পবিত্র কুরআন থেকে ইয়াজুজ মাজুজ বের হওয়ার প্রমাণ

ইয়াজুজ মাজুজের কথা কোরআনে আছে। কাজেই আসুন আমরা একটু অনুসন্ধান করি সেখানে কি আছে।

কোরআনে সূরা আম্বিয়ার ৯৫-৯৬ নং আয়াতটি একটু মন দিয়ে বুঝি। আমরা জানি ইহুদীরা বরকতময় পবিত্রভূমি বা জেরুজালেম থেকে আল্লাহর হুকুমে বহিষ্কার হয়েছিল, যখন তারা পুনরায় সেই পবিত্রভূমিতে ফিরে যাবে তখনই বোঝা যাবে ইয়াজুজ মাজুজের কারণেই তারা পবিত্রভূমিতে ফেরত এসেছে। এটাই ইয়াজুজ মাজুজ বের হওয়ার সাইন।

আমরা জানি আল্লাহর হুকুমে ইহুদীরা দুইবার বহিষ্কৃত হয়েছিল। শেষেরবার বহিষ্কৃত হওয়ার দুই হাজার বছর পর তারা বৃটেনের বেলফোর ঘোষণার মাধ্যমে ইসরায়েলে ফিরে যায়। এরপর থেকে তারা সারা দুনিয়ার প্রতিটি ভূমি থেকে দলে দলে ইসরায়েলে আবাসন গাড়ে। এ কথাকেই সূরা আম্বিয়ায় স্পষ্টভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। “যেসব জনপদকে আমি ধ্বংস করে দিয়েছি, তার অধিবাসীদের ফিরে না আসা অবধারিত। যে পর্যন্ত না ইয়াজুজ ও মাজুজকে বন্ধন মুক্ত করে দেয়া হবে এবং তারা প্রত্যেক উচ্চভুমি থেকে দ্রুত ছুটে আসবে।” (সূরা আম্বিয়া, আয়াত ৯৫-৯৬)।

এখন দেখুন কারা সারা দুনিয়ায় ইতিপূর্বে ছড়িয়ে পড়েছিল? কাদের আল্লাহ তায়ালা তাদের নিজভূমি থেকে বের করে দিয়েছিলেন আল্লাহর অবাধ্যতার শাস্তিস্বরূপ। এর উত্তর আছে সূরা বনী ইসরায়েলে। “আমি বনী ইসরাঈলকে কিতাবে পরিষ্কার বলে দিয়েছি যে, তোমরা পৃথিবীর বুকে দুবার অনর্থ সৃষ্টি করবে এবং অত্যন্ত বড় ধরনের অবাধ্যতায় লিপ্ত হবে। অতঃপর যখন প্রতিশ্রুত সেই প্রথম সময়টি এল, তখন আমি তোমাদের বিরুদ্ধে প্রেরণ করলাম আমার কঠোর যোদ্ধা বান্দাদেরকে। অতঃপর তারা প্রতিটি জনপদের আনাচে-কানাচে পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ল। এ ওয়াদা পূর্ণ হওয়ারই ছিল।” (সূরা বনী ইসরায়েল, আয়াত ৪-৫)

প্রথমবার বের করে দেয়ার পর, আল্লাহ তাদেরকে আবার সুযোগ দেন যেন তারা ভালো কাজ করতে পারে। কিন্তু তারা আবারও আল্লাহর অবাধ্যতায় লিপ্ত হয়। ফলে আল্লাহ তাদের আবার জেরুজালেম থেকে বের করে দেন।

“অতঃপর আমি তোমাদের জন্যে তাদের বিরুদ্ধে পালা ঘুরিয়ে দিলাম, তোমাদেরকে ধন-সম্পদ ও পুত্রসন্তান দ্বারা সাহায্য করলাম এবং তোমাদেরকে জনসংখ্যার দিক দিয়ে একটা বিরাট বাহিনীতে পরিণত করলাম।

তোমরা যদি ভাল কর, তবে নিজেদেরই ভাল করবে এবং যদি মন্দ কর তবে তাও নিজেদের জন্যেই। এরপর যখন দ্বিতীয় সে সময়টি এল, তখন অন্য বান্দাদেরকে প্রেরণ করলাম, যাতে তোমাদের মুখমন্ডল বিকৃত করে দেয়, আর মসজিদে ঢুকে পড়ে যেমন প্রথমবার ঢুকেছিল এবং যেখানেই জয়ী হয়, সেখানেই পুরোপুরি ধ্বংসযজ্ঞ চালায়।” [ সুরা বনী-ইসরাঈল, আয়াত ৬-৭ ]

তাদের সেই ভূমি যে বরকতময় পবিত্রভূমি তথা জেরুজালেম ছিল তাও সূরা বনী ইসরাইয়েলের প্রথম আয়াত পাঠ করলে বোঝা যায়। “পরম পবিত্র ও মহিমাময় সত্তা তিনি, যিনি স্বীয় বান্দাকে রাত্রি বেলায় ভ্রমণ করিয়েছিলেন মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যান্ত-যার চার দিকে আমি পর্যাপ্ত বরকত দান করেছি যাতে আমি তাঁকে কুদরতের কিছু নিদর্শন দেখিয়ে দেই।” (সূরা বনী ইসরায়েল, আয়াত ১)

দ্বিতীয়বার বের করে দেয়ার পর, তারা তখনই তৃতীয়বারের মতো ফেরত আসতে পারবে যখন ইয়াজুজ মাজুজ বন্ধনমুক্ত হয়ে যাবে। বস্তুতঃ ইয়াজুজ মাজুজের সহায়তায়ই তারা ২০০০ বৎসর পর জেরুজালেমে ফিরে আসে। এবং পুনরায় তারা আল্লাহর অবাধ্যতায় লিপ্ত হয়। যেমন, ফিলিস্তিনের নাগরিকদের বসতভিটা থেকে উচ্ছেদ করে, মসজিদে আকসা দখল করে সেখানে থার্ড টেম্পল তৈরি করতে চায় এবং প্রতিটি মুসলিম দেশে অশান্তি সৃষ্টি করে।

কেন ইউরোপীয় ধর্ম-নিরপেক্ষ অ-ইহুদীরা চরম সাম্প্রদায়িক ইহুদিদের জেরুজালেমে ফেরত আনল? পৃথিবীর ইতিহাসে ধর্ম-নিরপেক্ষ বলতে কিছু ছিল না। অথচ পৃথিবী প্রত্যক্ষ করল এক ধর্ম-নিরপেক্ষ ইউরোপীয় জাতিকে যারা বেলফোর ঘোষণার মাধ্যমে ইহুদীদের পক্ষাবলম্বন করল এবং তাদেরকে জেরুজালেমে ফেরার ব্যবস্থা করে দিল। যা সূরা আম্বিয়ার ৯৫-৯৬ নং আয়াতে বর্ণিত হয়েছে। “যেসব জনপদকে আমি ধ্বংস করে দিয়েছি, তার অধিবাসীদের ফিরে না আসা অবধারিত। যে পর্যন্ত না ইয়াজুজ ও মাজুজকে বন্ধন মুক্ত করে দেয়া হবে এবং তারা প্রত্যেক উচ্চভুমি থেকে দ্রুত ছুটে আসবে।” (সূরা আম্বিয়া, আয়াত ৯৫-৯৬)।

গোগলে সার্চ দিয়ে দেখবেন সারা পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে নিম্নভূমি হলো জেরুজালেম। এজন্যই কুরানে বলা হয়েছে, তারা প্রতিটি উচ্চভূমি থেকে দ্রুত ছুটে আসবে।

