসার প্রথম ২৬ জন প্রিন্সিপালের নাম নীচে দেয়া হলো। যে প্রতিষ্ঠানের প্রধান একজন খ্রিস্টান, নিখুঁতভাবে বললে বলতে হবে যায়োনিস্ট, সে প্রতিষ্ঠানে কি ইসলামের আর কিছু বাকী থাকে? ১৮৫০ থেকে ১৯২৫ এই মোট ৭৫ বৎসর যদি যায়োনিস্টরা ইসলামি শিক্ষাব্যবস্থা দখল করে রাখে সেখান থেকে কি মুসলমান বের হবে নাকি ইহুদি? সেখান থেকে লেখাপড়া করে কুরআনের হাফেজ ও আলেম হয়ে তারা স্বাভাবিকভাবেই ইংরেজদের পদলেহনকারী দরবারী আলেম হওয়া ছাড়া আর কি হতে পারে?

এটা কি খুব আশ্চর্যের বিষয় নয় যে ইংরেজদের তবলীগ, পীর ও ক্বওমী মাদ্রাসা নিয়ে কোন প্রজেক্ট ছিল না? আজকে সমাজ থেকে ইসলামকে বিচ্যুত করে মাদ্রাসাবন্দি করে রাখা ও মসজিদভিত্তিক নানা ধরনের দ্বয়িফ হাদিস, স্বপ্ন ও ফাযায়েলের তিলাওয়াত করা কি তাই প্রমাণ করে না যে সেখানে ইংরেজদের হিংস্র দাঁত বসেছে? ৪০ দিনের চিল্লার নতুন ফরমুলা, পীরদের খেলাফত, বাবাপীর, দাদাপীর এসব টার্ম ইসলামে নানা ধরনের নতুন জিনিস ঢুকানো ইত্যাদি বিদয়াত দিয়ে মানুষের মগজ ধোলাই করা কি প্রমাণ করে?

ইহুদিরা রাসূল ছাল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া সাল্লামের কথা চুপিসারে কেন শুনতো? হেদায়েত লাভের উদ্দেশ্যে? না কি ইসলামের মধ্যে কিভাবে ভেজাল ঢুকানো যায় তার ফন্দি ফিকিরের উদ্দেশ্যে। তাদের চুরি করে কথা শুনার উদ্দেশ্য আজ পূর্ণ হয়েছে। ইংরেজরা সব হজম করেছে, কিন্তু এখনো সিরিয়াকে হজম করতে পারেনি। গিলতেও পারেনি। গলায় আটকে আছে। এখান থেকেই শুরু হবে ইংরেজদের গলার ক্যান্সার, ইনশাআল্লাহ্‌।

বিভিন্ন সময়ে নিয়োজিত আলিয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপালবৃন্দঃ
নামঃ – কার্যকালঃ
(১) এ স্প্রেঙ্গার এম,এ – ১৮৫০ ইং
(২) স্যার উইলিয়াম নাসনলীজ এল,এল,ডি – ১৮৭০ ইং
(৩) জে স্যাটক্লিফ এম,এ – ১৮৭০ ইং
(৪) এইচ, এফ, ব্রকম্যান এম, এ – ১৮৭৩ ইং
(৫) এ,ই, গাফ এম, এ – ১৮৭৮ ইং
(৬) এ, এফ, আর হোর্নেল সি,আই,ই,পি,এইচ,ডি – ১৮৮১ ইং
(৭) এইচ প্রথেরো এম, এ – ১৮৯০ ইং
(৮) এ, এফ, হোর্নেল – ১৮৯০ ইং
(৯) এ, জে, রো,এম, এ – ১৮৯২ ইং
(১০) এ, এফ হোর্নেল – ১৮৯২ ইং
(১১) এ, জে, রো – ১৮৯৫ ইং
(১২) এ, এফ, হোর্নেল – ১৮৯৭ ইং
(১৩) এফ, জে, রো – ১৮৯৮ ইং
(১৪) এফ, সি, হল – ১৮৯৯ ইং
(১৫) স্যার অর‌্যাল স্টেইন – ১৮৯৯ ইং
(১৬) এইচ, এ,স্টার্ক – ১৯০০ ইং
(১৭) কর্ণেল রেস্কিং – ১৯০০ ইং
(১৮) এইচ, এ,স্টার্ক – ১৯০১ ইং
(১৯) এড, ওয়ার্ড ভেনিসন – ১৯০৩ ইং
(২০) এইচ, ই, স্টেপেল্টন – ১৯০৩ ইং
(২১) ডেনিসন রাস – ১৯০৪ ইং
(২২) মিঃ চীফম্যান – ১৯০৭ ইং
(২৩) এড,ওয়ার্ড, ডেনিসন – ১৯০৮ ইং
(২৪) এ, এইচ হারলি – ১৯১১ ইং
(২৫) জে, এম বুটামলি – ১৯২৩ ইং
(২৬) এ, এইচ হারলি – ১৯২৫ ইং

