Category Archives: স্বাস্থ্য
স্বাস্থ্যের প্রাথমিক জ্ঞান যা অনেক শিক্ষিত মানুষেরও নেই
হেলথ ডিজেস্টার
বাংলাদেশে অনেক এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স হয়ে গেছে। এমনও ব্লাডের কালচার ও সেন্সেটিভিটি রিপোর্ট ডাক্তারের কাছে আসে যে তার সবকয়টি এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্ট। কি ভয়াবহ, তাই না? সে ব্যক্তির আর কোন এন্টিবায়োটিক কাজ করে না। এর প্রধান কারণ ইচ্ছামতো এন্টিবায়োটিকের অপব্যবহার। সেটাতে ডাক্তার, রোগী, ফার্মেসীম্যান সবাই কোন না কোনভাবে জড়িত। দায় সবারই আছে। সরকারের কথা আর নাই বললাম। তবে আপনারা এও দেখবেন, কয়েকদিন পর ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ইনসুলিন আর কাজ করবে না। কি বিশ্বাস হয়? এর কারণ মানুষ তার অভ্যাসগত বা একোয়ারড কারণে, যেমন, হাই কার্বোহাইড্রেট ডায়েট, পরিবেশ দূষণ ইত্যাদি ফ্যাক্টরের কারণে, ইনসুলিনের প্রতি রেজিস্যট্যান্স হয়ে যাচ্ছে। আল্লাহতায়ালা মানুষকে স্বাভাবিকভাবে যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু ইনসুলিন দিয়েছিলেন। কিন্তু মানুষ এতো বেশী ইনসুলিনের অপব্যবহার করেছে যে এখন আর তাতে কাজ চলে না। বাইরে থেকে সাপ্লাই দিতে হয়। কয়েকদিন পরপরই ইউনিট বাড়াতে হয়। এমন সময় মানুষ ফেস করবে যখন আর ইউনিট বাড়িয়েও কাজ হবে না। এমনভাবে রেজিস্যট্যান্ট হয়ে যাবে।
“খাও আরও কোক খাও, পেট ভরে বার্গার খাও। আর বসে বসে মোবাইল টিপ। ডায়েট সম্পর্কে অজ্ঞ ও আরামপ্রদ জীবনের পরিণতি এমনই হয়।”
দাজ্জালী সভ্যতা মানুষের রোগ প্রতিরোধ শক্তি লোপ করে তাদের ইন্ডাস্ট্রির উপর নির্ভরশীল করে ফেলছে। একসময় তাদের ওষুধেও আর কাজ হবে না। তখন কোথায় যাবে মানুষ?
ডিম একটি পুষ্টিকর খাদ্য
যারা ডিম বিষয়ে নানা সন্দেহে ভোগেন, ডিম খেতে মন চায় আবার ডাক্তারদের জুজুর ভয়ে খেতে চান না, (কোলেস্টেরল ও ফ্যাটি হয়ে যাওয়ার আতংকে ভোগেন তারা ডিম খেতে পারবেন। আতংকের কিছু নেই। বরং ডিম খেলে ক্ষুধা লাগবে না, তাই চিপস চা বিস্কুট এসব খাওয়ার প্রয়োজন নেই। ফলে ওজনও কমবে। দৈনিক দু’ তিনটা তো খাওয়াই যায়, আলহামদুলিল্লাহ।
Courtesy:Dr. Joseph Mercola
ডায়েটের আলাপ
ডায়েটের আলাপ আসলেই মোটা মানুষেরা জিজ্ঞেস করে আর কি কি খেতে হবে? শশা, আপেলের রস, ঢেঁড়সের রস, মেথি, জিরার চা। এ তালিকার যেন কোন শেষ নেই। আমি বলব, ৪ টা জিনিস মেপে মেপে খাবেন। তাহলেই ডায়েট হবে। ভাত, রুটি, চিনি, আলু। এর মধ্যে চিনি একদম বাদ দিন। কাজেই চা পান করাও বাদ। কোল্ড ড্রিংস বাদ। আলু ছোট এক দুই টুকরা খাওয়া যেতে পারে। ভাত দুপুরে ও রাতে ১ মুঠো করে। পাতলা রুটি সকালে ১ পিস। ভাতের সাথে শশা কুচি করে কেটে পরিমাণ বাড়িয়ে নিন যাতে অল্প ভাত খাচ্ছে এটা অস্বস্তি না হয়। মনে রাখবেন আমাদের ক্ষুধা নিবৃত্তি পেটের পরিপূর্ণতার উপর নির্ভর করে না। পেট ঠেসে না খেলেও ক্ষুধা নিবৃত্তি হতে পারে। সেটা কিভাবে?
