অস্বাস্থ্যকর দশটি জিনিস

সুস্থ থাকার জন্য এই দশটি জিনিস থেকে বেঁচে থাকুন। পারলে ঘর থেকে বিদেয় করে দিন।
 
(1) Artificial Sweeteners – বারডেমওয়ালারা আপনাকে বলবে চিনির বদলে আর্টিফিসিয়াল সুইটেনার খান। মানে ডায়াবেটিসের বদলে ক্যানসার ডেকে আনুন।
 
(2) Plastic Food Containers and Bottles – ক্যানসার, হাই ব্লাড প্রেসার, লো আই কিউ শিশু, বাচ্চা না হওয়ার প্রবলেম।
 
(3) Non-Stick Cookware – এই নন স্টিক উপাদানটা ক্যানসার সৃষ্টি করে। গ্লাস বা সিরামিকের কুকওয়ার ব্যবহার করুন।
 
(4) Air Fresheners –
বাজে জিনিস, শরীরের হরমোনের ক্ষতি করে, ক্যানসার সৃষ্টি করে। গন্ধ হলে গন্ধ মাস্ক না করে উৎস খুঁজুন। দরজা জানালা খুলে দিন। সুগন্ধের জন্য এসেনশিয়াল ওয়েল ব্যবহার করুন।
 
(5) Antibacterial Soaps and Detergents – এসব রুটিনলি ব্যবহার করা ঠিক নয়। গোসলের জন্য হালকা গরম পানি ও সাধারণ সাবান যথেষ্ট। পর্যাপ্ত পানি দিয়ে ধৌত করলেই শরীর বা হাত পর্যাপ্ত জীবনামুক্ত হয়। এর বেশি করার দরকার নেই।
 
সাবান বা টুথপেস্টে এন্টিব্যাক্টেরিয়াল উপাদান এলার্জি, হরমোনের সমস্যা, ওয়েট গেইন, ইনফ্লামেশন সহ নানা ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
 
(6) Commercial Cleaning Products -রান্নাঘর এবং বাথরুম ডিসইনফেকশন করার জন্য বেকিং সোডা, 3% হাইড্রোজেন পারক্সাইড বা হোয়াইট ভিনেগার ব্যবহার করুন।
 
(7) Personal Care Products – লোশন, শ্যাম্পু, মেকআপ এগুলোর মাধ্যমে প্রতি বছর আপনার শরীরে 5 পাউন্ড ক্যামিকেল স্কিনের মাধ্যমে এবজর্ব হয়। আই লাইনার, মাসকারা, লিপিস্টিক এগুলোতে সীসা থাকে। এসব বাদ দিয়ে পার্সনাল কেয়ারের জন্য খাঁটি নারিকেল তেল বা সরিষার তেল ব্যবহার করুন।
 
(8) Stale Spices – বাসি পুরানো মসলা ফেলে দিন। টাটকা ফ্রেস মসলা ব্যবহার করুন। মসলাতে শাকসবজি ও ফলের চেয়ে বেশি এন্টি অক্সিডেন্ট থাকে যা খুব উপকারী। বাসি মসলায় এসব উপাদান নষ্ট হয়ে যায়।
 
(9) Electronic Devices – ওয়ারলেস রেডিয়েশন মারাত্মক জিনিস। বিশেষ করে যারা মোবাইল পকেটে রাখেন। তারা কন্টিনিউয়াস রেডিয়েশন এক্সপোজারের মধ্যে থাকেন। তাই মোবাইল শরীর থেকে দূরে রেখে বহন করবেন।
 
(10) Chair – চেয়ারে বসে কাজ করা স্মোকিংয়ের চেয়েও খারাপ জিনিস। যতই ব্যয়াম করা পেটানো শরীর হোক না কেন চেয়ার টাইপ টু ডায়াবেটিস মেলাইটাস, ওবেসিটি, পেইনসহ নন কমিউনিকেবল ক্রনিক ডিজিজের একটি অন্যতম কারণ। অবাক হলেও সত্য চেয়ারে বসে কাজ করা জীবনের কোয়ালিটিকে কমিয়ে দেয় এবং মৃত্যুকে ত্বরান্বিত করে। কাজ করার জন্য স্ট্যান্ডিং ডেস্ক বানিয়ে নিন। দাঁড়িয়ে কাজ করুন। কাজের মাঝে মাঝে হাঁটুন।
 
