অস্বাস্থ্যকর দশটি জিনিস

সুস্থ থাকার জন্য এই দশটি জিনিস থেকে বেঁচে থাকুন। পারলে ঘর থেকে বিদেয় করে দিন।
 
(1) Artificial Sweeteners – বারডেমওয়ালারা আপনাকে বলবে চিনির বদলে আর্টিফিসিয়াল সুইটেনার খান। মানে ডায়াবেটিসের বদলে ক্যানসার ডেকে আনুন।
 
(2) Plastic Food Containers and Bottles – ক্যানসার, হাই ব্লাড প্রেসার, লো আই কিউ শিশু, বাচ্চা না হওয়ার প্রবলেম।
 
(3) Non-Stick Cookware – এই নন স্টিক উপাদানটা ক্যানসার সৃষ্টি করে। গ্লাস বা সিরামিকের কুকওয়ার ব্যবহার করুন।
 
(4) Air Fresheners –
বাজে জিনিস, শরীরের হরমোনের ক্ষতি করে, ক্যানসার সৃষ্টি করে। গন্ধ হলে গন্ধ মাস্ক না করে উৎস খুঁজুন। দরজা জানালা খুলে দিন। সুগন্ধের জন্য এসেনশিয়াল ওয়েল ব্যবহার করুন।
 
(5) Antibacterial Soaps and Detergents – এসব রুটিনলি ব্যবহার করা ঠিক নয়। গোসলের জন্য হালকা গরম পানি ও সাধারণ সাবান যথেষ্ট। পর্যাপ্ত পানি দিয়ে ধৌত করলেই শরীর বা হাত পর্যাপ্ত জীবনামুক্ত হয়। এর বেশি করার দরকার নেই।
 
সাবান বা টুথপেস্টে এন্টিব্যাক্টেরিয়াল উপাদান এলার্জি, হরমোনের সমস্যা, ওয়েট গেইন, ইনফ্লামেশন সহ নানা ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
 
(6) Commercial Cleaning Products -রান্নাঘর এবং বাথরুম ডিসইনফেকশন করার জন্য বেকিং সোডা, 3% হাইড্রোজেন পারক্সাইড বা হোয়াইট ভিনেগার ব্যবহার করুন।
 
(7) Personal Care Products – লোশন, শ্যাম্পু, মেকআপ এগুলোর মাধ্যমে প্রতি বছর আপনার শরীরে 5 পাউন্ড ক্যামিকেল স্কিনের মাধ্যমে এবজর্ব হয়। আই লাইনার, মাসকারা, লিপিস্টিক এগুলোতে সীসা থাকে। এসব বাদ দিয়ে পার্সনাল কেয়ারের জন্য খাঁটি নারিকেল তেল বা সরিষার তেল ব্যবহার করুন।
 
(8) Stale Spices – বাসি পুরানো মসলা ফেলে দিন। টাটকা ফ্রেস মসলা ব্যবহার করুন। মসলাতে শাকসবজি ও ফলের চেয়ে বেশি এন্টি অক্সিডেন্ট থাকে যা খুব উপকারী। বাসি মসলায় এসব উপাদান নষ্ট হয়ে যায়।
 
(9) Electronic Devices – ওয়ারলেস রেডিয়েশন মারাত্মক জিনিস। বিশেষ করে যারা মোবাইল পকেটে রাখেন। তারা কন্টিনিউয়াস রেডিয়েশন এক্সপোজারের মধ্যে থাকেন। তাই মোবাইল শরীর থেকে দূরে রেখে বহন করবেন।
 
(10) Chair – চেয়ারে বসে কাজ করা স্মোকিংয়ের চেয়েও খারাপ জিনিস। যতই ব্যয়াম করা পেটানো শরীর হোক না কেন চেয়ার টাইপ টু ডায়াবেটিস মেলাইটাস, ওবেসিটি, পেইনসহ নন কমিউনিকেবল ক্রনিক ডিজিজের একটি অন্যতম কারণ। অবাক হলেও সত্য চেয়ারে বসে কাজ করা জীবনের কোয়ালিটিকে কমিয়ে দেয় এবং মৃত্যুকে ত্বরান্বিত করে। কাজ করার জন্য স্ট্যান্ডিং ডেস্ক বানিয়ে নিন। দাঁড়িয়ে কাজ করুন। কাজের মাঝে মাঝে হাঁটুন।
 