ক্ষুধা নিবৃত্তির অনুভূতি আসে মস্তিষ্ক থেকে। সেখানে আছে স্যাটাইটি সেন্টার। আপনি যদি ১ প্লেট শশা কুচির সাথে ১ মুঠো ভাত খান তাতেও আপনার স্যাটাইটি সেন্টার উদ্দীপ্ত হতে পারে। কারণ আপনার জিহবা আপনার মস্তিষ্কে সিগনাল দিবে যে ভাত খাওয়া হয়েছে। মস্তিষ্ক আউটপুট দিবে আপনি পরিতৃপ্ত হয়েছেন। এজন্য অল্প পরিমাণ ভাতই যথেষ্ট। শুধু শুধু এতো ঠেসে খাওয়ার প্রয়োজন নেই।
এভাবে করলে শরীর দুর্বল হয়ে যাবে না? না। কারণ আপনি ওই ৪ টি আইটেম বাদে অন্য সব খাবারই পর্যাপ্ত খেতে পারবেন। ঐ চারটি আইটেমই শরীরে মেদ সৃষ্টি করে। ঘি, মাখন, ডাল, ডিম, গরুর গোস্ত, ছোলা কিছুই আপনাকে মোটা বানাবে না। সকালে রুটির সাথে মাখন মাখিয়ে খেতে পারেন। অথবা ঘি দিয়ে রুটি ভেজে খেতে পারেন। ডিম খেতে পারেন। চর্বি জাতীয় খাবার আপনাকে কার্বোহাইড্রেটের চেয়ে দ্বিগুণের বেশী শক্তি দিবে। ফ্যাট মেটাবলিজমের পরিমাণও বাড়বে। ফলে শরীর থেকে ফ্যাট ঝড়তে থাকবে। সুবিধা হলো ভাত খেলে একটু পরপর যেমন ক্ষুধা লাগে চর্বি জাতীয় খাবার খেলে তা লাগে না। সেহেরীতে চর্বি জাতীয় খাবার খেলে সারাদিন খুব সহজেই রোযা রাখতে পারবেন। তবে এই ডায়েটে অভ্যস্ত হতে দিন পনেরো সময় লাগতে পারে। এই সময়টা সামান্য দুর্বলতা অনুভব হতে পারে। এরপর শরীর খুব সুন্দরভাবে এডাজস্ট হয়ে যায়। এর থিওরিটিকাল ব্যাখ্যা আছে, প্র্যাকটিকাল প্রমাণ আছে।
এই ডায়েটের সুবিধা কি? ফ্যাট ঝড়িয়ে শরীর স্লিম করবে। শরীর ভেতরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলোর ভেতর ফ্যাট জমতে দিবে না। মেটাবলিজম বাড়বে। ডায়াবেটিস থেকে মুক্ত রাখবে।
#Ketogenic_Diet #কিটোজেনিক_ডায়েট সম্পর্কে জানুন। এ সম্পর্কে লেখাপড়া করুন।
ডায়েট
আমাদের শরীর সাধারণত এনার্জি সেভিং মুডে থাকে। এনার্জি সেভিং মুডে থাকা অবস্থায় কখনো ওজন কমবে না। যতই ব্যায়াম করুন, হাঁটাহাঁটি করুন বা ডায়েটিং করুন। যতক্ষণ না শরীর এনার্জি বার্নিং মুডে না যায়। এনার্জি বার্ণ হওয়ার জন্য বা শরীরের ওজন কমানোর জন্য শরীরকে এনার্জি সেভিং মুড থেকে এনার্জি বার্নিং মুডে সুইচ করাতে হবে। গতানুগতিক পদ্ধতিতে তা সম্ভব নয়। কারণ সব ডায়েটেই কার্বোহাইড্রেটের আধিক্য থাকে। আর শরীর যতক্ষণ কার্বোহাইড্রেট পাবে ততক্ষণ ফ্যাট বার্ণ হবে না, বরং অতিরিক্ত কিছু কার্বোহাইড্রেট জমে তা ফ্যাটের ভান্ডার আরো বৃদ্ধি করবে। এজন্য কার্বোহাইড্রেটকে বলে ওররস্ট ফর্ম অব ফুয়েল। কিন্তু ফ্যাট হচ্ছে বেস্ট ফর্ম অব ফুয়েল। ফ্যাট মেটাবলিজমের জন্য ইনসুলিনের প্রয়োজন নেই। কাজেই তা ডায়াবেটিস বাড়াবে না। শরীর যদি একবার এনার্জি বার্নিং মুডে চলে যায় তাহলে ওজন কমানো একেবারে চোখের পলকের মতো। ঘি মাখন তেল বাদাম দুধ ডিম ছোলা এসব খেতে হবে। আর এভয়েড করতে হবে ভাত, রুটি, আলু এবং চিনি। ফ্যাট অত্যন্ত মুখরোচক খাবার কার্বোহাইড্রেটের তুলনায়। যদিও গতানুগতিক ডাক্তাররা ফ্যাট জাতীয় খাবার মোট খাবারের ৩০% এর বেশী এলাউ করে না। কিন্তু কিটোজেনিক ডায়েটে ম্যাক্সিমাম পোর্শন হলো ফ্যাট। আর অত্যন্ত অল্প পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট। এসব বিষয়ে জানুন। তা না হলে দৌড়িয়ে ব্যায়াম করে কম খেয়ে জীবন হেল করা যাবে, স্বাস্থ্য কমবে না। বা কমলেও আবার ছেড়ে দিলেই দুদিনে আগের জায়গায় ফিরে আসবে। আর হ্যাঁ ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং করতে ভুলবেন না। প্রতিদিন ১০ – ১২ ঘণ্টা না খেয়ে থাকতে হবে। সন্ধ্যারাতে খেলে আবার পরদিন সকালে ব্রেকফাস্ট করতে হবে। সপ্তাহে দুইদিন রোযা, মাসে ৩ দিন রোযা, বছরে ১ মাস রোযা। যে চার্ট আমাদের নবীজী ছাল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া সাল্লাম করে দিয়েছেন ১৪০০ বছর আগে তা আবার নতুন করে আবিষ্কার হচ্ছে এই যা।
মন্তব্যঃ বিস্তারিত পড়ুন
খাদ্য, স্বাস্থ্যচক্র ও ইনসুলিন
স্বাস্থ্যশিক্ষা
চিকিৎসার >৮০% থাকা উচিৎ স্বাস্থ্যশিক্ষা তথা লাইফস্টাইল, ডায়েট, এটেইনিং পজিটিভ এটিচুড এবং স্পিরিচুয়ালিটি ইত্যাদি। আর <২০% থাকা উচিৎ সিম্পল মেডিকেশন।
কিন্তু বাস্তবে প্রায় ১০০% দেয়া হচ্ছে মেডিসিন। স্বাস্থ্যশিক্ষা ০-১%।
বছর দেড়েক আগে যখন আমার স্বাস্থ্য সম্পর্কে শুধু গতানুগতিক ধ্যান ধারণা ছিল তখন আমার সুস্বাস্থ্যের পারামিটারগুলো যেমন অবেসিটি, ব্লাড প্রেশার বলগাহীন ঘোড়ার মতো নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছিল। একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক প্রেশার মেপে ঘচঘচ করে ওষুধ লিখে দিয়ে বললেন, কি বললেন? তিনি বললেন,
“যদি দেখেন রাত ৯ টা বাজে আর আপনি বেঁচে আছেন তাহলে এ ওষুধটা খেয়ে নিবেন। প্রতিদিন। লাইফ লং।”
নাটকীয় কথা। খেলাম কয়েক মাস। কিন্তু মালহামার চিন্তায় আর খেতে পারলাম না। যদি মালহামা শুরু হয়ে যায় আর ওষুধের সাপ্লাই বন্ধ হয়ে যায় তাহলে সেদিন আমার কি হবে? আর তাছাড়া প্রতিদিন ১০-২০ টাকা ওষুধ কোম্পানির জন্য বরাদ্দ রাখাটাও ভালো লাগছিল না। কাজেই আমাকে ওষুধ ছাড়তে হলো। লাইফস্টাইল ও ডায়েট নিয়ে পড়াশোনা শুরু করলাম। সত্যি কথা হলো যে, লাইফস্টাইল ও ডায়েট নিয়ে সঠিক ও কার্যকর জ্ঞান প্রচলিত জ্ঞানের সম্পূর্ণ বিপরীত।
কাজেই ডাক্তার ও ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শে ওজন কমার বা ওষুধ ছাড়া ব্লাড প্রেশার নরমাল হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। বরং তাদের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যয়াম ও ডায়েট করলে জীবন কঠিন ও একঘেয়ে হয়ে যাবে। কারণ তারা কার্বহাইড্রেটের পাশাপাশি, ফ্যাট কমাতে বলবে, লবণ খেতে বারণ করবে, সকালে নিয়ম করে হাঁটতে বলবে। বেশীর ভাগ মানুষের পক্ষেই এসব মেনে চলা সম্ভব হয় না। বা কয়েকদিন করে ছেড়ে দেয়।
আলহামদুলিল্লাহ্, ওষুধ ছাড়াই এখন সব প্যারামিটারগুলো নরমাল রেঞ্জে চলে আসছে।
স্বাস্থ্যশিক্ষা হচ্ছে রোগ প্রতিরোধ এবং টু সাম এক্সটেন্ট রোগ মুক্তির পদ্ধতি। রোগ হয়ে গেলে আসলে তেমন কিছু করার থাকে না। তাই আগেই স্বাস্থ্যশিক্ষা গ্রহণ করা দরকার। অন্যদিকে ওষুধ হচ্ছে রোগ অবদমিত করে রাখার পদ্ধতি। বর্তমানে যেসব নন কমিউনিকেবল ক্রনিক ডিজিজগুলো হচ্ছে সেগুলোর আসলে খুব বেশী কার্যকর চিকিৎসা নেই যা আপনাকে নীরোগ ও সুস্থ হওয়ার অনুভূতি দিবে।