আশা করি বাকীটুকু একটু নিজেরা চিন্তাভাবনা করবেন। একটু বোঝার চেষ্টা করবেন যে, কিভাবে ইহুদীরা আবার জেরুজালেমে ফিরে এলো সারা বিশ্বের প্রতিটি আনাচে কানাচে হতে এবং কারা তাদের সেখানে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিল। তখনই বুঝতে পারবেন, যারা সেই বেলফোর ঘোষণা দিয়েছিল তারাই হলো ইয়াজুজ মাজুজ। আর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালামও বলে গিয়েছিলেন যে, ইয়াজুজ মাজুজের প্রাচীরে ছিদ্র হয়ে গেছে। কাজেই তাদের সেই প্রাচীর থেকে বের হওয়ার প্রক্রিয়া রাসূল ছাল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া সালামের সময়ই শুরু হয়েছিল। এবং তারাই এখন সারা পৃথিবীতে ফাসাদ সৃষ্টি করছে। সাথে সাথে আমরা দেখতে পাচ্ছি তাবারিয়া হ্রদ বা সী অব গ্যালিলী শুকিয়ে যাচ্ছে।

বিস্তারিত জানার জন্য শায়খ ইমরান নজর হোসেনের পবিত্র কুরআনে জেরুজালেম বইটি পড়ুন।

#ইয়াজুজ_মাজুজ

ইমাম মাহদী আলাইহিস সালামের শুরুর সময়টা কেমন হতে পারে?

প্রতিটি নবী রাসূল আলাইহিমুস সালাম প্রথমে দীর্ঘ সময় বলতে গেলে নিচুকণ্ঠে মানুষকে দ্বীনের দাওয়াত দিয়েছেন। নিতান্ত নিরীহভাবে।

নূহ আলাইহিস সালাম ৯৫০ বৎসর দাওয়াত দিয়েছেন। এরপর নীরবে নৌকা তৈরি করেছেন। তখনো তাকে নিয়ে মানুষ হাসিঠাট্টাই করত। মূসা আলাইহিস সালামের কথাতেই তো ছিল জড়তা। তার স্পীচ ডেলিভারী পাওয়ার নিয়ে তিনি নিজেই সন্দিহান ছিলেন। নবীজি ছাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম মক্কায় কত কষ্ট করছেন। তার উপর নাড়িভুঁড়ি চাপিয়ে দিছে। তায়েফে পাথর নিক্ষেপ করেছে। এইভাবে সব নবী রাসূলের শুরুটা ছিল নিতান্তই সাদামাটা। তারা এসেই বাতিলের বিরুদ্ধে অস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন নাই। তারা এসেই ফাঁকা হুংকার দেন নাই। তারা আসার সাথে সাথেই মানুষ দলে দলে তার সাথে অংশগ্রহণ করেন নাই।

এজন্য তারা দাওয়াতের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে তৈরি করেছেন। প্রান্তিক সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। যাদের ভেতর দ্বীনের ভালোবাসা ছিল। ইলেম হয়তো এতো ছিল না। কিন্তু মহব্বত ছিল আল্লাহর প্রতি, নবীর প্রতি। তারা নবীদের কাছে বায়াত হয়েছেন। তাদের হাতের উপর ছিল আল্লাহর হাত।

নবীদের শুরুটা এরকমই ছিল। নিতান্তই সাদামাটা।

কিন্তু তাদের শেষটা ছিল পুরোই ভিন্নরকম। শেষের দৃশ্য আর প্রথম দৃশ্য একরকম নয়। শেষের দৃশ্যে নবীদের প্রতি আল্লাহর সাহায্য দৃশ্যমান হয়। আর শুরুতে যেসব জালেমরা অস্বীকার করছিল তাদের পাকড়াও করা হয়। কখনো পৃথিবী প্লাবনে ভরে যায়। কখনো ফেরাউন ডুবে মরে। আর মহানবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালামের হাতে মক্কা বিজয় হয় এবং আল্লাহ দ্বীনের পূর্ণতা দান করেন।

সকল নবী রাসূলদের সাধারণ চিত্র এরকমই। তারা যেদিন নবুয়ত পান, সেদিনই তারা পরিশুদ্ধ হন, আল্লাহর সাহায্য লাভ করতে থাকেন এটা ঠিক, কিন্তু বিজয় সেদিনই চলে আসে না। এটা আসে স্বাভাবিক উপায়ে, তাদের কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে, একটা সার্টেইন পিরিয়ড পর। প্রথম দিকে নবীদের প্রতি আল্লাহর সাহায্য সবার বুঝে আসে না, কিন্তু ধীরে ধীরে তা প্রকাশিত হয়। শেষে সত্য উন্মোচিত হয়।

এটাই আল্লাহর স্বাভাবিক নিয়ম। আল্লাহ বলেন, আল্লাহর নিয়মে কোন ব্যতিক্রম নেই।

ইমাম মাহদী আলাইহিস সালামের ব্যাপারেও তাই হবে। ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাম নবী নন, কিন্তু নবীদের কাজই করবেন। তিনি মানুষকে আল্লাহর দিকে ডাকবেন এবং দ্বীন প্রতিষ্ঠা করবেন। তাই নবীদের সাথে আল্লাহ যে আচরণ করেন, তার সাথেও সেরকমই করবেন। তারও প্রথম অবস্থা সুখকর হবে না।

কিন্তু সমস্যা হলো, আমরা যেমন মনে করছি, তিনি এলেন, আর আমরা সবাই বুঝে যাব, তার হাতে বায়াত হব, আর তিনি কাফেরদের হাত থেকে রাতারাতি বিজয় ছিনিয়ে খেলাফত প্রতিষ্ঠা করে মুসলমানদের উপহার দিবেন। এর ব্যাখ্যা এই যে, আমরা তার শেষ দৃশ্যের ঘটনা প্রথম দৃশ্যে দেখার জন্য মাইন্ড সেট করে আছি।

তবে ব্যাপারটা কিন্তু সেরকম হবে না। তাহলে আর ৩১৩ জনের কথাটা আসত না। কেন তার হাতে প্রথম ৩১৩ জনের মতো স্বল্পসংখ্যক মুসলমান বায়াত হবেন? পৃথিবীতে তো মুসলমান আলেম উলামার সংখ্যাই লক্ষ লক্ষ। তাদের হাতে ইলেম আছে। তাদের হাদীসের ইলেম দিয়ে তাকে আলেমরা সত্যিই চিনতে পারবেন? লক্ষ লক্ষ আলেম এবং গোটা মুসলিম উম্মাহ কি প্রথমেই তার আনুগত্য করতে পারবেন?