।।

সাম্প্রতিক সময়ে ক্বওমী সনদকে মাস্টার্সের সমমান করে সম্মান দেয়াকেও ক্বওমী মাদ্রাসার উপর জুয়িশ বা যায়োনিস্ট কন্সপিরেসি হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। আমরা দেখতে পাবো ক্বওমীর উপর ইহুদিদের প্রভাব এবং ওহাবী ও সালাফীদের মতো অপর আর একটি নতুন ফেরকা হিসেবে ক্বওমীদের আবির্ভাব।

Please Read,

প্রজেক্ট নাম্বার এতো -১

আমি একজন মুসলিম

এই অঞ্চলে ইসলামের ভবিষ্যতের জন্য যাহারা কাজ করিবেন তাহাদেরকে প্রথমে সকল মুসলমানদেরকে ঐক্যবদ্ধ করিতে হইবে । আপনাদের এমন একটি জামায়াত থাকিতে হইবে যাহাতে বেরেলভী এবং দেওবন্দীরা ভাই ভাই রূপে একত্রে কাজ করিবে । ইহা কি সম্ভব ? যাহারা বলেন অসম্ভব তাহারা দয়া করিয়া আমার লেকচারে আসিবেন না । আমি আপনাদের কোন সাহায্য করিতে পারিব না । আপনারা অন্য কোথাও যান, অন্য কাহারো কাছে যান । ঈমানদারদেরকে একতাবদ্ধ করা কোরআন-সুন্নাহর কাজ । কাজেই কোরআন-সুন্নাহ যদি আপনাদেরকে ঐক্যবদ্ধ করিতে না পারে, তবে আপনারা অন্য কোথাও যান । কেননা আপনাদের পকেটে সম্ভবত দাজ্জাল আছে । সুতরাং ইহাকেই বলে দলাদলি, ফেরকাবাজি, উর্দুতে বলে ফিরকাবন্দি । আল্লাহ বলেন, “তোমরা সম্মীলীতভাবে আল্লাহর রজ্জুকে শক্তভাবে আকড়াইয়া ধর এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হইয়া যাইও না”। ইহা আল্লাহর আদেশ । আপনাদের অন্তরে কি ভয় নাই যে আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করিলে আল্লাহ আপনাদের সাথে কি ব্যবহার করিবেন ? আল্লাহ আপনাদের কি শাস্তি দিবেন সেই ভয় নাই আপনাদের মনে ? আল্লাহ যেখানে হুকুম করিয়াছেন একতাবদ্ধ থাকিতে । আমরা তাহাই করিতে চাই । কিন্তু আপনারা যদি নিজেদের ফেরকাবাজী নিয়া থাকিতে চান, তবে আপনারা আপনাদের পথে চলিতে থাকুন । কাজেই আপনারা যদি মুসলমানদের মধ্যে ঐক্য সৃষ্টি করিতে চাহেন, তবে প্রথমে নিজেদেরকে এই সেই অমুক তমুক ইত্যাদি দলের নামে পরিচয় দেওয়া বন্ধ করিতে বাদ দিতে হইবে । না ভাই আমি কোন ফেরকাহর সাথে নাই, আমি একজন মুসলিম । আমি জানি আমার কথাগুলি তরুণ যুবকদের অন্তরে আকর্ষণ সৃষ্টি করিতেছে । আমার ওস্তাদ মাওলানা ডঃ ফজলুর রহমান আনসারী একজন বড় মনিষী ছিলেন । তিনি সব সময় বলিতেন আমি দেওবন্দি নই, আমি বেরেলভী নই, আমি আহলে হাদীস নই, আমি ওহাবী নই, আমি একজন মুসলিম । কাজেই এক নাম্বারে আপনাদেরকে বলিতে হইবে, না ভাই আমি কোন দলের সাথে নাই, আমি একজন মুসলিম ।

