দ্বিতীয় বিয়ে বিষয়ে কিছু প্রশ্নোত্তর

Time for Change

Time for Change Q&A

(১)

– ছেলেদের একাধিক বিয়ের পক্ষে কথা বলে ধর্মের বিতর্কিত বিষয় নিয়ে কথা বলে আপনি কাদের উস্কে দিচ্ছেন?

  • একাধিক বিয়ের পক্ষে স্বয়ং কুর’আনে আয়াত আছে, তাহলে আমি পক্ষে বলব না কেন? এটি ধর্মের বিতর্কিত বিষয়?

– আপনি একাধিক বিয়ের পক্ষে কথা বলছেন। একটা ব্যাপার আমাদের মনে রাখা দরকার আজ থেকে ১৪০০ বছর আগে আরব দেশে যে সব রীতি নীতি ছিল তা সারা পৃথিবীর জন্য কোনদিন ই প্রযোজ্য না। আজ এই আধুনিক যুগে একাধিক বউ নিয়ে ঘর করা শুধুমাত্র অসভ্যতাই নায় চরম বিকৃত মানসিকতার পরিচয় বহন করে। ১৪০০ বছর আগে তো মানুষের দাস দাসি দের সাথে সেক্স করার অধিকারও ছিল। তো এখন এটাও প্রচার করেন যে চলেন আমরা সবাই বাসার কাজের বুয়ার সাথে সেক্স করি। ভাই মাথা খাটায়ে চিন্তা করেন। আল্লাহ মাথা দিছে ভাল কিছু চিন্তা করার মানুষের ভাল করার। আরবদের মত বিকৃত চিন্তা করার জন্য না। ধন্যবাদ।

  • আপনার ইমানের অবস্থা সাংঘাতিক। তাওবা করুন। ”১৪০০ বছর আগে আরব দেশে যে সব রীতি নীতি ছিল তা সারা পৃথিবীর জন্য কোনদিন ই প্রযোজ্য না।” আপনি এখানে কুর’আনের বিধানের কথা বলছেন যে, সেটা ১৪০০ বছরে আগের এবং এই যুগে তা প্রযোজ্য নয়। আপনি ইমানের সংজ্ঞাকে আবারো পড়ুন বুঝুন।ইসলামের কোন ফরজিয়াত বা কুর’আনের কোন আদেশ বা আয়াহ বা রাসুল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কোন সুন্নাহ নিয়ে ঠাট্টা-মশকরা, বা মনে এমন বিশ্বাস রাখা যে, এই সব তো সেকেলে যুগের নীতি, এই আধুনিক যুগে এটা চলবে না ইত্যাদি সব কিছুই কুফুরি। এগুলো যদি জেনে বুঝে বলা হয় তবে ব্যক্তি কাফির হয়ে যাবে, তাকে আবারো নেক মনে তাওবা করে মুসলমান হতে হবে অন্যথায় মুরতাদ হয়ে যাবে।ঈমান কোন ফিক্সড এসেট নয়। যে মুসলিম হয়ে জন্মেছি মানে মুসলিমই থাকবো। বরং এটা হল ভেরিয়েবল। ঈমানের পরিমান সব সময় পরিবর্তন হয় এমনকি শূন্য হয়ে কাফির হয়ে যেতেও পারে।আবারো বলছি আপনি কুর’আনের বিধানের বিরোধিতা করছে অদ্ভুত সব যুক্তি দিয়ে। আপনি কালেমা পাঠ করুন। জেনে বুঝে কুফুরি করলে কাফির অর্থাৎ অমুসলিম হয়ে যাবেন।

– ভাই আপনি যে বিষয় নিয়ে পোস্ট দিয়েছেন তার বাইরেও কুরআন ও হাদিসে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আছে সেগুলো নিয়ে কথা বলেন। বর্তমান যুগে বহু বিবাহ নিয়ে অযথা ধর্মের বয়ান দিলেও আপনি আপনার পোস্ট এর গুরুত্ব পাবেন না।

  • আপনার কাছে এখন এটাই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ তাওবা করে আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণ করা। প্রয়োজন নেই আমার পোস্টের গুরুত্ব পাওয়া।বোন আপনি পোস্টটি ভালো করে পড়ুন একাধিকবার, বহু বিবাহকে প্রমোট নয় এটা মূলত বহু বিবাহকে আল্লাহর বিধান হিসেবে মেনে নেওয়ার জন্য দিলাম। যদি কেউ না মেনে মন থেকে যুক্তি দিয়ে অস্বীকার করে তবে সে ইসলামের বিধান অনুসারে মুসলিম থাকবে না। সে কাফির হয়ে যাবে। অর্থাৎ মুরতাদ। তাহলে মুফতিরা তাকে তাকফির করতে পারবে। খিলাফত হলে তাকে হত্যা করাও হতে পারে। তার বিয়ে ভেঙ্গে যাবে। সে যত বার তাওবা ব্যতীত স্বামীর নিকট হবে ততবার উভয়ের যিনাহ’র গুনাহ হবে। বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর। অজ্ঞতা, বা হাসি তামাশার বিষয় নয়।