আমার হিসেবে তা হবে খুবই আনলাইকলি। তবে শেষ দৃশ্যে যখন ইমাম মাহদী ডিফেন্সিভ রোল থেকে একটিভ রোল প্লে করবেন, যেভাবে প্রতিটি নবী রাসূল করছেন, তখন হয়তো পুরো মুসলিম উম্মাহকে তার সাথে পাবেন।

দরূদ ইব্রাহীমের গভীর অর্থ

অনেকে তো ইমাম মাহদী আলাইহিস সালামের নামের সাথে আলাইহিস সালাম শব্দ যোগ করতেও চায় না। অথচ আলাইহিস সালাম মানে হচ্ছে তার উপর শান্তি। তাদের মতে এটা শুধু নবী রাসূলদের জন্য। কিন্তু জানেন কি, ইমাম মাহদী আলাইহিস সালামকে সালাম না দিলে আপনার নামাজও কবুল হবে না। কথাটা শুনে এতোক্ষনে সম্ভবতঃ আঁতকে উঠেছেন। আল্লাহ না করুন, হয়তো কাফের ফতোয়া দেয়ার চিন্তাভাবনা করে ফেলতেছেন। শুধু ইমাম মাহদী না, আহলে বাইতের প্রত্যেককে সালাম দিতে হয়। এমনকি যারা ইমাম হোসাইন রাদ্বিআল্লাহু তায়ালা আনহুকে কারবালার ময়দানে শহীদ করেছিল, নবী পরিবারের প্রতি জুলুম করেছিল, তারাও তাদের সেদিনের নামাজে আহলে বাইতের জন্য শান্তির দোয়া করেছিল। কিন্তু তা তারা বুঝে করেনি। মুখস্থ, গৎ বাঁধা দোয়া হিসেবে করেছে।

এই মুখস্থ, গৎ বাঁধা নামাজ পড়ি বলেই আমাদের নামাজ আসমানের উপর উঠতে পারে না। নামাজে মন থাকে না।

অথচ প্রতি ফরজ সালাতে, ওয়াজিব সালাতে, এমনকি প্রতি নফল সালাতেও আহলে বাইতের প্রতি শান্তির দোয়া করা নামাজ কবুলের শর্ত।

আঁতকে উঠবেন না। কিভাবে তা করা হয় তা আমি বলছি।

আমরা জানি, দরূদ ছাড়া কোন ইবাদত আসমানে উঠে না। মাঝখানে ঝুলন্ত থাকে। এজন্য প্রতি সালাতে আমরা দরূদ পড়ি। কিন্তু কি দরূদ পড়ছি তা জানি না। শুধু দরূদের নাম জানি। আর জানি এটাই সর্বশ্রেষ্ঠ দরূদ। দরূদে ইব্রাহীম।

“হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ এবং তার পরিবারবর্গের উপর শান্তি দান করুন, যেভাবে আপনি শান্তি দান করেছেন ইব্রাহীম এবং তার পরিবারবর্গের উপর।
হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ এবং তার পরিবারবর্গের উপর বারাকাহ দান করুন, যেভাবে আপনি বারাকাহ দান করেছেন ইব্রাহীম এবং তার পরিবারবর্গের উপর।”

আমরা জানি ইব্রাহীম আলাইহিস সালামের পরিবারের উপর শান্তি ও বারাকাহর নিদর্শন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।

তদ্রূপ, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পরিবারের উপর শান্তি ও বারাকাহর নিদর্শন ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাম।

আশা করি বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন।

দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে এ হক্বকথা কোন মাদ্রাসায় শিক্ষা দেয়া হয় না। কোন উস্তাদ এ হক্বকথা শিক্ষা দেয় না। এ গূঢ় রহস্য বুঝলে সালাতে মন বসবে না, তা হতেই পারে না

শুধু রুকু ও সিজদার দোয়া বুঝাই যথেষ্ট নয়। দরূদে ইব্রাহীমও বুঝতে হবে। ইনশাআল্লাহ।

বিশ্বযুদ্ধ আসিতেছে এবং আমাদের করণীয় কি

“…আমরা এখন মালহামা/বিশ্বযুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি যা মহানবী (সাঃ) ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। আপনাদের যদি আখেরী জামানা সম্পর্কে কোন জ্ঞান না থাকে, তাহলে আপনারা সকালের ট্র্যাফিকের মুখোমুখি হয়ে কাজে যাবেন বিকেলের ট্র্যাফিকের মুখোমুখি হয়ে আবার বাসায় ফিরবেন

রাতে বিরিয়ানি খাবেন,

তারপর টিভি দেখতে দেখতে ঘুমিয়ে পড়বেন…

অথচ আপনাদের কোন ধারনাই থাকবে না যে, আপনারা মালহামা/ বিশ্বযুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছেন। এবং বর্তমান বিশ্বের আলেম-ওলামাদেরও ঐ একই অবস্থা (বর্তমান বিশ্বের বাস্তবতা এবং আমরা যে একটি বিশ্বযুদ্ধের মুখোমুখি হতে যাচ্ছি সে সম্পর্কে কোন ধারনা নেই), এবং এ ধরনের কথা বলা আমার জন্য খুবই দুঃখজনক।

যখন তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবে; মুসলিম হিসেবে এ বিশ্বযুদ্ধে আমাদের কোন ভূমিকা থাকবে না, কেননা আমাদের কোন পারমানবিক অস্ত্র নেই। যখন সব নিওক্লিয়ার বোমা বিস্ফোরিত হবে তখন দোখান (ধোঁয়া-আখেরী জামানার ১০টি বড় আলামতের একটি) সৃষ্টি হবে। মানবজাতির অধিকাংশই তখন মারা যাবে। হয়তো (ফেরেশাতারা) উপর থেকে বলবেন মানবজাতির অধিকাংশ মারা যাওয়াটাই উচিত… (আমাদের অজ্ঞতার / অবাধ্যতার কারনে) ।

ইসরাঈল দিন গুনছে, এই ধ্বংসাবশেষ থেকে বিশ্ব নিয়ন্ত্রণ করা তার জন্য সহজ হবে। এবং ইসরাঈল এর জন্য খুব সুবিধা হবে যদি দুই সুপারপাওয়ার [ন্যাটো-(যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপ, তুর্কি) এবং রাশিয়ান এলায়ান্স- (রাশিয়া, চীন, ইরান, সিরিয়া)] একে অপরকে ধ্বংস করে ফেলে।

আল্লামা ইমরান নযর হোসেন
অনুবাদ- দ্বীনুজ্জামান চৌধুরী
১০মে, ২০১৪, মালয়শিয়া।

পারমাণবিক বিশ্বযুদ্ধের ব্যাখ্যা এবং প্রস্তুতি

BlackSeaMap

আমাদের আজকের আলোচনা সভায় উপস্থিত আছেন গ্রীস হইতে আগত ভাই আবদুল কাদের যিনি অর্থোডক্স খ্রীষ্টধর্ম হইতে ইসলাম গ্রহন করিয়াছেন । যিনি গতরাতে এখানে আসিয়া পৌঁছিয়াছেন এবং তিনি গ্রীসে এই বছর আমার জন্য একটি সেমিনারের আয়োজনের চেষ্টা করিতেছেন । ভাই আবদুল কাদের আপনি একটু দাঁড়ান যাতে আমরা সবাই আপনাকে দেখতে পাই । আমাদের মধ্যে আরেক ভাই আছেন যিনি পাকিস্তান থেকে আসিয়াছেন, ভাই রায়না । আমরা তাদেরকে এবং আপনাদের সকলকে আজকে আলোচনা সভায় স্বাগত জানাই । তো আমাদের আজকের আলোচ্য বিষয় হইল আসন্ন পারমাণবিক যুদ্ধ । আমাদের উদ্দেশ্য আপনাদেরকে ভয় দেখানো নয়, সন্ত্রস্ত করা নয় । কিন্তু ইসলামী চিন্তাবিদদের কিছু দায়িত্ব রহিয়াছে । আমরা যদি না জানাই ভবিষ্যতে কি ঘটিতে যাইতেছে, কোরআনে এই ব্যাপারে কি বলা আছে এবং নবী করীম (সাঃ) কি বলিয়াছেন, তবে মানুষ কবরে বসিয়া আমাদেরকে অভিশাপ দিবে, আপনারা কেন আমাদেরকে বলেন নাই ?