আল্লামা ইমরান নজর হোসেন
অনুবাদ – বশীর মাহমুদ ইলিয়াস

বিদ’য়াতমুক্ত ইসলাম ধর্ম পালন করতে চাই

দুপুর থেকে মাইকে শুরু হয়েছে গজল। বাংলা / হিন্দি সিনেমার সুর নকলের অভিযোগ তো আছেই। থেকে থেকে কুরআন তিলাওয়াত। খালি স্টেজে কিসের জন্য এতো জোরে কুরআন তিলাওয়াত আল্লাহই জানেন। সওয়াবের নিয়তে পড়লে তো আস্তে আস্তে পড়লেই চলত। একটু পর পর ঘোষনা, আর কিছুক্ষণ পর শুরু হবে মাহফিল। আসবেন অমুক আল্লামা। আসলে শুরু হবে সন্ধ্যার পর। টাইম পাস করার জন্যই এগুলো বলা।

এখন বাজছে রাত সাড়ে ১২ টা। মাইকে হাউমাউ কান্নার শব্দ আসছে। আল্লাহ্‌র কাছে কাদলে মাইকে কাদতে হবে কেন? আল্লাহ্‌ই জানেন কতক্ষণ চলবে এই কান্না। প্রতিদিন এই কান্না কাদেন তো তারা, নাকি মাহফিলের দিনই কাদেন? একটু পরই তো শুরু হবে কি’য়ামের সময়। কই কি’য়ামের কথা তো কেউ বলে না।

দেশটা ছেয়ে গেছে বিদ’য়াতে।

।।

কুরআন ও সুন্নাহর কষ্টিপাথরে একটু ঘষা দিলেই কোনটা ইবাদত আর কোনটা বিদ’য়াত দিনের আলো ও রাতের অন্ধকারের মতো পৃথক হয়ে যায়।

February 10, 2017 at 12:41am

প্রজেক্ট নাম্বার এতো -১

ইহুদীদের অনেক প্রজেক্ট আছে। মুসলমানদের ভেতর। প্রজেক্ট ম্যানেজাররা এক একজন জীবন্ত দরবেশ। কিভাবে বুঝবেন এসব দরবেশ যে ইহুদিদের প্রডাক্ট? সাধারণ মুসলমানদের জন্য তাদের ধরা খুব কঠিন। এরা আপনাকে ঈমানের কথা বলবে, আখিরাতের কথা বলবে। তাহলে কিভাবে চিনবেন তাদের?

(১) যখন দেখবেন তারা ইসলামের একটা বিকৃত রূপকে উপস্থাপন করছে ইসলামের নাম দিয়ে।

প্রথমে কুরআন ও সুন্নাহকে মাত্র একটু বিকৃত করে এবং বলে দ্বীনের স্বার্থে করা হয়েছে। অল্প কয়েকদিন পরেই তারা একটা বিকৃত ইসলাম উপহার দেয়।

(২) যখন দেখবেন ইসলামের নাম দিয়ে তারা তাদের দলের দিকে মানুষকে ডাকছে। তারা বলবে তোমাকে এই এই করতে হবে। এই এই জায়গায় তোমার সময় ও সম্পদ ব্যয় করতে হবে। তারপর একটা মূলো ধরিয়ে দিবে। সেটা চল্লিশ দিন হতে পারে, চল্লিশ বছর হতে পারে।

শিয়া হল ইহুদীদের একটি পুরনো প্রজেক্ট।

যারা সুন্নী তাদের মধ্যে অনেক সাব প্রজেক্ট আছে। যারা বিকৃত ইসলামের দিকে মানুষকে ডাকে। এবং ডাকে নিজেদের দলের দিকে। কৌশলে। অতি কৌশলে।