#Find_out_reality
 
তথ্যসূত্র: ডা: জোসেফ মারকোলা।

স্বাস্থ্যের প্রাথমিক জ্ঞান যা অনেক শিক্ষিত মানুষেরও নেই

আমেরিকার মানুষ এখন কোক খাওয়া ছেড়ে দিচ্ছে। বা ছাড়ার জন্য স্ট্রাগল করছে। এর মূল কারণ চিনি ও আর্টিফিসিয়াল সুইটেনার। কারণ তারা এখন স্বাস্থ্য সচেতন হচ্ছে। জেনে গেছে পরিণতি। কোককে ওরা বলে সোডা। সেখানে কোকের বিক্রি ৭% কমে গেছে।
 
Coca-Cola is engaging in an intensive marketing ploy to “reintroduce” Coke, using smaller serving sizes and personalized cans to target teens. Marketing Ploy মানে বাজারজাত করার কৌশল।
 
আসুন আমরা সোডার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে কিছু জানি।
 
সোডা খাওয়ার পর ব্রেনে মারাত্মক প্রতিক্রিয়া হয়। ২০ আউন্সের একটা কোকের বোতলে ১৬ চামচ চিনি থাকে ফ্রোকটোজ সিরাপ হিসেব। এ জিনিস পরিপাকের জন্য ইনসুলিন প্রয়োজন হয়, কিন্তু এটা একই সাথে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স করে। ফলে ইনসুলিন কাজ করতে পারে না। ফলাফল ডায়াবেটিস।
 
আসুন আমরা দেখি এক কৌটা কোক খেলে শরীরে কি কি ঘটে। খুব মন দিয়ে খেয়াল করুন।
 
Within 20 minutes: Blood Sugar rises, ফলে ইনসুলিন নিঃসৃত হয়। ইনসুলিনের প্রভাবে প্রচুর সুগার ফ্যাটে পরিণত হয়। (এটা ইনসুলিনের একটা ইফেক্ট। এ কারণে দেখবেন যারা ইনসুলিন নেয় তার খুব দ্রুত মোটা হয়ে যায়)। এই বিশেষ তথ্যটি মনে রাখবেন, যা পরে আমার লেখা বুঝতে কাজে দিবে।
 
Within 40 minutes: কোকের ক্যাফেইন শরীরে গৃহীত হয়। চোখের মণি প্রসারিত হয়। ব্লাড প্রেসার বেড়ে যায়। লিভার থেকে আরো সুগার রক্তে চলে আসে।
 
Around 45 minutes: রক্তে ডোপামিন বেড়ে যায়, ফলে ব্রেনের প্লেজার সেন্টার উদ্দীপ্ত হয়। ঠিক হেরোইনের আইডেন্টিকাল রেসপন্স হয়।
 
After 60 minutes: রক্তে ধীরে ধীরে সুগারের পরিমাণ কমতে থাকে। ফলে ক্ষুধা অনুভূত হয়। এ মুহূর্তে শরীর চায় মিষ্টি কিছু স্ন্যাকস বা পানীয়।
 
ফলে এ সাইকেল আবার চলতে থাকে। একসময় প্যানক্রিয়াস বিদ্রোহ করে। সে আর ইনসুলিন সাপ্লাই দিতে পারে না। এদিকে অতিরিক্ত ইনসুলিন এক্সপোজারের কারণে শরীরে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স হয়ে যায়। যতটুকু ইনসুলিন আছে তা আর কাজ করে না।
 
ফলে হয় IGT বা ইমপেয়ার্ড গ্লোকোজ টলারেন্স এবং এর পরের ধাপে ডায়াবেটিস।
 
এখন ডাক্তার প্রাথমিকভাবে বলবে, ইনসুলিনের সেনসেটিভিটি বাড়ানোর জন্য হাঁটুন। তাতে খুব বেশী সুবিধা না হলে সেনসেটিভিটি বাড়ানোর ওষুধ দিবে। এটা যখন ফেইল করবে তখন বলবে, আপনার শরীরে প্রয়োজনীয় পরিমাণ ইনসুলিন নেই। কাজেই ইনসুলিন ইনজেকশন নিতে হবে। এবং চিরজীবনের জন্য কোন এক ইনসুলিন প্রস্তুতকারক ওষুধ কোম্পানির কাছে আপনাকে হস্তান্তর করে দিবে।
 