flight-mh-370-nuke-attack.jpg

সুতরাং এজন্য আমাদেরকে বিষয়টি প্রচার করতে হয় এবং আশা করি আপনারা এই আলোচনাতে আমার সাথে ধৈর্যধারন করিয়া অবস্থান করবেন । পারমাণবিক যুদ্ধ আসিতেছে, এটা আমাদের আখেরী জামানা বিদ্যায় আছে (কলিকালবিদ্যা) । মহানবী (সাঃ) ইহাকে অভিহিত করিয়াছেন মালহামা (মহাযুদ্ধ) হিসাবে । অধিকাংশ মুসলমানদেরই এই শব্দের সাথে পরিচয় নাই । খ্রিষ্টানদের আখেরী জামানা বিদ্যাতে এই মহাযুদ্ধের কথা আছে, তারা একে বলে আরমাগেডান । ইহা অবশ্যই পারমাণবিক যুদ্ধ হইতে বাধ্য, কিছুতেই গতানুগতিক যুদ্ধ হতে পারে না । কেন ? আজকের আলোচনায় আমরা ইহার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করিব, অবশ্যই ইসলামের দৃষ্টিতে । আগামীকালের আলোচনায় আমরা ইহার অর্থনৈতিক এবং মুদ্রাব্যবস্থার প্রেক্ষাপট নিয়ে আলোচনা করিব । বোখারী শরীফের একটি হাদীস আছে, যার বিশুদ্ধতা নিয়ে কেহ প্রশ্ন তোলেন নাই । “ফোরাত নদী তাহার সোনার পাহাড় বাহির করিয়া দিবে এবং লোকেরা তাহার জন্য যুদ্ধ করিবে । তাতে শতকরা ৯৯ জন নিহত হইবে । প্রত্যেকেই আশা করিবে যে, সে হয়ত বাঁচিয়া যাইবে (এবং সোনার পাহাড়ের মালিক হইবে) এবং মুসলমানরা অবশ্যই সেই সোনা স্পর্শ করিবে না”। আমি বলতে চাই যে, এই হাদীসটি আমি বিশ বছর পূর্বে পড়িয়াছি কিন্তু তাহার মানে বুঝি নাই যতক্ষন না আল্লাহ তায়ালা দয়া করিয়া আমাকে ইহার অর্থ বুঝিবার সুযোগ দিয়াছেন । পৃথিবীর ইতিহাসে এমন কোন যুদ্ধ হয় নাই যাতে শতকরা ৯৯ জন নিহত হইয়াছে । ইহা হইবে পৃথিবীর ইতিহাসে একমাত্র ব্যতিক্রমধর্মী যুদ্ধ যাহার সাথে অন্য কোন যুদ্ধের কোন তুলনাই হইতে পারে না । একমাত্র তখনই আপনি শতকরা ৯৯ জনকে হত্যা করিতে পারবেন যখন আপনি ব্যাপক বিধ্বংসী মারণাস্ত্র ব্যবহার করিবেন । আর এই যুগে ব্যাপক গণবিধ্বংসী অস্ত্র মানে এটম বোমা / পারমাণবিক বোমা । কাজেই এই যুদ্ধ হইবে পারমাণবিক যুদ্ধ । কাজেই মহানবী (সাঃ) পরমাণু যুদ্ধের ভবিষ্যতবাণী করিয়াছেন এবং তিনি ভবিষ্যতবাণী করিয়াছেন পারমাণবিক যুদ্ধ সংঘঠিত হবে সোনার পাহাড়ের দখল নিয়া । আর আপনি যদি সোনার পাহাড় সম্পর্কে জানিতে চান তবে আগামীকালের লেকচারে আবার আসিবেন ।

বিস্তারিত পড়ুন

সোলাইমান আলাইহিস সালামের শরীয়তে কি ভাস্কর্য নির্মাণ জায়েজ ছিল?

আমাদের অবশ্যই পূর্ববর্তী নবী রাসূল আলাইহিমুস সালাম, পূর্ববর্তী শরীয়ত সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে গভীর প্রজ্ঞার পরিচয় দিতে হবে। অনেকে দেখি মন্তব্য করছেন, সোলাইমান আলাইহিস সালামের সময় নাকি ভাস্কর্য নির্মাণের অনুমতি ছিল শরীয়তে।

তারা কুরআনের সূরা সাবার ১৩ নং আয়াতের তামাথিল শব্দের শাব্দিক অনুবাদ করতে গিয়ে ভাস্কর্য নির্মাণের মতো একটি শরীয়ত পরিপন্থী ইস্যু সোলাইমান আলাইহিস সালামের সাথে জুড়ে দেন।

তারা যুক্তি দেন, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সময় শরীয়ত পূর্ণতা লাভ করে, এর আগের শরীয়তে নাকি ভাস্কর্য নির্মাণের অনুমতি ছিল।

নাউযুবিল্লাহ, নাউযুবিল্লাহ।

আবার এর পক্ষে তারা সূরা সাবার আয়াত দাঁড় করিয়ে ফেলে। অথচ আল্লাহ সোলাইমান আলাইহিস সালামের বহু পূর্বে মূর্তি নির্মাণ হারাম করে দেন। ইব্রাহীম আলাইহিস সালামের শরীয়তে তা হারাম ছিল। এজন্য ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম মূর্তি ভঙ্গ করেছেন।

ইব্রাহীম আলাইহিস সালামের দুই ছেলে। একজন ইসমাঈল আলাইহিস সালাম, আরেকজন ইয়াকুব আলাইহিস সালাম।

ইয়াকুব আলাইহিস সালামের বংশে অসংখ্য নবী রাসূল পয়দা হয়েছেন। তারই একজন সোলাইমান আলাইহিস সালাম।

কাজেই, ইব্রাহীম আলাইহিস সালামের যুগে যা হারাম ছিল, সোলাইমান আলাইহিস সালামের যুগে সেই হারাম জিনিস আবার জায়েজ হয়ে গেল?

অথচ আমরা জানি, ইসলামী শরীয়ত ডে বাই ডে পূর্ণতা লাভ করেছে।

কাজেই এটা কখনো সম্ভব নয় যে আল্লাহ ইব্রাহীম আলাইহিস সালামের সময় যে মূর্তি হারাম করেছেন, এর বহু পরে সোলাইমান আলাইহিস সালামের সময় তাকে ভাস্কর্য নাম দিয়ে জায়েজ করে দিবেন।

আল্লাহ সবাইকে বুঝার জন্য নূর দান করুন।

সোলাইমান আলাইহিস সালাম কি সত্যিই ভাস্কর্য বানাতেন নাকি অন্য কিছু বানাতেন? জানতে নীচের লেখাটি পড়ুন-

সোলাইমান আলাইহিস সালাম কি সত্যিই ভাস্কর্য বানাতেন নাকি অন্য কিছু বানাতেন?

সোলাইমান আলাইহিস সালাম কি সত্যিই ভাস্কর্য বানাতেন নাকি অন্য কিছু বানাতেন?