তাবলীগ জামাত, জামায়াতে ইসলামী, চরমোনাই পীর, আইএস, আল-কায়েদা, আহলে হাদীস, মাদ্রাসা, মডারেট ইসলাম, ওহাবিজম এগুলো সবই সাব প্রজেক্ট। হক্বের অতি কাছাকাছি বা অতি সদৃশ দেখে মানুষ মনে করে আসলেই হক্ব। যদিও কিছু ক্ষেত্রে হক্ব দিয়েই সম্ভবত শুরুটা হয়। ধীরে ধীরে ইহুদীদের অনুপ্রবেশ ও হ্যাকিং শুরু হয়।

সব প্রজেক্টে লাভও আছে, লসও আছে। তাবলীগ জামাত ও মাদ্রাসা প্রজেক্ট দু’টিতে তাদের লাভও বেশী হয়েছে, লসও বেশী হয়েছে।

হাজার হাজার লাখ লাখ মানুষ ইসলামের বেশ ভালো একটা ফ্লেভার পেয়েছে। আবার হাজার হাজার লাখ লাখ মানুষ অপভ্রংশ ইসলামকে আসল ইসলাম মনে করেছে।

সম্ভবত, তবলিগ জামাত প্রজেক্টের প্রয়োজনীয়তা ওদের কাছে ফুরিয়েছে। তাই এই অধ্যায়কে তারা শেষ করতে চাইছে। জাল গুটাচ্ছে। ইসলামের ফ্লেভার দিতেও তারা আগ্রহী নয়।

।।

সাম্প্রতিক সময়ে ক্বওমী সনদকে মাস্টার্সের সমমান করে সম্মান দেয়াকেও ক্বওমী মাদ্রাসার উপর জুয়িশ বা যায়োনিস্ট কন্সপিরেসি হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। আমরা দেখতে পাবো ক্বওমীর উপর ইহুদিদের প্রভাব এবং ওহাবী ও সালাফীদের মতো অপর আর একটি নতুন ফেরকা হিসেবে ক্বওমীদের আবির্ভাব।

আগে ভাবতাম কুরআনের এতো বেশী সংখ্যক স্থানে ইহুদীদের শয়তানীর বর্ণনা কেন? কেন বনী ইসরাঈলের এতো আলোচনা ?

আসলে,

ইহুদীদের ষড়যন্ত্র এমন যেন পাহাড়কে টলিয়ে দেয়।

Please Read,

প্রজেক্ট নাম্বার এতো -২

Jewidh Conspiracy

শিয়ারা কি কাফের ?