কাঁচাকলা
আনাজ শব্দের অর্থ হলো তরকারী বা সবজি। আনাজি কলা মানে হলো তরকারীর কলা বা সবজি কলা। বোঝাই যায়, কাঁচা কলাই হলো আনাজি কলা।
সবজি হিসেবে আনাজি কলা হলো আমার সবচাইতে অপছন্দের।
তারপরও আমি আজ কিনলাম। ৫টি আনাজি কলা। জোড়া ২৫টাকা। মোটামুটি বড় সাইজের।
কেন কিনলাম???
সিদ্ধ করে ভর্তা খাওয়ার জন্য। কিভাবে ভর্তা বানানো যায়, তার বেশ কয়েকটি ভিডিও দেখে নিলাম, যদিও আমার ওয়াইফ জানে।
কাচাঁ কলায় প্রধান উপাদান হলো Resistant Starch, এক ধরণের শর্করা, যা আমাদের পাকস্থলির এসিড ও এনজাইম হজম করতে পারে না।
তাহলে কারা হজম করে?
এগুলো হজম করে আমাদের পাকস্থলির উপকারী ব্যাকটেরিয়া বা মাইক্রোবায়োম।
এই RS বা রেজিষ্টান্স ষ্টার্চ হলো ঐ ব্যাকটেরিয়ার জন্য বিরিয়ানির মত। এদের খাবার। এদের দ্বারাই কাঁচা কলা হজম হয়। ভেঙ্গে যায়। এতে এই উপকারী ব্যাকটেরিয়া সংখ্যায় বাড়ে এবং উপজাত হিসেবে এক ধরণের short chain fatty acid সৃষ্টি হয়। শরীরের জন্য উপকারী।
বলে দিলাম, যার পাকস্থলির ব্যাকটেরিয়া যত বেশী সংখ্যায়, সে তত বেশি সুখী ও রোগমুক্ত।
তবে এ-ও মনে রাখতে হবে যে পাকস্থলিতে অপকারী ব্যাকটেরিয়াও আছে। তার নাম প্যাথোজেনিক ব্যাকটেরিয়া।
উপকারী ব্যাকটেরিয়া (microbiome) এবং অপকারী ব্যাকটেরিয়া (pathogenic bacteria) এর একটা ব্যালান্স থাকে। অনুপাত ৭০:৩০ বা কাছাকাছি।
এই ভারসাম্য নষ্ট হলেই আমার অসুস্থ হয়ে পড়ি।
সে জন্য আমাদের সে সমস্ত খাবার বেশি খাওয়া উচিত যেগুলো দিয়ে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার বংশ বৃদ্ধি হয়।
বুলেট প্রুফ ইমিউন সিষ্টেম। খুবই শক্ত রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা।
বর্তমানে পৃথিবীতে পরিবেশ দুষণ, ডাক্তারী ওষুধ এবং বাজে খাদ্যাভাসের কারণে বিশ্বব্যাপী মানুষের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা দূর্বল হয়ে পড়েছে।
আর আমাদের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থার ৯০% হলো আমাদের পাকস্থলির এই ব্যাকটেরিয়া। উপকারী ব্যাকটেরিয়া।
এই জন্যই resistant starch সমৃদ্ধ কাচাঁ কলার ভর্তা।
সিয়াম বা রোযা
মুসলিমরা রোজা রাখলে তাকে বলা হয় ‘সিয়াম’। খ্রিস্টানরা রোজা রাখলে তাকে বলা হয় ‘ফাস্টিং’। হিন্দু বা বৌদ্ধরা রোজা রাখলে তাকে বলা হয় ‘উপবাস’। বিপ্লবীরা রোজা রাখলে তাকে বলা হয় ‘অনশন’। আর, মেডিক্যাল সাইন্স রোজা রাখলে তাকে বলা হয় ‘অটোফেজি’।
খুব বেশি দিন হয়নি, মেডিক্যাল সাইন্স ‘অটোফেজি’র সাথে পরিচিত হয়েছে। ২০১৬ সালে নোবেল কমিটি জাপানের ডাক্তার ‘ওশিনরি ওসুমি’-কে অটোফেজি আবিষ্কারের জন্যে পুরষ্কার দেয়। এরপর থেকে আধুনিক মানুষেরা ব্যাপকভাবে রোজা রাখতে শুরু করে।
কমেন্টে কিছু ভিডিও দিব। রোজা রাখার জন্যে আধুনিক সচেতন নারী ও পুরুষেরা কেমন ব্যস্ত হয়ে পড়ছে, দেখুন!!! শত হলেও, মেডিক্যাল সাইন্স বলে কথা!!