#Find_out_reality
 
তথ্যসূত্র: ডা: জোসেফ মারকোলা।

স্বাস্থ্যের প্রাথমিক জ্ঞান যা অনেক শিক্ষিত মানুষেরও নেই

আমেরিকার মানুষ এখন কোক খাওয়া ছেড়ে দিচ্ছে। বা ছাড়ার জন্য স্ট্রাগল করছে। এর মূল কারণ চিনি ও আর্টিফিসিয়াল সুইটেনার। কারণ তারা এখন স্বাস্থ্য সচেতন হচ্ছে। জেনে গেছে পরিণতি। কোককে ওরা বলে সোডা। সেখানে কোকের বিক্রি ৭% কমে গেছে।
 
Coca-Cola is engaging in an intensive marketing ploy to “reintroduce” Coke, using smaller serving sizes and personalized cans to target teens. Marketing Ploy মানে বাজারজাত করার কৌশল।
 
আসুন আমরা সোডার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে কিছু জানি।
 
সোডা খাওয়ার পর ব্রেনে মারাত্মক প্রতিক্রিয়া হয়। ২০ আউন্সের একটা কোকের বোতলে ১৬ চামচ চিনি থাকে ফ্রোকটোজ সিরাপ হিসেব। এ জিনিস পরিপাকের জন্য ইনসুলিন প্রয়োজন হয়, কিন্তু এটা একই সাথে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স করে। ফলে ইনসুলিন কাজ করতে পারে না। ফলাফল ডায়াবেটিস।
 
আসুন আমরা দেখি এক কৌটা কোক খেলে শরীরে কি কি ঘটে। খুব মন দিয়ে খেয়াল করুন।
 
Within 20 minutes: Blood Sugar rises, ফলে ইনসুলিন নিঃসৃত হয়। ইনসুলিনের প্রভাবে প্রচুর সুগার ফ্যাটে পরিণত হয়। (এটা ইনসুলিনের একটা ইফেক্ট। এ কারণে দেখবেন যারা ইনসুলিন নেয় তার খুব দ্রুত মোটা হয়ে যায়)। এই বিশেষ তথ্যটি মনে রাখবেন, যা পরে আমার লেখা বুঝতে কাজে দিবে।
 
Within 40 minutes: কোকের ক্যাফেইন শরীরে গৃহীত হয়। চোখের মণি প্রসারিত হয়। ব্লাড প্রেসার বেড়ে যায়। লিভার থেকে আরো সুগার রক্তে চলে আসে।
 
Around 45 minutes: রক্তে ডোপামিন বেড়ে যায়, ফলে ব্রেনের প্লেজার সেন্টার উদ্দীপ্ত হয়। ঠিক হেরোইনের আইডেন্টিকাল রেসপন্স হয়।
 
After 60 minutes: রক্তে ধীরে ধীরে সুগারের পরিমাণ কমতে থাকে। ফলে ক্ষুধা অনুভূত হয়। এ মুহূর্তে শরীর চায় মিষ্টি কিছু স্ন্যাকস বা পানীয়।
 
ফলে এ সাইকেল আবার চলতে থাকে। একসময় প্যানক্রিয়াস বিদ্রোহ করে। সে আর ইনসুলিন সাপ্লাই দিতে পারে না। এদিকে অতিরিক্ত ইনসুলিন এক্সপোজারের কারণে শরীরে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স হয়ে যায়। যতটুকু ইনসুলিন আছে তা আর কাজ করে না।
 