পবিত্র কুরআনে মূর্তি বা ভাস্কর্য বুঝাতে তামাছিল শব্দটি ব্যবহার করা হয়। ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম তার পিতাকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন যা সুরা আম্বিয়ার ৫২ নাম্বার আয়াত পর্যালোচনা করলে আমরা পাই, ” যখন তিনি তাঁর পিতা ও তাঁর সম্প্রদায়কে বললেনঃ এই মূর্তিগুলো কী, যাদের তোমরা পূজা করতেছ?” (সূরা আম্বিয়া ২১ : আয়াত ৫২)

আবার আরেক জায়গায় তামাছিলের অনুবাদ করা হচ্ছে ভাস্কর্য। সুলাইমান আলাইহিস সালাম তিনি নাকি ভাস্কর্য নির্মাণের আদেশ দিতেন। আসলেই কি তিনি ভাস্কর্য নির্মাণের আদেশ দিতেন? সূরা সাবার ১৩ নম্বর আয়াতের অনুবাদটি এরকম করা হয়-

“তারা (জ্বীনেরা) তৈরী করত সুলাইমানের ইচ্ছানুযায়ী তার জন্য প্রাসাদ, ভাস্কর্য, সুবিশাল হাউযের মত বড় পাত্র ও স্থির হাড়ি। ‘হে দাঊদ পরিবার, তোমরা কৃতজ্ঞতাস্বরূপ আমল করে যাও এবং আমার বান্দাদের মধ্যে অল্পই কৃতজ্ঞ’। (সুরা সাবাঃ ১৩)

ইংরেজিতে একটি অনুবাদ পেলাম সেটিতে বলা হয়েছে,

They made for him what he willed of elevated chambers, statues, bowls like reservoirs, and stationary kettles. [We said], “Work, O family of David, in gratitude.” And few of My servants are grateful. (Surah Saba, Ayat 13)

আরেক জায়গায় বলছে এই কয়টি জিনিস- elevated chambers, statues, bowls like reservoirs, and cooking pots.

এই জিনিসগুলোর প্রায়োগিক দিক বিবেচনা করলে আমার একে নিউক্লিয়ার চুল্লি মনে হয়।

কিন্তু সেখানে তামাছিলের অর্থটি মূর্তি বা ভাস্কর্য এটা হবে না। এর আরেকটি অর্থ আছে। সেটা হচ্ছে কোন কিছুর অনুরূপ হওয়া। ইংরেজিতে রিপ্রেজেন্টেশন। মূল শব্দটি মাথালা বা মাছালা। যেটি থেকে উর্দুতে মেছাল শব্দটি আসছে। অর্থাৎ অনুরূপ বুঝাতে বা উদাহরণ বা সিমিলারিটি বুঝাতে মেছাল শব্দটি ব্যবহৃত হয়।

নিউক্লিয়ার চুল্লিতে ফিশন বিক্রিয়ায় পরমাণুর নিউক্লিয়াসের অনুরূপ আরো নিউক্লিয়াস তৈরি হয়। এই পরবর্তীতে তৈরি হওয়া নিউক্লিয়াসগুলো মাদার নিউক্লিয়াসের অনুরূপ বা তামাছিল।

এছাড়া নিউক্লিয়ার চুল্লিতে যেগুলো থাকে আয়াতে সে জিনিসগুলোই কিন্তু বলা হয়েছে। যেমন- এলিভেটেড চেম্বার, রিজার্ভার, তামাছিল বা ফিশন বিক্রিয়া হওয়া এবং কুকিং পট বা বড় হাড়ির মতো দেখতে জিনিসগুলো।

কাজেই যতদূর মনে হয়, সুলাইমান আলাইহিস সালাম ভাস্কর্য নির্মাণ করতে জ্বীনদের আদেশ করেন নাই। বরং নিউক্লিয়ার রিএকটর তৈরি করার জন্য আদেশ করেছেন।

আজকে কাফের রাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা জ্বীনপুজা করে তাদের দিয়ে একই ভাবে নিউক্লিয়ার চুল্লি তৈরি করে।

আল্লাহু আ’লাম।

বিজ্ঞান এর নামে অপবিজ্ঞান (পার্ট ১৭)

পৃথিবীর বয়স নিয়ে মিথ্যাচার

আজকের তথাকথিত আধুনিক বিজ্ঞান আমাদের বলে, সৃষ্টির বয়স ১৩.৮ বিলিয়ন বছর,, পৃথিবীর বয়স বিলিয়ন বিলিয়ন বছর, আদৌ এটা কতটুকু সত্য? ইসলাম পৃথিবীর বয়স সম্পর্কে কি বলে চলুন শরীয়তের বর্ণনা মোতাবেক দেখে নেয়া যাকঃ—

🔰ইবনু আববাস থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- ‘দুনিয়া হ’ল আখেরাতের জুম‘আ সমূহের মধ্যে একটি জুম‘আর সমতুল্য। আর তা হ’ল সাত হাজার বছর।[তারীখু ত্বাবারী ১/১০, ১৬ ; ইবনু আবী হাতেম হা/১৩৯৮৭, ১৮৪৩৪; শাওকানী, ফাৎহুল কাদীর ৩/৫৪৫; রওযাতুল মুহাদ্দিছীন হা/২৬৪৪।]

🔰যাহহাক বিন যিম্ল আল-জুহানী থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,-‘রাসূল (ছাঃ) ফজর ছালাতের পর ছাহাবীদেরকে তাদের রাতে দেখা স্বপ্ন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতেন। আমি স্বপ্নে দেখলাম… হে আল্লাহর রাসূল! আপনি একটি মিম্বারের উপর আছেন যার সাতটি স্তর ছিল। আর আপনি সর্বোচ্চ স্তরে আরোহন করেছেন।… এর ব্যাখ্যায় রাসূল (ছাঃ) বললেন, এর অর্থ হ’ল দুনিয়ার বয়স সাত হাজার বছর আর আমি সপ্তম সহস্রাব্দে পদার্পণ করছি’[ত্বাবারাণী কাবীর হা/৮১৪৬; মাজমা‘উয যাওয়ায়েদ হা/১১৭৭২; বায়হাকী, দালায়েলুল নবুঅত হা/২৯৬০; সুহায়লী, আর-রওযুল উনুফ ৪/২৩০।]

🔰 ইবনু আববাস (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন,-‘ইহূদীরা বলত, পৃথিবীর মেয়াদকাল সাত হাযার বছর। পৃথিবীর দিনসমূহের তুলনায় প্রতি হাযারে আমাদেরকে একদিন জাহান্নামে শাস্তি দেওয়া হবে। আর তা নির্দিষ্ট সাতদিন। এরপর শাস্তি মওকূফ হয়ে যাবে। এর প্রতিবাদে আললাহ তা‘আলা নাযিল করেন, ‘আর তারা বলে, আমাদের আগুন কখনো স্পর্শ করবে না’…।[বাকারাহ ১/৮০; মু‘জামুল কাবীর হা/১১১৬০; মাজমা‘উয যাওয়ায়েদ হা/১০৮৩৬; রওযাতুল মুহাদ্দিছীন হা/২১৯৪; সুহায়লী, আর-রওযুল উনুফ ৪/২৩০; বর্ণনাটি বিভিন্ন তাফসীর গ্রন্থেও রয়েছে।]

🔰মুহাম্মাদ ইবনু সীরীন জনৈক নওমুসলিম আহলে কিতাব থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা আসমান ও যমীন ছয়দিনে সৃষ্টি করেছেন। আর তিনি দুনিয়ার বয়স ছয় দিন নির্ধারণ করেছেন এবং ক্বিয়ামত সপ্তম দিনে ধার্য করেছেন। ‘তোমার প্রতিপালকের কাছে একটি দিন তোমাদের গণনার এক হাযার বছরের সমান’ (হজ্জ ২২/৪৭)। এর মধ্যে ছয় দিন অতিবাহিত হয়েছে এবং তোমরা সপ্তম দিনে অবস্থান করছ।[তাফসীরে ইবনু আবী হাতেম হা/১৩৯৮৮; তাফসীরে ইবনু কাছীর ৫/৪৪০; তারীখুল খামীস ১/৩৪; দুররুল মানছূর ৬/৬৩।]