আমি জানি না, তিনি তওবা করেছেন কি না। তবে তার জানায় যে অনেক গলদ আছে তা স্পষ্ট। তিনি দাস-দাসী ও কাজের বুয়াকে এক করে ফেলেছেন। দাস-দাসী আর কাজের বুয়ার হুকুম এক নয়। দাস-দাসী পরাধীন। সে মনিবের ইচ্ছা ছাড়া কোথাও যেতে পারবে না। মনিব চাইলে তাকে বিক্রি করে দিতে পারে। কাজের বুয়া স্বাধীন। সে চাইলে চাকরী ছেড়ে চলে যেতে পারে। মালিক তাকে বিক্রি করতে পারে না। যেকোন স্বাধীন নারীর সাথে ইচ্ছা করলেই যৌন সম্পর্ক করা যায় না। কিন্তু দাসীর সাথে যায়। দাসী বিষয়ে কুরআনের হুকুম আজো পালটে যায় নি। কিয়ামত পর্যন্ত পাল্টাবে না। এ বেসিক বিষয়গুলো যোগ্য আলেম উলামাদের কাছ থেকে জেনে নিয়ে তারপর মন্তব্য করা উচিৎ।

(২)

– আপনারা একাধিক বিয়ে করে দেখিয়ে দিন যাতে মানুষ কিছু শিখতে পারে …।

  • মানুষ আমাদের দেখে নতুন কিছু শেখার কিছু নেই। আর দেখানো হচ্ছে রিয়া যা গুনাহ। পুরাতন বিষয়েই বলা হচ্ছে যার দৃষ্টান্ত ইসলামে প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু তা আপনাদের মতো মডারেট ইসলামিস্টদের মানতে কষ্ট হচ্ছে। আর আপনারা তা কখনোই মানতে পারবেন না যতক্ষন না ‘শুনলাম ও মানলাম’ নীতির উপর আপনারা না আসেন।

(৩)

– হযরত আলী রা যখন ২য় বিয়ে করতে রাসুল সা এর কাছে অনুমতি চেয়েছিলেন তখন রাসুল সা তাকে অনুমতি দেন নাই,কারন তার কন্যা ফাতিমা রা অসন্তুষ্ট হবেন বলে, হযরত আলী রা ফাতিমা রা এর জীবদ্দশায় আর বিয়ে করেন নি। সাহাবায়ে কেরাম খোলফায়ে রাশেদীনের এই ঘটনা থেকে বুঝা যায় যে বহুবিবাহ সবার জন্য নয়।

  • কুর’আন যেখানে স্পষ্ট সেখানে আপনি হাদিসের ভিন্ন ব্যাখ্যা থেকে উত্তর খুঁজছেন। রাসুল সা নিজেই তো একাধিক বিয়ে করেছিলেন । অন্যান্য সাহাবিরা বহু বিবাহ করেছিলেন, উমার রা করেছিলেন। হযরত ফাতিমা রাযিআল্লাহু তায়ালা য়ানহার ইন্তেকালের পর হযরত আলী রা আরো কয়েকটি বিয়ে করেছিলেন। অদ্ভুত যুক্তি দিলেন আপনি। রাসুল সা ফাতেমা রা কে অনেক বেশি ভালোবাসতে এবং তিনি তাকে নাখোশ করতে চাইতেন না এটাই স্বাভাবিক। তেমনি আলী রা ও চাইতেন না। তাই অনুমতি চেয়েছিলেন। অন্যদিকে বহু সাহাবা একাধিক বিয়ে করেছেন রাসুল সা এর অনুমতি চান নি। হাদিসের এক পেশে ব্যাখ্যা করে একাধিক বিয়েকে কোন সীমানায় বেধে রাখা যাবে না। সীমানা একটাই যা আল্লাহ পবিত্র কুর’আনে বলেছেন ‘ন্যায় সঙ্গত আচরণ’।

(৪)

– হাসি পাচ্ছে, এখন বুঝতে পারলাম আপনি কেন বহু বিবাহের কথা বলছেন …।

  • এটা কোন হাসির কথা হচ্ছে না, দ্বীনের একটা সিরিয়াস বিষয়ে কথা হচ্ছে। আর এটাও খেয়াল রাখা চাই বোন আপনার হাসি যেন কোন ইসলাম সম্পর্কে অজ্ঞ বা ইসলামবিরোধী ব্যক্তির হাসির কারণ না হয়।
(৫)
– ভাল লাগল……. অপ্রয়োজনে নয় পুরুষকে প্রয়োজনে দুই-তিন-চারটি পর্যন্ত বিবাহ করিতে প্রস্তুত থাকিতে হইবে….