ফলে হয় IGT বা ইমপেয়ার্ড গ্লোকোজ টলারেন্স এবং এর পরের ধাপে ডায়াবেটিস।
 
এখন ডাক্তার প্রাথমিকভাবে বলবে, ইনসুলিনের সেনসেটিভিটি বাড়ানোর জন্য হাঁটুন। তাতে খুব বেশী সুবিধা না হলে সেনসেটিভিটি বাড়ানোর ওষুধ দিবে। এটা যখন ফেইল করবে তখন বলবে, আপনার শরীরে প্রয়োজনীয় পরিমাণ ইনসুলিন নেই। কাজেই ইনসুলিন ইনজেকশন নিতে হবে। এবং চিরজীবনের জন্য কোন এক ইনসুলিন প্রস্তুতকারক ওষুধ কোম্পানির কাছে আপনাকে হস্তান্তর করে দিবে।
 
তখন দ্রব্যমূল্যের খবর রাখার পাশাপাশি ইনসুলিনের মূল্য আবার বাড়ল কি না আপনাকে সে খবরও রাখতে হবে। ইনসুলিনের দাম বেড়েছে প্যাকেট প্রতি ৫০০ টাকা – এ জাতীয় খবর দেখলেই খুব আগ্রহ নিয়ে সে খবর পড়ে ফেলবেন।
 
তথ্যসূত্রঃ ডাঃ জোসেফ মারকোলা।

আনন্দদায়ক ক্ষুধা

Hedonic Hunger এর নাম শুনেছেন কখনো? আনন্দদায়ক ক্ষুধা। ক্ষুধা তো এমনিতে কষ্টের। কিন্তু কিছু ক্ষুধা আছে আনন্দের। সামনে যখন ডিশভর্তি গরম ভাত থাকে অথবা জাংফুড, সুইট, বেভারেজ তখন ক্ষুধা হয় আনন্দের। খাবারের এই মেনুগুলো এখন আমাদের জিহবার সাথে মিলেমিশে গেছে। এসব খাবার খেতেই আমাদের পছন্দ। সারা পৃথিবীতে এই ডায়েটই এখন চলছে। এই খাবারে আছে মাত্রাতিরিক্ত চিনি এবং আনহেলদি ফ্যাট। ফলাফল শরীর মুটিয়ে যাওয়া, ডায়াবেটিস, হার্ট এটাক, ব্রেন স্ট্রোক, কিডনি ফেলিউর, ক্যানসার এবং ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিভ্রংশ। রক্তে গ্লুকোজ বেশী থাকার কারণে স্বাভাবিক ব্রেন সিগনাল বাধাপ্রাপ্ত হয়। ফলে ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে আলঝেইমার ডিজিজ এবং স্মৃতিভ্রংশ খুব বেশী দেখা যায়।

আমাদের রক্তে মাত্র এক চামচ চিনি থাকতে পারে। কিন্তু যদি তা এক টেবিল চামচ হয়ে যায় তাহলে রক্ত অতিরিক্ত সুগার বহন করতে থাকে। এটা খুবই বিপদজনক। এতে রোগী কমা অবস্থায়ও চলে যেতে পারে। রক্তের গ্লুকোজকে স্বাভাবিক মাত্রায় রাখার কাজ করে ইনসুলিন। কিন্তু এটা শরীরের জন্য সহজ নয়। ইনসুলিন তৈরী হওয়া একটি জটিল প্রক্রিয়া। আবার তৈরী হলেও তা দ্রুত রেজিস্ট্যান্স হয়ে যায়।

আমাদের খাবারে সামান্য বেশী পরিমাণ চিনি ও শস্যদানাজাত খাদ্য যেমন চাল, আটা শরীরে দ্রুত সুগারের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়।