মূলঃ আল্লামা ইমরান নযর হোসেন

অনুবাদঃ বশীর মাহমুদ ইলিয়াস

প্রথম কথা হইল কাউকে কাফের ঘোষণা করিবার পদ্ধতি কি ? তাহা হইল প্রথমে কোরআন-হাদীসে অসাধারণ যোগ্যতা সম্পন্ন এমন একজন আলেমকে দ্বায়িত্ব দিতে হইবে ফাতওয়া দেওয়ার জন্য যাহার যোগ্যতার ব্যাপারে কাহারো কোন সন্দেহ নাই । তিনি কোরআন-হাদীসের ভিত্তিতে কাফের ফতোয়া দিলে সেই ফতোয়াকে সমগ্র মুসলিম উম্মাহ ঐক্যবদ্ধভাবে গ্রহন করিয়া নিবেন । এই ফাতওয়ার ব্যাপারে মুসলিম উম্মাহর মধ্যে ইজমাহ অর্থাৎ একমত হইতে হইবে । আর তখনই কেবল সেই ব্যক্তি বা দলকে কাফের হিসাবে গণ্য করা যাইবে । যেমনটা হইয়াছে কাদিয়ানীদের ক্ষেত্রে । কিন্তু শিয়াদের ক্ষেত্রে মুসলিম উম্মাহর মধ্যে এমন কোন ইজমাহ বা ঐক্যমত্য সৃষ্টি হয় নাই । বিগত চৌদ্দশত বছরে পবিত্র মক্কায় অগণিত সুন্নী শাসক ক্ষমতাশীন হইয়াছিলেন কিন্তু কোন সুন্নী শাসকরাই শিয়াদেরকে হজ্জ করিতে নিষেধ করেন নাই । কাজেই আমাদের শিয়া ভাইয়েরা কাফের নয় বরং নিশ্চিতভাবেই মুসলিম । অনেকে বলিয়া থাকেন যে, ইমাম গাজ্জালী শিয়াদেরকে কাফের ফতোয়া দিয়াছেন । উত্তরে আমি বলিব শর্ত একটাই । আর তাহা হইল কত বড় ব্যক্তিত্ব ফাতওয়াহ দিয়াছেন তাহা বিবেচনার বিষয় নয় বরং দেখিতে হইবে যে মুসলিম উম্মাহ ঐক্যবদ্ধভাবে সেই ফতোয়া গ্রহন করিয়া নিয়াছেন কিনা । যাহারা মনে করেন শিয়ারা কাফের তাহাদেরকে বলিব শিয়াদেরকে যদি কাফেরই মনে করেন তাহলে তাহাদের হজ্জ করা বন্ধ করেন না কেন ? কাফেরদের জন্য তো হজ্জ করার অনুমতি নাই । সুতরাং কথায় কথায় শিয়াদেরকে কাফের বলিবার মতো ফালতু কাজ বন্ধ করেন । অন্যথায় আপনি নিজেই কাফের হইয়া যাইবেন । আল্লাহর নবী (সাঃ) ভবিষ্যতবাণী করিয়া গিয়াছেন যে, আখেরী জামানায় তোমরা রুমের সাথে জোট বাধিবে । আর রুম বলিতে মহানবী (সাঃ) লন্ডন বা ওয়াশিংটনের খ্রীষ্টানদের বুঝান নাই । কেননা রাসুলে পাক (সাঃ) যুগে এগুলোর কোন অস্তিত্বই ছিল না । রুম বলিতে নবী করীম (সাঃ) কনন্সট্যান্টিনোপোল ভিত্তিক বাইজান্টাইন অর্থোডক্স খ্রীষ্টানদেরকে বুঝাইয়াছেন যাহাদের বর্তমান নেতা হইল রাশিয়া । বর্তমানে একমাত্র শিয়া ইরানই নবীজির (সাঃ) ভবিষ্যতবাণী অনুযায়ী রাশিয়ার সাথে জোট বাধিয়াছে, কোন সুন্নী মুসলিম দেশ কিন্তু এই কাজে করিতে পারে নাই । সুন্নীরা বর্তমানে যায়োনিষ্টদের এজেন্ট হিসাবে কাজ করিতেছে । গতবছর আমি ইরানে মুক্তচিন্তার গবেষকদের এক আন্তর্জাতিক সেমিনারে অংশগ্রহন করিয়াছিলাম । সেখানে আমি যেসব কথা বলিয়াছি তাহা যদি সুন্নী দেশ সৌদী আরবেও বলিতাম তবে আমাকে তৎক্ষণাৎ গ্রেফতার অথবা দেশ হইতে বহিষ্কার করা হইত । কিন্তু ইরানীরা আমাকে গ্রেফতারও করে নাই আর আমাকে কথা বলিতেও বাধা দেয় নাই । বরং তাহারা আমাকে অনেক সম্মানের সাথে গ্রহন করিয়াছে । ইরানের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদেনিজাদের সাথে আমার খোলামেলা দীর্ঘ আলাপ হইয়াছে । তিনি খুবই ভালো মানুষ এবং একজন জ্ঞানী ব্যক্তি । পৃথিবীর সমস্ত টাকা দিয়াও কেউ তাহাকে কিনিতে পারিবে না । আমি সেমিনারে বলিয়াছি যে, দাজ্জালের একমাত্র স্বপ্ন মুসলমানদেরকে শীয়া-সুন্নী দুই দলে ভাগ করিয়া গৃহযুদ্ধ বাধাইয়া দেওয়া । আর তাহা হইলে সে বিনা পরিশ্রমে মুসলমানদেরকে ধ্বংস করিতে পারে । যায়োনিষ্টদের এই স্বপ্নকে ব্যর্থ করিবার জন্য শীয়া-সুন্নী দুই দলকেই কিছু দ্বায়িত্ব পালন করিতে হইবে । প্রথমে সুন্নীদেরকে “শীয়ারা কাফের” এই জাতীয় ফালতু কথা বলার অভ্যাস ছাড়িতে হইবে । দ্বিতীয়তঃ শিয়াদেরকেও কিছু হোমওয়ার্ক করিতে হইবে । আমরা সকলেই বিশ্বাস করি যে, যেই কথা কোরআনে উল্লেখ নাই তাহা কখনও ইসলামের মূলভিত্তি হইতে পারে না । কেননা হাদীস আমাদের ধর্মগ্রন্থ নয় বরং হাদীস হইল আমাদের ধর্মগ্রন্থের ব্যাখ্যা গ্রন্থ । আপনারা কোরআন থেকে প্রমাণ করে দেখান সেখানে কোথায় বলা আছে যে নেতৃত্ব বা খেলাফত একই পরিবারে সীমাবদ্ধ থাকিবে বা নবীজির (সাঃ) পরে আলী (রাঃ) খলিফা হইবেন । যদি প্রমাণ করিতে না পারেন তবে আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ) , ওমর ফারুক (রাঃ) , ওসমান গনি (রাঃ) জোরপূর্বক খলিফা হইয়াছেন এই জাতীয় ফালতু কথা বলা ছাড়েন । হ্যাঁ, আমি অনেক শীয়াকে হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ) -এর নামের সাথে রাদিয়াল্লাহু আনহু বলিতে নিজের কানে শুনিয়াছি ।