তখন দ্রব্যমূল্যের খবর রাখার পাশাপাশি ইনসুলিনের মূল্য আবার বাড়ল কি না আপনাকে সে খবরও রাখতে হবে। ইনসুলিনের দাম বেড়েছে প্যাকেট প্রতি ৫০০ টাকা – এ জাতীয় খবর দেখলেই খুব আগ্রহ নিয়ে সে খবর পড়ে ফেলবেন।
 
তথ্যসূত্রঃ ডাঃ জোসেফ মারকোলা।

হেলথ ডিজেস্টার

বাংলাদেশে অনেক এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স হয়ে গেছে। এমনও ব্লাডের কালচার ও সেন্সেটিভিটি রিপোর্ট ডাক্তারের কাছে আসে যে তার সবকয়টি এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্ট। কি ভয়াবহ, তাই না? সে ব্যক্তির আর কোন এন্টিবায়োটিক কাজ করে না। এর প্রধান কারণ ইচ্ছামতো এন্টিবায়োটিকের অপব্যবহার। সেটাতে ডাক্তার, রোগী, ফার্মেসীম্যান সবাই কোন না কোনভাবে জড়িত। দায় সবারই আছে। সরকারের কথা আর নাই বললাম। তবে আপনারা এও দেখবেন, কয়েকদিন পর ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ইনসুলিন আর কাজ করবে না। কি বিশ্বাস হয়? এর কারণ মানুষ তার অভ্যাসগত বা একোয়ারড কারণে, যেমন, হাই কার্বোহাইড্রেট ডায়েট, পরিবেশ দূষণ ইত্যাদি ফ্যাক্টরের কারণে, ইনসুলিনের প্রতি রেজিস্যট্যান্স হয়ে যাচ্ছে। আল্লাহতায়ালা মানুষকে স্বাভাবিকভাবে যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু ইনসুলিন দিয়েছিলেন। কিন্তু মানুষ এতো বেশী ইনসুলিনের অপব্যবহার করেছে যে এখন আর তাতে কাজ চলে না। বাইরে থেকে সাপ্লাই দিতে হয়। কয়েকদিন পরপরই ইউনিট বাড়াতে হয়। এমন সময় মানুষ ফেস করবে যখন আর ইউনিট বাড়িয়েও কাজ হবে না। এমনভাবে রেজিস্যট্যান্ট হয়ে যাবে।

“খাও আরও কোক খাও, পেট ভরে বার্গার খাও। আর বসে বসে মোবাইল টিপ। ডায়েট সম্পর্কে অজ্ঞ ও আরামপ্রদ জীবনের পরিণতি এমনই হয়।”

দাজ্জালী সভ্যতা মানুষের রোগ প্রতিরোধ শক্তি লোপ করে তাদের ইন্ডাস্ট্রির উপর নির্ভরশীল করে ফেলছে। একসময় তাদের ওষুধেও আর কাজ হবে না। তখন কোথায় যাবে মানুষ?

ডিম একটি পুষ্টিকর খাদ্য

যারা ডিম বিষয়ে নানা সন্দেহে ভোগেন, ডিম খেতে মন চায় আবার ডাক্তারদের জুজুর ভয়ে খেতে চান না, (কোলেস্টেরল ও ফ্যাটি হয়ে যাওয়ার আতংকে ভোগেন তারা ডিম খেতে পারবেন। আতংকের কিছু নেই। বরং ডিম খেলে ক্ষুধা লাগবে না, তাই চিপস চা বিস্কুট এসব খাওয়ার প্রয়োজন নেই। ফলে ওজনও কমবে। দৈনিক দু’ তিনটা তো খাওয়াই যায়, আলহামদুলিল্লাহ।

Courtesy:Dr. Joseph Mercola

ডায়েটের আলাপ

ডায়েটের আলাপ আসলেই মোটা মানুষেরা জিজ্ঞেস করে আর কি কি খেতে হবে? শশা, আপেলের রস, ঢেঁড়সের রস, মেথি, জিরার চা। এ তালিকার যেন কোন শেষ নেই। আমি বলব, ৪ টা জিনিস মেপে মেপে খাবেন। তাহলেই ডায়েট হবে। ভাত, রুটি, চিনি, আলু। এর মধ্যে চিনি একদম বাদ দিন। কাজেই চা পান করাও বাদ। কোল্ড ড্রিংস বাদ। আলু ছোট এক দুই টুকরা খাওয়া যেতে পারে। ভাত দুপুরে ও রাতে ১ মুঠো করে। পাতলা রুটি সকালে ১ পিস। ভাতের সাথে শশা কুচি করে কেটে পরিমাণ বাড়িয়ে নিন যাতে অল্প ভাত খাচ্ছে এটা অস্বস্তি না হয়। মনে রাখবেন আমাদের ক্ষুধা নিবৃত্তি পেটের পরিপূর্ণতার উপর নির্ভর করে না। পেট ঠেসে না খেলেও ক্ষুধা নিবৃত্তি হতে পারে। সেটা কিভাবে?