আমরা হয়তো অনেকেই জানি না, সুগারকে কিন্তু একসময় স্বাভাবিক খাদ্য হিসেবে বিবেচনা করা হতো না। শিল্প বিপ্লবের পর ১৮ থেকে ১৯ শতকের মধ্যে অনেক চিনিকল গড়ে উঠে। আর তখন সুগার সাধারণ মানুষের হাতের নাগালে আসে। এর আগে সুগারকে বিশেষ বিশেষ রুচিকর খাবারে কনডিমেন্ট হিসেবে ব্যবহার করা হতো। এটা ছিল মানব জাতির জন্য ব্লেসিং বা বলা চলে স্রষ্টার গোপন আশির্বাদ।

এরপর যখন পর্যাপ্ত চিনি উৎপাদন হতে লাগল তখন তাকে স্বাভাবিক খাবারের মর্যাদা দেয়া হলো। তখন খাবারের ৬ টি উপাদানের এক নম্বরে চলে গেল কার্বোহাইড্রেট। এর আগের ঘটনা অন্যরূপ। হযরত ইবরাহীম (আ) যখন তার ছেলে ইসমাইল (আ) এর সাথে মক্কায় দেখা করতে যান তখন ছেলে বৌয়ের সাথে দেখা হয়। তিনি জিজ্ঞেস করলেন তোমাদের খাওয়া দাওয়া কিরকম হয়। ইসমাইল (আ) এর স্ত্রী উত্তরে বললেন, আমরা মাংস আহার করি। এরপর আরো ঘটনা আছে। — প্রোটিন ও ফ্যাটকে টপকে কার্বোহাইড্রেট আগে চলে আসল এই দেড়শ বছর হলো। আর এর পর থেকেই শুরু হলো ডায়াবেটিস, ক্যান্সার।

যকৃৎ আমাদের সব খাদ্যকে মেটাবোলাইজ করে শরীরের জন্য গ্রহণীয় করে তুলে। কিন্তু বাস্তবিকপক্ষে যকৃৎ বা লিভারের কার্বোহাইড্রেট মেটাবোলাইজ করার খুব খুব খুব অল্প ক্ষমতা আছে। যকৃৎ সারাদিনে মাত্র ৬ চা চামচ অতিরিক্ত চিনি মেটাবোলাইজ করতে পারে। কিন্তু আমরা সাধারণত অতিরিক্ত ২০ চা চামচ বেশী চিনি গ্রহণ করি। অনেকে আরো বেশী। এই পুরোটা যকৃৎ কিছুই করতে পারে না। বরং সে এতোটুকু করতে পারে যে তা ফ্যাটে পরিণত করে রাখতে পারে। যদি কখনো শরীরে খাদ্যের অভাব হয় সেখান থেকে ব্যয় করা হবে।

রক্তের ভেতর অতিরিক্ত চিনির সাগরে ডুবে থাকা প্রতিটি অঙ্গ প্রত্যঙ্গ একসময় গ্লাইকেটেড হয়ে যায় এবং ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যায়। চোখের রেটিনা, রক্তনালী, কিডনি সব ক্ষতিগ্রস্থ হয়।

আর অতিরিক্ত চিনি আরেকটা কাজ করে। সেটা হলো সে আরো চিনি গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করে। ড্রাগ এডিকশনের মতো কার্বোহাইড্রেট এডিকশন করে ফেলে। খুবই ভয়াবহ ব্যাপার। তখনই Hedonic Hunger তৈরী হয়। আনন্দদায়ক ক্ষুধা।

এ সাইকেলকে ব্রেক করার জন্য শুধু হালকা পাতলা ইচ্ছাশক্তি বা কিছু ব্যয়াম যথেষ্ট নয়। পুরো খাদ্যাভ্যাসকে বদলে ফেলতে হবে। আর প্রচুর জ্ঞান অর্জন করতে হবে। সে বড় কঠিন কাজ। কিন্তু সম্ভব।