শিয়াদের ধর্মগুরু, ইয়াহুদি ইবনে সাবার বায়োগ্রাফি – ২য় পর্ব

লিখেছেন: কুতায়বা আহসান

১ম পর্ব পড়ার জন্য এখানে ক্লিক করুন

ইবনে সাবা মিশরে

দামেশক থেকে তাড়া খেয়ে ইবনে সাবা মিশরে চলে আসে। বিভিন্ন ঘাটের তিতা-মিঠা পানি খেতে খেতে সে অধিকতর পরিণামদর্শী হয়ে উঠেছিল। দুধ-পাত্র থেকে চুরি করে সরখাওয়া বিড়ালের মতো সতর্ক পা ফেলতে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছিল।

এমনিতেই মিশরীয় জনগণ এবং মিশরে অবস্থানরত আরবদেরও বিরাট এক অংশ গভর্ণর হযরত আব্দুল্লাহ বিন সা’দ এর উপর অসন্তুষ্ট ছিল। কারণ তাঁর স্বভাবে ছিল কিছুটা খোদমুখতারি ভাব। তাছাড়া রাজনীতিতেও তিনি সাবেক গভর্ণর হযরত আমর ইবনুল আস রাযি. এর মতো ঝানু ছিলেন না। তদুপরি আফ্রিকা আর ত্রিপোলির নিরাপত্তাভাবনা, রোমানদের উপর্যুপরি আক্রমণ প্রতিহত করার পাশাপাশি জেগে উঠা বিদ্রোহদমনের ঝামেলা, তাঁকে প্রায় অবসরহীন করে তুলেছিল।

ফলে অভ্যন্তরীণ বিষয়াদিতে কড়া নজর রাখার মতো ফুরসতও তাঁর ছিল না। ইবনে সাবা পরিস্থিতিটাকে মোক্ষম সুযোগ জ্ঞানে মানুষের সেন্টিমেন্টকে কাজে লাগিয়ে তার মিশনে ঝাপিয়ে পড়ে। মদীনা থেকে নিরাপদ দূরে থাকার কারণে বসরা আর কুফার মতো আশংকারও তেমন কিছু ছিল না। তাই মিশরকেই হেডকোয়ার্টার বানিয়ে নিয়ে বসরা আর কুফায় রেখে আসা তার সাঙ্গ-পাঙ্গদের সাথে পত্র যোগাযোগ গড়ে তুলে। মিশরে পৌঁছেই ইবনে সাবা ব্যাপকভিত্তিক কাজে হাত দেয়।