🔰

ওছমান বিন যায়দাহ হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, ‘কুরয ইবাদতে মশগূল থাকতেন। তাকে বলা হ’ল, আপনি কি কিছু সময় নিজেকে বিশ্রাম দিবেন না? তিনি বললেন, পৃথিবীর বয়স সম্পর্কে তোমাদের নিকট কি সংবাদ পৌছেছে? তারা বলল, সাত হাযার বছর। তিনি বললেন, ক্বিয়ামতের দিনের পরিমাণ সম্পর্কে কি সংবাদ পেয়েছ? তারা বলল, পঞ্চাশ হাযার বছর। তিনি বললেন, তোমাদের কেউ কি দিনের এক সপ্তাংশ সময় আমল করতে সক্ষম হবে, যাতে সে ঐ দিনে নিরাপত্তা লাভ করবে?’।[আল-মুজালাসা হা/৯১৭; সাখাভী, আল-মাক্বাছিদুল হাসানাহ হা/১২৪৩; সুয়ূতী, আল-হাভী লিল ফাতাওয়া ২/১০৭; ইহ্ইয়াউ ঊলূমিদ্দীন ৭/৬৯।]

🔰আনাস বিন মালেক (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ্কে সন্তুষ্ট করার জন্য মুসলমানের কোন প্রয়োজন পূরণ করবে, আল্লাহ তার আমলনামায় পৃথিবীর বয়স সাত হাযার বছরের সমপরিমাণ দিনে ছিয়াম ও রাতে ক্বিয়াম করার ছওয়াব লিখে দিবেন’।[ইবনু আসাকির ২৩/১৩৩; আল-হাভী ২/১০৫।]

🔰আনাস বিন মালেক (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, আখেরাতের দিনগুলোর তুলনায় পৃথিবীর বয়স সাত দিন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘তোমার প্রতিপালকের নিকট একটি দিন তোমাদের গণনার এক হাযার বছরের সমান’।[ হজ্জ ২২/৪৭)-(তারীখে জুরজান ১/১৪০; ফালাকী, আল-ফাওয়ায়েদ ২/৮৮ ; আল-হাভী ২/১০৫।]

🔰

ইবনু আববাস থেকে বর্ণিত একটি বর্ণনায় রয়েছে যে, ‘দুনিয়া সাতদিন। প্রতিদিন এক হাজার বছরের সমান। আর রাসূল (ছাঃ)-কে প্রেরণ করা হয়েছে এর শেষদিনে’।[সুয়ূতী, আল-লাআ’লিল মাছনূ‘আ ২/৩৬৯; সুহায়লী, আর-রওযুল উনুফ ৪/২৩৮; উমদাতুল ক্বারী ৫/৫২-৫৩।]

অপর একটি হাদীসে 🔰 রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, আমার উম্মত অর্ধ দিবস হায়াত বেশি পাবে। সাহাবীরা জিজ্ঞেস করল, অর্ধ দিবস সমান কত দিন? তিনি বললেন, অর্ধ দিবস হল, ৫০০ শত বছর। (আবু দাউদঃ হাদিস নং – ৪৩৫০) [৭০০০ বছর,মুসলিম উম্মাহর ১৫০০ বছর প্রভৃতি হাদিসকে ব্যবহার করে নানারূপ ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করে কিয়ামতের সময় সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশ্ন তোলা জ্ঞানী মুসলিমের কাজ না। নিঃসন্দেহে কিয়ামতসংক্রান্ত সমস্ত(গায়েবের) জ্ঞান শুধুমাত্র আল্লাহর কাছেই রয়েছে। আল্লাহ বলেনঃ-

তারা তোমার কাছে কেয়ামত সম্বন্ধে প্রশ্ন করে, “তার নির্ধারিত সময় কখন?” বল, “বিষয়টি কেবল আমার প্রভুই জানেন। তিনি ছাড়া কেউই তার সঠিক সময় বলতে পারে না। আসমান ও জমিনে এটি একটি গুরুতর বিষয়। তোমাদের কাছে তা আকস্মিকভাবেই আসবে।” তারা তোমার কাছে (এমনভাবে) প্রশ্ন করে যেন তুমি সে সম্পর্কে পুরোপুরি অবহিত। বল, “বিষয়টি কেবল আল্লাহই জানেন।” কিন্তু অধিকাংশ মানুষ (তা) জানে না। [সুরেয়া আরাফ,, আয়াত ১৮৭]নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের গোপন রহস্য আল্লাহর কাছেই রয়েছে। কিয়ামতের ব্যাপারটি তো এমন, যেমন চোখের পলক অথবা তার চাইতেও নিকটবর্তী। নিশ্চয় আল্লাহ সব কিছুর উপর শক্তিমান। [সুরা আন-নাহল, আয়াত ৭৭]

সুতরাং পৃথিবী সৃষ্টির লক্ষকোটি বছরের বিবর্তনবাদী হিসাব একদম মিথ্যা।এবং তা কোরআন হাদীসের সাথে চরম ভাবে সাংঘর্ষিক। ওরা যা বলে তা ইসলামের শিক্ষা ও আকিদার বিপরীত। ওরা বিলিয়ন বিলিয়ন বছরের হিসাব দেখিয়ে প্রমাণ করতে চায় যে এ বিশ্ব আপনা-আপনিই সৃষ্টি হয়েছে যাতে স্রষ্টার কোনো দরকার নেই, বস্তুত এই বিলিয়ন বছরের হিসাব বিবর্তনেরই অংশ যা বানোয়াট। মহান সর্বশক্তিমান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লার সৃষ্টি এ পৃথিবী আপনা-আপনি সৃষ্টি হয়নি, এটিরই বয়স রয়েছে যার বর্ণনাগুলো আপনাদের নিকট তুলে ধরলাম। মূলত, তারা বিভীন্ন পরিক্ষা নিরিক্ষার নাম দিয়ে কোরআন হাদীসের বর্ননা কে হাস্যকর, প্রকারন্তে মিথ্যা প্রমান করতে চায়।এখন সিদ্ধান্ত আপনাদের,কোরআন হাদীসের কথা বিশ্বাস করবেন নাকি অপবিজ্ঞান এর দেয়া তথ্য বিশ্বাস করবেন।মহান সর্বশক্তিমান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা আমাদের সত্য জানা ও বুঝার তাউফিক দান করুক।

@ Md Tariqul Islam

জ্ঞানের দুই সাগরের সংযোগস্থলে পৌঁছার জন্য মুসা আলাইহিস সালাম যুগ যুগান্তর ভ্রমণ করতে চেয়েছিলেন

খিজির আ’লাইহিস সালামের অন্তর্দৃষ্টিগত জ্ঞান তাওরাত কিতাবে ছিল না। যদি থাকত তবে নবী মূসা আ’লাইহিস সালাম কিতাব পড়ে সে জ্ঞান অর্জন করতে পারতেন। তাকে সে জ্ঞানের সন্ধানে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে খিজির আ’লাইহিস সালামের কাছে যেতে হতো না। কিন্তু জ্ঞানের দুই সাগরের সংযোগস্থলে পৌঁছার জন্য মুসা আলাইহিস সালাম যুগ যুগান্তর ভ্রমণ করতে চেয়েছিলেন।

একবার আল্লাহতায়ালা মূসা নবীকে আদেশ করেছিলেন ফেরাউনের কাছে যাওয়ার জন্য। এটা ছিল ঈমানের দাওয়াত দেয়ার জন্য। যেন ফেরাউন তাওহীদের জ্ঞান পায়। তাওহীদের জ্ঞান কিতাবে লেখা ছিল।