ক্ষুধা নিবৃত্তির অনুভূতি আসে মস্তিষ্ক থেকে। সেখানে আছে স্যাটাইটি সেন্টার। আপনি যদি ১ প্লেট শশা কুচির সাথে ১ মুঠো ভাত খান তাতেও আপনার স্যাটাইটি সেন্টার উদ্দীপ্ত হতে পারে। কারণ আপনার জিহবা আপনার মস্তিষ্কে সিগনাল দিবে যে ভাত খাওয়া হয়েছে। মস্তিষ্ক আউটপুট দিবে আপনি পরিতৃপ্ত হয়েছেন। এজন্য অল্প পরিমাণ ভাতই যথেষ্ট। শুধু শুধু এতো ঠেসে খাওয়ার প্রয়োজন নেই।

এভাবে করলে শরীর দুর্বল হয়ে যাবে না? না। কারণ আপনি ওই ৪ টি আইটেম বাদে অন্য সব খাবারই পর্যাপ্ত খেতে পারবেন। ঐ চারটি আইটেমই শরীরে মেদ সৃষ্টি করে। ঘি, মাখন, ডাল, ডিম, গরুর গোস্ত, ছোলা কিছুই আপনাকে মোটা বানাবে না। সকালে রুটির সাথে মাখন মাখিয়ে খেতে পারেন। অথবা ঘি দিয়ে রুটি ভেজে খেতে পারেন। ডিম খেতে পারেন। চর্বি জাতীয় খাবার আপনাকে কার্বোহাইড্রেটের চেয়ে দ্বিগুণের বেশী শক্তি দিবে। ফ্যাট মেটাবলিজমের পরিমাণও বাড়বে। ফলে শরীর থেকে ফ্যাট ঝড়তে থাকবে। সুবিধা হলো ভাত খেলে একটু পরপর যেমন ক্ষুধা লাগে চর্বি জাতীয় খাবার খেলে তা লাগে না। সেহেরীতে চর্বি জাতীয় খাবার খেলে সারাদিন খুব সহজেই রোযা রাখতে পারবেন। তবে এই ডায়েটে অভ্যস্ত হতে দিন পনেরো সময় লাগতে পারে। এই সময়টা সামান্য দুর্বলতা অনুভব হতে পারে। এরপর শরীর খুব সুন্দরভাবে এডাজস্ট হয়ে যায়। এর থিওরিটিকাল ব্যাখ্যা আছে, প্র্যাকটিকাল প্রমাণ আছে।

এই ডায়েটের সুবিধা কি? ফ্যাট ঝড়িয়ে শরীর স্লিম করবে। শরীর ভেতরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলোর ভেতর ফ্যাট জমতে দিবে না। মেটাবলিজম বাড়বে। ডায়াবেটিস থেকে মুক্ত রাখবে।