কিটোজেনিক ডায়েট

কাটা দিয়ে কাটা তোলার মতোই ব্যাপারটা। চর্বি দিয়ে চর্বি কাটা। চর্বিকে আমাদের শরীরের সবচেয়ে শত্রু হিসেবে দেখানো হয়। তলপেটে চর্বি জমার সাথে টাইপ টু ডায়াবেটিস মেলাইটাস, হাই ব্লাড প্রেশার, হার্ট এটাক বা এমআই, হার্ট ব্লক, ডিজলিপিডিমিয়া এবং ক্যান্সারের সরাসরি সম্পর্ক আছে। এসব রোগের একটার সাথে আবার আরেকটার সম্পর্ক আছে। একটা হলে আরেকটা হয়। চোখ থেকে কিডনি শরীরের এমন কোন অঙ্গ বাকী থাকে না যা ক্ষতিগ্রস্থ হয় না।

এই সব কিছুর এক নাম্বার শত্রু হিসেবে দেখানো হয় ফ্যাটকে। আসলে কি তাই?

আমাদের ডায়েটের মধ্যে প্রধান জিনিস থাকে ৩ টি। কার্বহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট। এর মধ্যে কার্বহাইড্রেট ও ফ্যাট হচ্ছে শরীরের জ্বালানী বা ফুয়েল। প্রোটিনের অন্য কাজ আছে।

আমাদের কার্বহাইড্রেটগুলো হয় সাধারণত রিফাইন্ড কার্বহাইড্রেট অর্থাৎ যাতে ফাইবার অনুপস্থিত। যার ফলে শরীরে প্রবেশের সাথে সাথে তা রক্তে চলে যায়। এখন একে জ্বালানী হিসেবে ব্যবহার করতে হলে কার্বকে কোষের ভেতর প্রবেশ করতে হবে। এই প্রবেশ করার কাজ করায় ইনসুলিন। কাজেই এই মুহূর্তে আমাদের শরীরে ইনসুলিনের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকতে হবে এবং শরীরের কোষগুলোও ইনসুলিনের প্রতি যথেষ্ট সেনসেটিভ বা সংবেদী থাকতে হবে।

কিন্তু আমাদের ডায়েটে প্রচুর পরিমাণে কার্ব থাকে যা আমাদের মোট খাবারের ৭৫ ভাগেরও বেশী এবং আমরা প্রয়োজনের চেয়ে বেশী খাদ্য গ্রহণ করি। ফলে ইনসুলিন এখন আর আগের মতো প্রচুর বের হয় না, এবং শরীরের কোষগুলোও আর ইনসুলিনের প্রতি তেমন সংবেদী থাকে না। ফলে কার্বহাইড্রেট থেকে প্রাপ্ত গ্লুকোজ রক্তেই ঘুরাফেরা করতে থাকে। রক্ত হয়ে যায় গ্লুকোজের সাগর। কিন্তু কোষ থাকে অভুক্ত। কোষের অঙ্গাণুগুলো ক্ষতিগ্রস্থ হয়। আর রক্তে এই গ্লুকোজ কি করে? শরীরের প্রোটিনগুলোকে নষ্ট করে দেয়। প্রোটিনে গ্লুকোজের আস্তর পড়ে। শরীরের সামগ্রিক ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। রক্তনালীর ভেতর এথেরোস্কেলেরেসিস হয়। ব্লাড প্রেশার বাড়ে, হার্ট, চোখ, কিডনি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। অতিরিক্ত গ্লুকোজ আবার ফ্যাটে পরিণত হয়ে শরীরে জমা হয়ে থাকে।

এজন্য কার্বহাইড্রেটকে বলা হয় ওর্স্ট ফর্ম অফ ফুয়েল।

আরেক রকম ফুয়েল আছে যা আমাদের শরীরের কখনো ব্যবহার করা হয়ে উঠে না। কারণ রক্তে যতক্ষণ গ্লুকোজের উপস্থিতি আছে শরীর কখনো এই ফুয়েল ব্যবহার করবে না। কারণ এটা সেকেন্ড লাইন অফ ফুয়েল। তাই সেটা শুধু জমে আর জমে। তলপেটে জমে, রক্তনালীতে জমে। মানুষের মাথা খারাপ করে দেয়।