সে প্রয়োজন সামনে নিশ্চিতরূপে আসিতেছে। কারণ ইহা সম্পর্কে নবীজী ছাল্লাল্লাহু য়ালাইহিস সাল্লামের ভবিষ্যতবাণী আছে। একজন পুরুষকে স্ত্রী-মা- বোন ইত্যাদি ৫০ জন নারীর দায়িত্ব নিতে হবে।

(৬)
– শরীয়তে একাধিক বিবাহ বৈধ করা হয়েছে । দ্বীন ইসলামের জন্য জরুরী মনে করা ভুল । বরং এমন শর্ত দেওয়া হয়েছে যা অনেকের জন্য অসম্ভব ।
  • জরুরী বিধায়ই বৈধ করা হয়েছে। কি পরিমাণ জরুরী যে আল্লাহতায়ালা তার কালামে এটা অন্তর্ভুক্ত করেছেন, যার এক এক হরফ না পড়লেও দশ দশ করে নেকী হয়, এর চেয়ে জরুরী আর কি হতে পারে !! আর যেসব শর্ত দেয়া হয়েছে তা মানতে পারবে কি পারবে না সেটা ঐ ব্যক্তির সিদ্ধান্তের ব্যাপার। যদি মানতে না পারে তবে আল্লাহ তাকে শাস্তি দিবেন বা মাফ করে দিবেন। এটা আল্লাহর সাথে ওই লোকের ডিলিংস।

– কিন্তু মাঝখানে থার্ড পারসন আছে (ওয়াইফ)। উনি মাফ না করলে আল্লাহও মাফ করতে পারবেন না।

  • নাউযুবিল্লাহ !!! আপনি আল্লাহর ক্ষমতাকে কমিয়ে দিচ্ছেন কেন? আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া সাল্লাম) কি বলেন নাই, একমাত্র শিরকের গুনাহ ব্যতীত আল্লাহ যেকোন গুনাহ ক্ষমা করিয়া দিতে পারেন? আল্লাহ জালেমকেও ক্ষমা করিতে পারেন। আপনি কি হজ্ব করিয়াছেন? হজ্ব করিলে জানিতেন, আরাফার ময়দানে আল্লাহর নবী (ছা) জালিমদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করিয়াছেন। কিন্তু আল্লাহ তাহা সেখানে কবুল করেন নাই। অতঃপর পেয়ারা নবী মুযদালিফায় আল্লাহকে এই বলিলেন যে, ইয়া আল্লাহ ! আপনি আপনার পক্ষ হইতে মজলুমকে পোষাইয়া দিয়া তো জালিমকে ক্ষমা করিতে পারেন। তখন আল্লাহপাক নবীজীর এই দুয়া কবুল করিলেন। এজন্য মুযদালিফায় গিয়া না জানি কত জালিম আল্লাহর ক্ষমা পাইয়া যাইতেছে। আর মযলুমদের তো আল্লাহ তাহার নিজ পক্ষ হইতে ক্ষমা করিয়া পোষাইয়া দিচ্ছেন। কাজেই আল্লাহর সম্পর্কে বড় ধারণা রাখুন বোন। তাহলে আল্লাহও আপনার সহিত বড় ব্যবহার করিবেন।

– কিন্তু সব স্ত্রীর সাথে ন্যায়সঙ্গত আচরণ করা তো সম্ভব নয় …।

  • কোন মুসলিম পুরুষ ন্যায় সঙ্গত আচরণ করতে পারবে কি না, এটি তার বিষয়, আমাদের তর্ক করার অধিকার নেই এমনকি প্রথম স্ত্রী’র এই নিয়ে তর্ক করার অধিকার নেই। সে যদি মনে করে পারবে না তবে একটি বিয়ে করবে অন্যথায় চারটা পর্যন্ত বিয়ে করতে পারে। উল্লেখ্য যে, স্ত্রীদের মাঝে সমতাপূর্ণ আচরণ না করলে, তারা কিয়ামতের দিন পক্ষাঘাতগ্রস্থ অবস্থায় উত্থিত হবে।

– ঘরে বউ থাকতে আবার বিয়ে করা এটা কি প্রথম স্ত্রীর প্রতি জুলুম নয়?

  • দ্বিতীয়া স্ত্রীকে তার অধিকার থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা বা ফিকির করা এটা কি সে বেচারীরর প্রতি জুলুম নয়। লোকটি প্রথম স্ত্রীর যতটুকু স্বামী, দ্বিতীয় বা তৃতীয়া স্ত্রীরও তো ঠিক ততটুকু স্বামী।

আর তাছাড়া, আপনি যে আল্লাহর হুকুমকে, আল্লাহর নবীর সুন্নতকে মন থেকে মানতে পারছেন না, এটা কি জুলুম নয় – এ জুলুমের বিচার কে করবে?