#Ketogenic_Diet #কিটোজেনিক_ডায়েট সম্পর্কে জানুন। এ সম্পর্কে লেখাপড়া করুন।

ডায়েট

আমাদের শরীর সাধারণত এনার্জি সেভিং মুডে থাকে। এনার্জি সেভিং মুডে থাকা অবস্থায় কখনো ওজন কমবে না। যতই ব্যায়াম করুন, হাঁটাহাঁটি করুন বা ডায়েটিং করুন। যতক্ষণ না শরীর এনার্জি বার্নিং মুডে না যায়। এনার্জি বার্ণ হওয়ার জন্য বা শরীরের ওজন কমানোর জন্য শরীরকে এনার্জি সেভিং মুড থেকে এনার্জি বার্নিং মুডে সুইচ করাতে হবে। গতানুগতিক পদ্ধতিতে তা সম্ভব নয়। কারণ সব ডায়েটেই কার্বোহাইড্রেটের আধিক্য থাকে। আর শরীর যতক্ষণ কার্বোহাইড্রেট পাবে ততক্ষণ ফ্যাট বার্ণ হবে না, বরং অতিরিক্ত কিছু কার্বোহাইড্রেট জমে তা ফ্যাটের ভান্ডার আরো বৃদ্ধি করবে। এজন্য কার্বোহাইড্রেটকে বলে ওররস্ট ফর্ম অব ফুয়েল। কিন্তু ফ্যাট হচ্ছে বেস্ট ফর্ম অব ফুয়েল। ফ্যাট মেটাবলিজমের জন্য ইনসুলিনের প্রয়োজন নেই। কাজেই তা ডায়াবেটিস বাড়াবে না। শরীর যদি একবার এনার্জি বার্নিং মুডে চলে যায় তাহলে ওজন কমানো একেবারে চোখের পলকের মতো। ঘি মাখন তেল বাদাম দুধ ডিম ছোলা এসব খেতে হবে। আর এভয়েড করতে হবে ভাত, রুটি, আলু এবং চিনি। ফ্যাট অত্যন্ত মুখরোচক খাবার কার্বোহাইড্রেটের তুলনায়। যদিও গতানুগতিক ডাক্তাররা ফ্যাট জাতীয় খাবার মোট খাবারের ৩০% এর বেশী এলাউ করে না। কিন্তু কিটোজেনিক ডায়েটে ম্যাক্সিমাম পোর্শন হলো ফ্যাট। আর অত্যন্ত অল্প পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট। এসব বিষয়ে জানুন। তা না হলে দৌড়িয়ে ব্যায়াম করে কম খেয়ে জীবন হেল করা যাবে, স্বাস্থ্য কমবে না। বা কমলেও আবার ছেড়ে দিলেই দুদিনে আগের জায়গায় ফিরে আসবে। আর হ্যাঁ ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং করতে ভুলবেন না। প্রতিদিন ১০ – ১২ ঘণ্টা না খেয়ে থাকতে হবে। সন্ধ্যারাতে খেলে আবার পরদিন সকালে ব্রেকফাস্ট করতে হবে। সপ্তাহে দুইদিন রোযা, মাসে ৩ দিন রোযা, বছরে ১ মাস রোযা। যে চার্ট আমাদের নবীজী ছাল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া সাল্লাম করে দিয়েছেন ১৪০০ বছর আগে তা আবার নতুন করে আবিষ্কার হচ্ছে এই যা। 

মন্তব্যঃ  বিস্তারিত পড়ুন

খাদ্য, স্বাস্থ্যচক্র ও ইনসুলিন

ইনসুলিনের কাজ কি? এর প্রকৃত কাজ হলো আমাদের শরীরে পুষ্টি জমা করে রাখা। যেন অভাবের সময় তা ব্যবহার করতে পারে। যেমন, রমজানে, জিহাদে, সফরে, দুর্ভিক্ষে ইত্যাদি। যেন প্রতিকূল অবস্থায় খাদ্যের অভাবে মানবজাতি ধ্বংস হয়ে না যায়।
 
বিজ্ঞান কি শেখায়? ইনসুলিনের কাজ গ্লুকোজকে কোষের ভেতরে প্রবেশ করানো যাতে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
 
কাজেই এটা ইনসুলিনের প্রকৃত কাজ নয়। মূল উদ্দেশ্য সফল করার জন্য এটা হলো ইনসুলিনের কর্মপদ্ধতি।
 
আপনি যখন এক চোখ দিয়ে দেখবেন তখন অল্পই দেখতে পাবেন। কিন্তু যখন দুই চোখ দিয়ে গভীর ভাবে তাকাবেন তখন অনেক ভেতরের কিছু দেখতে পাবেন।
 
যাহোক, আমরা এতো বেশী কার্বোহাইড্রেট খাই যে আমাদের খাদ্যের খুব অল্প পরিমাণই শরীরের কাজে লাগে। বাকীটুকু জমা থাকে। খুব অল্পপরিমাণ জমা থাকে গ্লাইকোজেন হিসেবে। গ্লাইকোজেনের ভাণ্ডার পুরো হয়ে গেলে বাকী বিশাল অংশটুকু স্যাচুরেটেড ফ্যাট হিসেবে তলপেটে ও শরীরে জমা থাকে।
 