মিশরের জীবনটা ঝুঁকিমুক্ত মনে করে সে তার বিভ্রান্তি প্রচারের পাশাপাশি ইসলামের সমান্তরালে আরেক নতুন ধর্মমত (অথচ বাহ্যদৃষ্টিতে পৃথক কোনো ধর্মমত হিসেবে দৃশ্যমান নয়) আবিস্কারের দিকে মনোযোগী হয়।

সে তার প্রবর্তিত ধর্মটির ভিত্তি দু’টি বিষয়ের উপর স্থাপন করে।
একটি হচ্ছে— “মুহাব্বাতে আহলে বায়ত ও মুহাব্বাতে আলী”, আর
অপরটি হচ্ছে— “মাসআলায়ে ইমামত”।

এ বিষয় দুটি প্রতিষ্ঠা করতে যেয়ে তাকে যতো মিথ্যার আশ্রয় নিতে হয়েছিল সবগুলোকেই তার ধর্মমতের এক একটা গুরুত্বপূর্ণ আকীদায় রূপান্তর করে নেয়।

মুহাব্বাতে আহলে বায়তের দাবী থেকে জন্ম দেয় ইমামতবাদের আর মুহাব্বাতে আলীর দাবী থেকে জন্ম দেয় আলী রাযি. এর প্রভু হবার আকিদার।

পাঠক! নুসায়রী শিয়া, যারা হযরত আলী রাযি. কে খোদা বলে বিশ্বাস পোষণ করে থাকে, যাদের একটি দলকে হযরত আলী রাযি. জ্বালিয়ে হত্যা করেছিলেন, তাদেরও ধর্মগুরু ছিল এই ইবনে সাবা।

ইমামতবাদ প্রচার করতে যেয়ে প্রথমেই তাকে খেলাফত ব্যবস্থার সাথে টক্কর খেতে হয়, সুতরাং সে দাবী করে বসে প্রিয় নবীর সা. ইন্তেকালের পর আলী রাযি.ই ছিলেন প্রথম ইমাম তথা খলিফা, কিন্তু সিদ্দীকে আকবার ও ফারুকে আযম সমঝোতার ভিত্তিতে তা ছিনিয়ে নেন। এবং সেই ধারাবাহিকতায় বর্তমান খলিফাও ঐ আসনে। ইনিও জালেম। এরা এবং যারা এদের অনুসরণ করছে তারা সত্য থেকে প্রত্যাবৃত্ত হবার কারণে মুরতাদ হয়ে গেছেন। বর্তমান খলীফাকে হঠানো উম্মাহর উপর ওয়াজিব। (নাউযুবিল্লাহ)

শিয়া আলেমদের দৃষ্টিতে ইবনে সাবা

শিয়াদেরকে যদি ইবনে সাবা সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয় তাহলে তারা বিব্রত হয়ে পড়ে। তেঁতো সত্যটা যেমন গিলতে পারে না তেমনি ফেলতেও পারে না। দেখুন ইবনে সাবা প্রশ্নে শিয়াদের কেমন পাশ কাটানোর প্রয়াস।

“আসমাউর রিজাল” শাস্ত্রে “রিজাল কুশী” গ্রন্থটিই হচ্ছে তাদের কাছে সর্বাধিক মুসতানাদ তথা নির্ভরযোগ্য। ঐ কিতাবের ৭১ পৃষ্ঠায় ইবনে সাবা সম্পর্কে বলা হয়েছে— বিস্তারিত পড়ুন

শিয়াদের ধর্মগুরু, ইয়াহুদি ইবনে সাবার বায়োগ্রাফি – ১ম পর্ব

লিখেছেন: কুতায়বা আহসান

পবিত্র কুরআন বলেছে মুসলমানদের প্রতি, “আশাদ্দে আদাওত” তথা কঠিনতম শত্রুতা রাখে যে জাতি, তারা হলো ‘ইহুদি জাতি’।

কিন্তু তাদের শত্রুতার কারণ ছিল বড়ই হাস্যকর। ঠুনকো সেই অজুহাতে ইহুদি জাতি মুসলিম উম্মাহর শত্রু হবার কথা ছিল না। কথা ছিল জাযিরাতুল আরবে তারাই হবে ইসলামকে সর্বপ্রথম স্বাগতম জানানো জাতি।