কিন্তু আমরা যদি এই ফুয়েলকে ব্যবহার করতে পারি তাহলে শক্তি পাব কার্বহাইড্রেটের দ্বিগুণ। আর জমে থাকা চর্বিগুলোও দ্রুত কেটে যাবে।

এজন্য যে ডায়েট তাকে বলা হয় কিটোজেনিক ডায়েট। এতে ইনসুলিন কম থাকা বা অসংবেদী হয়ে পড়ার ঝামেলা নেই।

এই ডায়েটে প্রোটিনের পরিমাণও কম। মোট ডায়েটের মাত্র ২০ শতাংশ। প্রোটিন বেশী গ্রহণ করার সমস্যা আছে। একে তো তা ক্যান্সারের রিস্ক বাড়াতে পারে। আর অন্যদিকে কিটোজেনিক ডায়েটে আমরা শরীরকে যে ফ্যাট বার্ণ করতে বাধ্য করব তা বাধাগ্রস্থ হবে। কারণ কার্বহাইড্রেটের অভাবগ্রস্থ অবস্থায় প্রোটিন বেশী থাকলে প্রোটিনও গ্লুকোজে পরিণত হয়। কিন্তু আমরা চাই গ্লুকোজের বদলে অন্য কিছু যেমন কিটোন থেকে শক্তি আহরণ করতে যা ফ্যাট থেকে পাওয়া সম্ভব।

কিটোজেনিক ডায়েটে থাকবে ৭৫% ফ্যাট, ২০% প্রোটিন এবং মাত্র ৫% কার্বহাইড্রেট। কার্ব সারাদিনে মাত্র ৫০ গ্রাম।

যখন আমরা এটা করব তখন শরীর কার্বের বদলে ফ্যাটকে ফার্স্ট লাইন জ্বালানী হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করবে। এই এডাপটিভ প্রসেসের জন্য শরীরের সময় লাগবে দেড় থেকে দুই মাস। এই সময়টায় কিছু দুর্বলতা লাগতে পারে। কিন্তু শরীর যখন জ্বালানী হিসেবে ফ্যাটকে চিনে যাবে তখন সে তার জমে থাকা চর্বিগুলোকেও বার্ণ করা শুরু করবে। আর তখন আগের চেয়েও বেশী শক্তি ও কর্মস্পৃহা পাওয়া সম্ভব।

আশ্চর্য বিষয় হলো, সাধারণত মনে করা হয়, আমাদের ব্রেন শক্তির জন্য শুধু গ্লুকোজের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু পরীক্ষায় দেখা গেছে, ব্রেনও কিটোন ডায়েটের সাথে খুব দ্রুত এডাপটিভ হয়ে যায়। এমনকি কিটোজেনিক ডায়েটে এপিলেপসিও ভালো হয়ে যায়।

আমি নিজে সম্ভবত কিটোজেনিক ডায়েট গ্রহণ করতে যাচ্ছি, ইনশাআল্লাহ্‌। এর অনেক সুবিধা আমার কাছে তাত্ত্বিকভাবে গ্রহণযোগ্য মনে হয়েছে। তবে পাঠকদের কাছে আবেদন তারা এটাকে নিজে প্রয়োগ করার পূর্বে ডায়েটের বিষয়টা নিজে পুরো বুঝুন, ডায়েট কিভাবে শরীরে কাজ করে জানুন, এ বিষয়ে অভিজ্ঞ বা বিশেষজ্ঞ পরামর্শ গ্রহণ করুন। তবে এটি যেহেতু একটি ব্যতিক্রমী ফর্মূলা তাই সম্ভবত আপনি সব জায়গা থেকে সঠিক তথ্য নাও পেতে পারেন। আমি আপনাদের সুবিধার্থে দু’টি লিঙ্ক দিচ্ছি।

জাযাকুমুল্লাহু খাইরান।

http://www.fatforfuel.org/

https://www.bodybuilding.com/content/ketogenic-dieting-101-how-to-use-fat-as-fuel.html