ইনসুলিনের একটি ইফেক্ট হলো শরীরে ফ্যাট ডিপোজিট করতে সাহায্য করে।
 
আমরা যখন অনেক খাই, প্রতিবেলায় বেশী বেশী ভাত খাই তখন এর ফলাফলস্বরূপ শরীরে ইনসুলিন বেশী নিঃসরণ হতে থাকে। ইনসুলিনের কার্যকারিতার জন্য তলপেটে ও পুরো শরীরে ফ্যাট জমতে থাকে।
 
তলপেটের চর্বি সরাসরি হৃদরোগ, স্ট্রোক ইত্যাদির জন্য দায়ী।
 
ইনসুলিন বেশী নিঃসরণ হতে হতে একসময় সে আর অতিরিক্ত চাপ সহ্য করতে পারে না। একসময় বার্ন আউট হয়। ইনসুলিন নিঃসরণ অস্বাভাবিকরকম বন্ধ হয়ে যায়, পাশাপাশি কার্যক্ষমতা ও হ্রাস পায়। ফলে খাদ্যকণাগুলো আর কোষে ঢুকে না। এটা ডায়বেটিস। জান্নাতের অসীম খাদ্যের সুখ দুনিয়ায় ভোগ করতে চাওয়ার শাস্তি।
 
এখন চিকিৎসা। বলা হবে আপনার সমস্যা হলো শরীরে ইনসুলিন নেই বা অল্প আছে। কাজেই যেকোনভাবেই ইনসুলিন বাড়াতে হবে। ফলে আবার চর্বি জমবে। ইনসুলিনের প্রভাবে শরীর আরো ভারী হবে। এ দুষ্ট আবর্ত চলতেই থাকবে। 😀😀😀

স্বাস্থ্যশিক্ষা

চিকিৎসার >৮০% থাকা উচিৎ স্বাস্থ্যশিক্ষা তথা লাইফস্টাইল, ডায়েট, এটেইনিং পজিটিভ এটিচুড এবং স্পিরিচুয়ালিটি ইত্যাদি। আর <২০% থাকা উচিৎ সিম্পল মেডিকেশন।

কিন্তু বাস্তবে প্রায় ১০০% দেয়া হচ্ছে মেডিসিন। স্বাস্থ্যশিক্ষা ০-১%।

বছর দেড়েক আগে যখন আমার স্বাস্থ্য সম্পর্কে শুধু গতানুগতিক ধ্যান ধারণা ছিল তখন আমার সুস্বাস্থ্যের পারামিটারগুলো যেমন অবেসিটি, ব্লাড প্রেশার বলগাহীন ঘোড়ার মতো নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছিল। একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক প্রেশার মেপে ঘচঘচ করে ওষুধ লিখে দিয়ে বললেন, কি বললেন? তিনি বললেন,

“যদি দেখেন রাত ৯ টা বাজে আর আপনি বেঁচে আছেন তাহলে এ ওষুধটা খেয়ে নিবেন। প্রতিদিন। লাইফ লং।”

নাটকীয় কথা। খেলাম কয়েক মাস। কিন্তু মালহামার চিন্তায় আর খেতে পারলাম না। যদি মালহামা শুরু হয়ে যায় আর ওষুধের সাপ্লাই বন্ধ হয়ে যায় তাহলে সেদিন আমার কি হবে? আর তাছাড়া প্রতিদিন ১০-২০ টাকা ওষুধ কোম্পানির জন্য বরাদ্দ রাখাটাও ভালো লাগছিল না। কাজেই আমাকে ওষুধ ছাড়তে হলো। লাইফস্টাইল ও ডায়েট নিয়ে পড়াশোনা শুরু করলাম। সত্যি কথা হলো যে, লাইফস্টাইল ও ডায়েট নিয়ে সঠিক ও কার্যকর জ্ঞান প্রচলিত জ্ঞানের সম্পূর্ণ বিপরীত।

কাজেই ডাক্তার ও ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শে ওজন কমার বা ওষুধ ছাড়া ব্লাড প্রেশার নরমাল হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। বরং তাদের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যয়াম ও ডায়েট করলে জীবন কঠিন ও একঘেয়ে হয়ে যাবে। কারণ তারা কার্বহাইড্রেটের পাশাপাশি, ফ্যাট কমাতে বলবে, লবণ খেতে বারণ করবে, সকালে নিয়ম করে হাঁটতে বলবে। বেশীর ভাগ মানুষের পক্ষেই এসব মেনে চলা সম্ভব হয় না। বা কয়েকদিন করে ছেড়ে দেয়।