আরেকবার মূসা আ’লাইহিস সালামকে আদেশ করেছেন খিজিরের কাছে যাওয়ার জন্য। কারণ খিজির আ’লাইহিস সালামের কাছে এমন কিছু অন্তর্দৃষ্টিগত জ্ঞান ছিল যা কিতাবে লিপিবদ্ধ ছিল না। আল্লাহ খিজির আ’লাইহিস সালামকে আদেশ করেননি মূসা আ’লাইহিস সালামের কাছে গিয়ে এ জ্ঞান বিতরণ করে আসতে। বরং মূসা আলাইহিস সালামকে আদেশ করেছেন খিজির আলাইহিস সালামের কাছে যেতে।

কোরআনে আমরা খিজির আ’লাইহিস সালামের অন্তর্দৃষ্টিগত জ্ঞান সম্পর্কে ধারণা পাই। আলহামদুলিল্লাহ, এ বিষয়ে কোরআনে আছে, কিন্তু তাওরাতে ছিল না। কারণ কুরআন হচ্ছে এমন এক কিতাব যাতে দুই ধরনের জ্ঞানের সমাহার ঘটেছে। এতে প্রকাশ্য তাওহীদের জ্ঞানও হাসিল হয়, আবার অপ্রকাশ্য অন্তর্দৃষ্টিগত জ্ঞানও হাসিল হয়। তবে কুরআনেই বলা আছে, প্রকাশ্য তাওহীদের জ্ঞান বুঝা সবার জন্য সহজ। কিন্তু অপ্রকাশ্য অন্তর্দৃষ্টিগত জ্ঞান সবার জন্য বুঝা সহজ নয়। এটা আল্লাহ জানেন, এবং আল্লাহ যাদের চান সেসব জ্ঞানী ব্যক্তিদের আল্লাহ তা দান করেন। একেই বোধহয় অনেকে ইলমে লাদুনি বলেন।

আল্লাহ যদি খিজির আ’লাইহিস সালামকে আদেশ করতেন, মূসা আ’লাইহিস সালামকে এ অন্তর্দৃষ্টিগত জ্ঞানের সন্ধান দিয়ে আসতে। তাহলে খিজির আ’লাইহিস সালাম মুসা আ’লাইহিস সালামকে কিছুতেই বুঝাতে পারতেন না। কারণ সেক্ষেত্রে মূসা আ’লাইহিস সালাম ততটুকুই বিশ্বাস করতেন যতটুকু কিতাবে আছে। কিন্তু আল্লাহ মূসা আ’লাইহিস সালামকে পাঠিয়েছেন যেন তিনি সহজে তাওরাত কিতাবের বাহিরের জ্ঞান গ্রহণ করতে পারেন। (তারপরও তা ছিল মূসা আলাইহিস সালামের জন্য অনেক কঠিন। প্রতিটি শিক্ষামূলক ঘটনাতেই মূসা আলাইহিস সালাম দ্বিমত পোষণ করছিলেন)

আজকে আলেম ওলামারা শেষ যুগ সম্পর্কে এক প্রকার অন্ধকারে আছেন। দাজ্জালের ফেতনা, ইয়াজুজ মাজুজের ফাসাদ, রাজনীতি, অর্থনীতি, পররাষ্ট্রনীতিতে সর্বব্যাপী শিরক ইত্যাদি।

ফলে তারা নানাবিধ সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন। যার সমাধান কিতাবে সরাসরি তারা পাচ্ছেন না –

এখন যেসব ব্যতিক্রমী চিন্তাধারার ব্যক্তিগণ শেষ যুগ বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছেন, এবং আল্লাহর রহমতে অনেক অগ্রসর হয়েছেন, তাদের কাছে কি আলেমরা আসবেন? বা কমপক্ষে তাদের কথা কখনো বুঝার চেষ্টা করবেন?

মনে হয় না।

একটু দ্বিমত পোষণ করলেই কাফের, জিন্দিক বলে আখ্যায়িত করার লোকের অভাব হয় না। কিন্তু মূসা আলাইহিস সালামের তাওরাতের শরীয়তের সাথে বারবার কনফ্লিক্ট হওয়ার পরও মূসা আলাইহিস সালাম খিজির আলাইহিস সালামকে কাফের ঘোষণা করেননি। বরং বারবার বলছেন, এরপর থেকে তিনি নিজেকে সংশোধন করে নিবেন এবং খিজির আলাইহিস সালাম যেন তাকে সঙ্গ থেকে বঞ্চিত না করেন। এখানেই মূসা আলাইহিস সালাম ও আমাদের আলেমদের মধ্যে পার্থক্য, যারা সাধারণ মুসলমানদের উপর নিজেদের বনি ইসরাঈলের নবীদের মতো মর্যাদাসম্পন্ন মনে করেন।

জেরুজালেমের ভাগ্য কার হাতে?

কখনো কখনো একটি উটের হত্যাকাণ্ডের কারণে একটি জাতির ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে যায়। যেমন সালেহ আ’লাইহিস সালামের উট। কাজেই যারা মানুষ হত্যা করে তাদের কি অবস্থা হবে? যে একজন মানুষ হত্যা করে, সে পৃথিবীর সমস্ত মানুষ হত্যা করতে পারে। কিন্তু প্রতিটা হত্যাকাণ্ডের ঋণ শোধ করার জন্য তাকে প্রস্তুত থাকতে হবে। হত্যাকান্ড কখনো গোপন থাকে না। অতীতেও থাকেনি। আর তার ফল কখনো ভাল হয়নি।

আপনারা সার্চ করলে জানতে পারেন, পৃথিবীকে ডিপপুলেশন করার কিছু এজেন্ডা জায়নিস্ট চক্রের আছে। জনসংখ্যা বিস্ফোরণ শব্দটিকে পরিচয় করানো হয়েছে।

মানুষকে সমস্যা হিসেবে দেখানো, জন্মনিয়ন্ত্রণ, গর্ভপাত ইত্যাদি। এর পাশাপাশি খাদ্যে ভেজাল, চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা, টিকা, ডায়বেটিস, ক্যানসার, হাইপারটেনশন ইত্যাদির মাধ্যমে জনসংখ্যা কমানো খুব দীর্ঘমেয়াদি ও খরচসাপেক্ষ হচ্ছিল। তাই জনসংখ্যা হ্রাস করা টেকনিক্যালি হয়তো সফল হচ্ছিল না। এইডস ছিল জনসংখ্যা কমানোর জন্য সবচেয়ে সম্ভাবনাময় প্রজেক্ট। কিন্তু এতেও মুসলিম দেশের জনসংখ্যা কমার বদলে তাদের জনসংখ্যাই আরো কমে যেতে থাকে। কারণ মুসলিমরা এমনিতেই সুস্থ যৌন জীবন পালন করে। ফলে এইডস দিয়েও খুব বেশি তারা সুবিধা করতে পারেনি।

তারা বুঝতে পেরেছে জনসংখ্যা কতটুকু কমল এটা বিষয় নয়। বরং প্রচার করতে হবে যে জনসংখ্যা কমছে। এর জন্য একটা ভালো ট্রাম্প কার্ড প্রয়োজন ছিল। করোনা হলো সেই ট্রাম্প কার্ড। যা তাদের মূল উদ্দেশ্যকে বাস্তব রূপ দিতে সক্ষম হয়েছে। জনসংখ্যা কমুক আর না কমুক মানুষকে তারা বিশ্বাস করাতে পেরেছে, দুনিয়ার সব জনসংখ্যা মরে সাফ হয়ে যাচ্ছে। করোনা নামক একটি নিরীহ পুরাতন ভাইরাসকে নোভেল বা নতুন রূপে সামান্য মডিফিকেশন করে তার উপর অসামান্য রাজনৈতিক রঙ চড়ানো হয়েছে।