কারণ আমরা দেখতে পাই— বুখতে নাসারের জাতিনির্মূল অভিযান থেকে বেঁচে যাওয়া হযরত হারুন আ. এর কতিপয় ইহুদি আওলাদ আরবের ইয়াসরিবে এসে বসতি স্থাপন করেছিল। এখানে তাদের বসতি স্থাপনের একমাত্র কারণ এটাই ছিল যে, তারা তাওরাতের বাণীর আলোকে বুঝতে সক্ষম হয়েছিল— এ জায়গাটাই হবে শেষ নবীর ইসলাম প্রচারের কেন্দ্রস্থল। কেননা মক্কা থেকে উত্তর দিকে ঘন খেজুর বাগান সমৃদ্ধ এলাকা শুধু এটাই হতে পারে।

তাদের বংশের কেউ মারা গেলে সে তার অধঃস্তন বংশধরকে এই বলে অসিয়ত করে যেত যে, তোমরা যদি শেষ নবীর যুগ পাও, তাহলে কোন দ্বিধাদন্দ্ব ছাড়াই তাঁর ধর্মমত গ্রহণ করে নেবে। কেননা তাঁর ধর্মমত হবে কিয়ামত অবধি স্থায়ী এবং বিশ্বজয়ী। স্থানীয় ইয়াসরিবীদের সাথে যখনই তাদের সংঘাত বাঁধতো এবং তারা পরাজিত হতো, তখন এই বলে নিজেদের প্রবোধ দিত— সবুর কর “ফারাকলিত” (মুহাম্মাদ সা.) আসুক, আমরা তখন তাঁর অনুসারী হয়ে এ অন্যায়ের শোধ তুলবো।

কিন্তু যখন মক্কায় নবুওতের আবির্ভাব ঘটলো তখন তারা হতাশ হয়ে পড়লো। একটা ইহুদিও তাঁকে স্বাগতম জানাতে এগিয়ে গেল না। বরং অন্তরে অন্তরে বিদ্বেষ পোষণ শুরু করলো। এ বিদ্বেষের কারণটা ছিল একেবারেই ঠুনকো। একেবারেই হাস্যকর। কারণটা ছিল প্রবল আসাবিয়্যাহ বা প্রচণ্ড জাত্যাভিমান। তাদের শতভাগ আকাঙ্খা ছিল শেষ নবী আসবেন বানি ইসহাকের সদস্য হয়ে। এতে ইসরাইল জাতি কেয়ামত তক মাথা উঁচু জাতি হিসেবে থাকবে।

কিন্তু দেখা গেল শেষ নবী এসেছেন হাজেরার গর্ভে জন্ম নেয়া ইসমাঈলের বংশধর হয়ে। এই অগ্রহণযোগ্য কারণটাই পথ রোধ করে দাঁড়ালো তাঁদের ইসলাম গ্রহণের।

উম্মুল মু’মিনিন হযরত সাফিয়্যাহ বিনতে হুয়াই বিন আখতাব (রা.) বলেন: যেদিন প্রিয় নবী সা. মক্কা থেকে মদীনায় চলে আসেন সেদিন তাঁর আগমন প্রত্যক্ষ করার জন্যে বাবা এবং চাচাও ছুটে গিয়েছিলেন। তাঁরা মদীনার আনসারদের প্রাণখোলা আনন্দ দেখে মরমে মরমে জ্বলে যাচ্ছিলেন। বিকেলে বিরস বদনে ফিরে আসলেন। তাঁদের চোখ মুখ থেকে ক্লান্তি আর হতাশা ঝরতে দেখা যাচ্ছিল।

বাড়ি এসে বাবা চাচাকে জিজ্ঞেস করলেন ইনিই কি সেই? চাচা বললেন খোদার কসম ইনিই সেইজন, যার প্রতীক্ষা আমরা করছিলাম। বাবা জিজ্ঞেস করলেন এখন কী সিদ্ধান্ত? আনুগত্য না আদাওত (শত্রুতা)? চাচা বললেন: ওয়াল্লাহি আল আদাওয়াহ! “খোদার শপথ শত্রুতা শত্রুতা শত্রুতা”। বিস্তারিত পড়ুন