আলহামদুলিল্লাহ্‌, ওষুধ ছাড়াই এখন সব প্যারামিটারগুলো নরমাল রেঞ্জে চলে আসছে।

স্বাস্থ্যশিক্ষা হচ্ছে রোগ প্রতিরোধ এবং টু সাম এক্সটেন্ট রোগ মুক্তির পদ্ধতি। রোগ হয়ে গেলে আসলে তেমন কিছু করার থাকে না। তাই আগেই স্বাস্থ্যশিক্ষা গ্রহণ করা দরকার। অন্যদিকে ওষুধ হচ্ছে রোগ অবদমিত করে রাখার পদ্ধতি। বর্তমানে যেসব নন কমিউনিকেবল ক্রনিক ডিজিজগুলো হচ্ছে সেগুলোর আসলে খুব বেশী কার্যকর চিকিৎসা নেই যা আপনাকে নীরোগ ও সুস্থ হওয়ার অনুভূতি দিবে।

কাঁচাকলা

আনাজ শব্দের অর্থ হলো তরকারী বা সবজি। আনাজি কলা মানে হলো তরকারীর কলা বা সবজি কলা। বোঝাই যায়, কাঁচা কলাই হলো আনাজি কলা।
সবজি হিসেবে আনাজি কলা হলো আমার সবচাইতে অপছন্দের।
তারপরও আমি আজ কিনলাম। ৫টি আনাজি কলা। জোড়া ২৫টাকা। মোটামুটি বড় সাইজের।
কেন কিনলাম???
সিদ্ধ করে ভর্তা খাওয়ার জন্য। কিভাবে ভর্তা বানানো যায়, তার বেশ কয়েকটি ভিডিও দেখে নিলাম, যদিও আমার ওয়াইফ জানে।
কাচাঁ কলায় প্রধান উপাদান হলো Resistant Starch, এক ধরণের শর্করা, যা আমাদের পাকস্থলির এসিড ও এনজাইম হজম করতে পারে না।
তাহলে কারা হজম করে?
এগুলো হজম করে আমাদের পাকস্থলির উপকারী ব্যাকটেরিয়া বা মাইক্রোবায়োম।
এই RS বা রেজিষ্টান্স ষ্টার্চ হলো ঐ ব্যাকটেরিয়ার জন্য বিরিয়ানির মত। এদের খাবার। এদের দ্বারাই কাঁচা কলা হজম হয়। ভেঙ্গে যায়। এতে এই উপকারী ব্যাকটেরিয়া সংখ্যায় বাড়ে এবং উপজাত হিসেবে এক ধরণের short chain fatty acid সৃষ্টি হয়। শরীরের জন্য উপকারী।
বলে দিলাম, যার পাকস্থলির ব্যাকটেরিয়া যত বেশী সংখ্যায়, সে তত বেশি সুখী ও রোগমুক্ত।
তবে এ-ও মনে রাখতে হবে যে পাকস্থলিতে অপকারী ব্যাকটেরিয়াও আছে। তার নাম প্যাথোজেনিক ব্যাকটেরিয়া।
উপকারী ব্যাকটেরিয়া (microbiome) এবং অপকারী ব্যাকটেরিয়া (pathogenic bacteria) এর একটা ব্যালান্স থাকে। অনুপাত ৭০:৩০ বা কাছাকাছি।
এই ভারসাম্য নষ্ট হলেই আমার অসুস্থ হয়ে পড়ি।
সে জন্য আমাদের সে সমস্ত খাবার বেশি খাওয়া উচিত যেগুলো দিয়ে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার বংশ বৃদ্ধি হয়।
বুলেট প্রুফ ইমিউন সিষ্টেম। খুবই শক্ত রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা।
বর্তমানে পৃথিবীতে পরিবেশ দুষণ, ডাক্তারী ওষুধ এবং বাজে খাদ্যাভাসের কারণে বিশ্বব্যাপী মানুষের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা দূর্বল হয়ে পড়েছে।
আর আমাদের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থার ৯০% হলো আমাদের পাকস্থলির এই ব্যাকটেরিয়া। উপকারী ব্যাকটেরিয়া।

এই জন্যই resistant starch সমৃদ্ধ কাচাঁ কলার ভর্তা।

Ashraf Mahmud

সিয়াম বা রোযা

মুসলিমরা রোজা রাখলে তাকে বলা হয় ‘সিয়াম’। খ্রিস্টানরা রোজা রাখলে তাকে বলা হয় ‘ফাস্টিং’। হিন্দু বা বৌদ্ধরা রোজা রাখলে তাকে বলা হয় ‘উপবাস’। বিপ্লবীরা রোজা রাখলে তাকে বলা হয় ‘অনশন’। আর, মেডিক্যাল সাইন্স রোজা রাখলে তাকে বলা হয় ‘অটোফেজি’।