বাস্তবিকই করোনায় মৃত্যুর পাশাপাশি হার্ট এটাকে মৃত্যু, জ্বরজারিতে মৃত্যু, না খেয়ে মৃত্যু সব কিছুকেই করোনা ট্যাগ দেয়া হতে লাগল। ফলে শুরু হলো করোনায় মৃত্যুর আতংক। এখন আবার নাকি শুরু হচ্ছে ভ্যাকসিন। এর পাশাপাশি করোনার সেকেন্ড ওয়েভের ভবিষ্যৎবাণী করা হচ্ছে। অর্থাৎ তাদের আরো সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা আছে।

দুনিয়ার ৯০ শতাংশ মানুষকে কমিয়ে মাত্র ৫০ কোটিতে আনতে পারলে জেরুজালেম থেকে বিশ্ব শাসন করা তাদের জন্য সহজ হবে বলে তাদের বিশ্বাস। জনসংখ্যা কমানোর কথা নাকি তাদের নকল তাওরাতে লিখা আছে। যখন জনসংখ্যা কমে যাবে তখন জেরুজালেম থেকে পৃথিবী শাসন করা সহজ হবে।

জায়নিস্টদের কাজে লাগিয়ে দাজ্জাল সুলাইমান আলাইহিস সালামের সিংহাসন দখল করতে বদ্ধপরিকর। যে বিষয়ে আল্লাহ সুলাইমান আলাইহিস সালামকে জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, তার সিংহাসনে এক আত্মাহীন দেহ বসে আছে। এরপর আল্লাহর কাছে সুলাইমান আলাইহিস সালাম ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং তার রাজত্ব যেন অন্য কেউ না পায় সে দোয়া করেন।

আল্লাহ এ দোয়া কবুল করেন। ফলে জায়নিস্টদের জেরুজালেম দখল করার সকল প্রচেষ্টাকে আল্লাহ ভ্যানিশ করে দিবেন। কখনোই দাজ্জাল সুলাইমান আলাইহিস সালামের জেরুজালেমের সিংহাসন দখল করে পৃথিবী শাসন করতে পারবে না।

তারা ডিপপুলেশন করতে চাচ্ছে। তারা ষড়যন্ত্র করে, আর আল্লাহও পরিকল্পনা করেন। আল্লাহই সর্বোত্তম পরিকল্পনাকারী। ফলে প্রতিবার তাদের লোকই মারা যাচ্ছে, তারাই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।

আসছে প্যাক্স জুদাইকা

দাজ্জালের তৃতীয় দিন সমাগত প্রায়। প্যাক্স জুডাইকা।

খবর- ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়া নিয়ে চাপে থাকলেও মুখ খুলছেন না ইমরান।

লিংকঃ ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়া নিয়ে চাপে থাকলেও মুখ খুলছেন না ইমরান

ইজরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য সব মুসলিম দেশকে চাপ দেয়া হচ্ছে। যারা বাকি থাকবে তাদেরকে বানিয়ে দেয়া হবে ইরান ও তুরস্কের দালাল। এমনকি মসজিদেও কিছুদিন পর ইহুদিদের তৃতীয় মন্দির বানানোর পক্ষে ওয়াজ শোনা যাবে। ইমরানকে যখন চাপ দেয়া হচ্ছে, তাহলে বাংলাদেশও কি চাপে নেই, ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য?

নোট:
প্যাক্স বৃটেনিকা – দাজ্জালের এক বছরের সমান এক দিন। ব্রিটেন দ্বারা বিশ্ব শাসন। প্রায় ৩০০ বছর বিশ্ব শাসনের পর গত শতকে ব্রিটেন সবকয়টি দেশকে স্বাধীন করে আমেরিকার কাছে বিশ্ব ক্ষমতা তুলে দেয়।

প্যাক্স আমেরিকানা – দাজ্জালের এক মাসের সমান এক দিন। আমেরিকা দ্বারা বিশ্ব শাসন। এর ব্যাপ্তিকাল আনুমানিক ৫০-৬০ বৎসর। বর্তমানে এই যুগ শেষ হওয়ার দ্বারপ্রান্তে। ট্রাম্প ও বাইডেনের সংকটের কারণে আমেরিকার বিশ্ব ক্ষমতা ধ্বংস হবে এবং ইসরায়েল বিশ্ব ক্ষমতার মালিক হবে।

ডলারের পতনের পর আসবে ইসরায়েল পরিচালিত ভয়াবহ ইলেকট্রনিক মুদ্রা। কারেন্ট গেলে যার কোন ভ্যালু থাকবে না। এমনকি যে মুদ্রার কোন রিজার্ভ থাকবে না। টাকশালের কী-বোর্ড যার হাতে মুদ্রা বানানোর মেশিন তার হাতে। এটা হচ্ছে দাজ্জালের ভয়াবহ তৃতীয় দিন। যখন মুদ্রা বলতে মানুষের কাছে ইলেকট্রনিক কার্ড ছাড়া কিছুই থাকবে না। এটাই প্যাক্স জুদাইকা।

এই সময়টা হবে আনুমানিক ৫-১০ বৎসর। এরপর দাজ্জালের বাকী দিনগুলো হবে আমাদের দিনের সমমানের। ফলে সেই দিনগুলো তাড়াতাড়ি কাটবে এবং ঐ দিনগুলো শেষ হলে ঈসা আলাইহিস সালামের হাতে দাজ্জাল নিহত হবে।

ঈসা আলাইহিস সালাম ছাড়া দাজ্জালকে পারফেক্টভাবে আর কেউ সনাক্ত করতে পারবে না। হয়তো ধারণা করতে পারে।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন দাজ্জালের এক দিন তোমাদের এক বছরের সমান হবে তখন তোমরা সময় দেখে সালাত আদায় করবে। ঘড়ি আবিষ্কারের পর থেকে ঘড়ি দেখে সালাত আদায়ের নতুন তরীকার সাথে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এই ভবিষ্যৎবাণী মিলে যায়।

আমরা একেবারে শেষ যুগের শেষ প্রান্তের কিনারায় চলে এসেছি।

আল্লাহু আ’লাম।

হাতি এবং গাধা

আমেরিকাকে নিয়ে আল্লাহ কুরআনে কি কিছু বলেছেন? আল্লাহ বলেছেন, যারা চোখ আছে দেখে না, কান আছে শুনে না, অন্তর আছে চিন্তা করে না, তারা চতুষ্পদ প্রাণীর চেয়ে অধম। এটাই হলো আমেরিকা।

আল্লাহ কুরআনে দুই রকম চতুষ্পদ জন্তু নিয়ে আলোচনা করেছেন। একটা হলো হস্তীবাহিনী। মানে হাতির দল। আরেকটা হলো গাধা।

আল্লাহ হাতির দলকে ধ্বংস করেছেন, এবং গাধার ডাককে সর্বনিকৃষ্ট ডাক বলেছেন। অর্থাৎ চতুষ্পদ প্রাণী বলতে হাতি এবং গাধা বুঝিয়েছেন। আর আমেরিকার প্রধান দুই দলের প্রতীক হলো হাতি ও গাধা। সারা পৃথিবীজুড়ে ডেমোক্র্যাটিক ও রিপাবলিকান ব্লকের নেটওয়ার্ক আছে। এই নেটওয়ার্কের সবাই চতুষ্পদ জন্তুর অন্তর্ভুক্ত। তারা মনে করে সব ক্ষমতার মালিক আমেরিকা। কিন্তু পৃথিবীর অবস্থা ভিন্ন, যা তারা চোখ দিয়ে দেখে না, কান দিয়ে শুনে না, অন্তর দিয়ে চিন্তা করে না। ফলে তারা শেষ যুগের ইসলামের বিজয় সম্পর্কে কোন ধারনাই রাখে না।