যাই হোক, Autophagy কি? এবার তা বলি।
Autophagy শব্দটি একটি গ্রিক শব্দ। Auto অর্থ নিজে নিজে, এবং Phagy অর্থ খাওয়া। সুতরাং, অটোফেজি মানে নিজে নিজেকে খাওয়া।
না, মেডিক্যাল সাইন্স নিজের গোস্ত নিজেকে খেতে বলে না। শরীরের কোষগুলো বাহির থেকে কোনো খাবার না পেয়ে নিজেই যখন নিজের অসুস্থ কোষগুলো খেতে শুরু করে, তখন মেডিক্যাল সাইন্সের ভাষায় তাকে অটোফেজি বলা হয়।
আরেকটু সহজভাবে বলি।
আমাদের ঘরে যেমন ডাস্টবিন থাকে, অথবা আমাদের কম্পিউটারে যেমন রিসাইকেল বিন থাকে, তেমনি আমাদের শরীরের প্রতিটি কোষের মাঝেও একটি করে ডাস্টবিন আছে। সারা বছর শরীরের কোষগুলো খুব ব্যস্ত থাকার কারণে, ডাস্টবিন পরিষ্কার করার সময় পায় না। ফলে কোষগুলোতে অনেক আবর্জনা ও ময়লা জমে যায়।
শরীরের কোষগুলো যদি নিয়মিত তাদের ডাস্টবিন পরিষ্কার করতে না পারে, তাহলে কোষগুলো একসময় নিষ্ক্রিয় হয়ে শরীরে বিভিন্ন প্রকারের রোগের উৎপন্ন করে। ক্যান্সার বা ডায়াবেটিসের মত অনেক বড় বড় রোগের শুরু হয় এখান থেকেই।
মানুষ যখন খালি পেটে থাকে, তখন শরীরের কোষগুলো অনেকটা বেকার হয়ে পড়ে। কিন্তু তারা তো আর আমাদের মত অলস হয়ে বসে থাকে না, তাই প্রতিটি কোষ তার ভিতরের আবর্জনা ও ময়লাগুলো পরিষ্কার করতে শুরু করে। কোষগুলোর আমাদের মত আবর্জনা ফেলার জায়গা নেই বলে তারা নিজের আবর্জনা নিজেই খেয়ে ফেলে। মেডিক্যাল সাইন্সে এই পদ্ধতিকে বলা হয় অটোফেজি।
জাস্ট এ জিনিসটা আবিষ্কার করেই জাপানের ওশিনরি ওসুমি (Yoshinori Ohsumi) ২০১৬ সালে নোবেল পুরস্কারটা নিয়ে গেল। কি আর করা? আমি যেহেতু ডাক্তার নই, তাই এ নিয়ে আমার কোনো আফসোস নেই!
আমার আফসোস হলো তাদের জন্যে, যারা স্বাস্থ্যের কথা ভেবে রোজা রাখেন না। আমরা তো প্রতিবছর একমাস রোজা রেখে শরীরের অটোফেজি করে ফেলি। কিন্তু, আপনারা কিভাবে শরীরের অটোফেজি করবেন?
লিখেছেনঃ ভাই জোবায়ের আল মাহমুদ