খুব বেশি দিন হয়নি, মেডিক্যাল সাইন্স ‘অটোফেজি’র সাথে পরিচিত হয়েছে। ২০১৬ সালে নোবেল কমিটি জাপানের ডাক্তার ‘ওশিনরি ওসুমি’-কে অটোফেজি আবিষ্কারের জন্যে পুরষ্কার দেয়। এরপর থেকে আধুনিক মানুষেরা ব্যাপকভাবে রোজা রাখতে শুরু করে।

কমেন্টে কিছু ভিডিও দিব। রোজা রাখার জন্যে আধুনিক সচেতন নারী ও পুরুষেরা কেমন ব্যস্ত হয়ে পড়ছে, দেখুন!!! শত হলেও, মেডিক্যাল সাইন্স বলে কথা!!

যাই হোক, Autophagy কি? এবার তা বলি।

Autophagy শব্দটি একটি গ্রিক শব্দ। Auto অর্থ নিজে নিজে, এবং Phagy অর্থ খাওয়া। সুতরাং, অটোফেজি মানে নিজে নিজেকে খাওয়া।

না, মেডিক্যাল সাইন্স নিজের গোস্ত নিজেকে খেতে বলে না। শরীরের কোষগুলো বাহির থেকে কোনো খাবার না পেয়ে নিজেই যখন নিজের অসুস্থ কোষগুলো খেতে শুরু করে, তখন মেডিক্যাল সাইন্সের ভাষায় তাকে অটোফেজি বলা হয়।

আরেকটু সহজভাবে বলি।

আমাদের ঘরে যেমন ডাস্টবিন থাকে, অথবা আমাদের কম্পিউটারে যেমন রিসাইকেল বিন থাকে, তেমনি আমাদের শরীরের প্রতিটি কোষের মাঝেও একটি করে ডাস্টবিন আছে। সারা বছর শরীরের কোষগুলো খুব ব্যস্ত থাকার কারণে, ডাস্টবিন পরিষ্কার করার সময় পায় না। ফলে কোষগুলোতে অনেক আবর্জনা ও ময়লা জমে যায়।

শরীরের কোষগুলো যদি নিয়মিত তাদের ডাস্টবিন পরিষ্কার করতে না পারে, তাহলে কোষগুলো একসময় নিষ্ক্রিয় হয়ে শরীরে বিভিন্ন প্রকারের রোগের উৎপন্ন করে। ক্যান্সার বা ডায়াবেটিসের মত অনেক বড় বড় রোগের শুরু হয় এখান থেকেই।

মানুষ যখন খালি পেটে থাকে, তখন শরীরের কোষগুলো অনেকটা বেকার হয়ে পড়ে। কিন্তু তারা তো আর আমাদের মত অলস হয়ে বসে থাকে না, তাই প্রতিটি কোষ তার ভিতরের আবর্জনা ও ময়লাগুলো পরিষ্কার করতে শুরু করে। কোষগুলোর আমাদের মত আবর্জনা ফেলার জায়গা নেই বলে তারা নিজের আবর্জনা নিজেই খেয়ে ফেলে। মেডিক্যাল সাইন্সে এই পদ্ধতিকে বলা হয় অটোফেজি।

জাস্ট এ জিনিসটা আবিষ্কার করেই জাপানের ওশিনরি ওসুমি (Yoshinori Ohsumi) ২০১৬ সালে নোবেল পুরস্কারটা নিয়ে গেল। কি আর করা? আমি যেহেতু ডাক্তার নই, তাই এ নিয়ে আমার কোনো আফসোস নেই!

আমার আফসোস হলো তাদের জন্যে, যারা স্বাস্থ্যের কথা ভেবে রোজা রাখেন না। আমরা তো প্রতিবছর একমাস রোজা রেখে শরীরের অটোফেজি করে ফেলি। কিন্তু, আপনারা কিভাবে শরীরের অটোফেজি করবেন?

লিখেছেনঃ ভাই জোবায়ের আল মাহমুদ

রিলেটেড ভিডিও দেখার জন্য ক্লিক করুন

বিস্তারিত পড়ুন