– জ্বী আসলেই, এটা নারীদের জন্য একটি শক্ত পরীক্ষা। কিন্তু এটা পুরুষদেরও পরীক্ষা নয় কি? তারা বর্তমানে ১ স্ত্রী ও ১ মায়ের অধিকারে সামঞ্জস্য করতেই হিমসিম খাচ্ছে !

  • অবশ্যই এটা পুরুষদের জন্যও একটা কঠিন পরীক্ষা। ১ স্ত্রী ও ১ মায়ের অধিকার রক্ষায় কম বেশী অপারগ হলে গুনাহ হবে, অনেক বড় গুনাহ। কিন্তু ইনশাআল্লাহ এতে ঈমান যাবে না, আর আল্লাহর কোন বিধানের প্রতি সামান্য ভ্রূ-কুঞ্চিত করলে ঈমান যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। গুনাহের শাস্তিও হতে পারে, ক্ষমাও হতে পারে। কিন্তু ঈমান গেলে তার কোন ক্ষমা নেই।
    আর তাছাড়া সামঞ্জস্য রক্ষায় অপারগ হলে এর পেছনে মা বা স্ত্রী বা তাদের উভয়ের প্ররোচনা বা হাত আছে কি না, ন্যায়বিচারক আল্লাহ আশা করি সেটাও দেখবেন।

(৭)

– এক বোন প্রশ্ন করলেন, এটার সাথে কি পুরুষের জৈবিক চাহিদা সম্পর্কযুক্ত?

  • জ্বী, আলহামদুলিল্লাহ, ভালো পয়েন্ট বলেছেন। পুরুষরা স্বভবত বহুগামী। ইসলাম পুরুষদের এ স্বভাবের মূল্যায়ন করেছে। কিন্তু এতে সমাজে যেন পিতৃপরিচয়হীন সন্তান না জন্মে সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরী না হয়। উল্টোদিকে নারীদের ইজ্জত ও নিরাপত্তার মূল্যায়নও করেছে। কারণ নারীদের ইজ্জত ও নিরাপত্তা খুব বেশী প্রয়োজন। যেন কোন নারীকে পেতে হলে তার ভরণপোষণসহ আরো আনুসঙ্গিক দায়িত্ব নিতে হবে। তাকে যথাযথ ইজ্জত ও সম্মান দিতে হবে। এবং সাথে সাথে সন্তানেরও দায়িত্ব নিতে হবে। এখানেই কাফেরদের সমাজ ও মুসলমানদের সমাজের মধ্যে পার্থক্য। এভাবে ইসলাম একসাথে সব কয়টি দিক কভার করেছে।
  • চার বিয়ে কেন?
    এক ভাইয়ের ব্যক্তিগত মত হলো –
    নারীর যৌন জীবন পুরুষের মত দীর্ঘ নয়। তাই এক নারীতে পুরুষ চাহিদা মেটে না। এ ছাড়া নারীর দেহ জটিল। প্রায় সময় ফিট থাকে না। এক নারীতে সন্তুষ্ট থাকতে হলে পুরুষ ব্যভিচারের দিকে ধাবিত হতে পারে। অথবা তালাক দিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে। তালাক দেয়া অনুমতি থাকলেও নিরুৎসাহিত করা হয়েছে ইসলামে।
    — আর ধর্মীয় কারণ হলো-
    শেষ জামানায় হাদীছ অনুযায়ী একজন পুরুষ পঞ্চাশ নারীকে রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে। বা করবে। পুরুষ সংকট থাকবে। এখানে আল্লাহ ইঙ্গিত দিচ্ছেন নারী বেশী হবে পুরুষের তুলনায়। তাই একাধিক বিয়েই সমাধান।
    এছাড়া ভায়োলেন্স, যুদ্ধবিগ্রহ, মাদক এবং male child mortality বেশী হওয়া ইত্যাদি কারণে এমনিতেই নারীর তুলনায় পুরুষ কম বাঁচে। শুরুতেই। এ ছাড়াও জন্মগতভাবেই নারীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা পুরুষের তুলনায় বেশী। এটি মেডিকেল science এর fact.
    সব মিলে –
    নারীর যৌন সীমাবদ্ধতা, নারীর সংখ্যাধিক্যতা, পুরুষের নিরবিচ্ছিন্ন যৌন চাহিদা ইত্যাদি নানাবিধ কারণ চার বিয়ে বাস্তবধর্মী। আরেকভাই কিছু বলছেন –
  • অনেকগুলো যুক্তি রয়েছে। তবে প্রথমে এটা দেখতে হবে সুন্নাহ কে সুন্নাহ হিসেবে মানতে হবে। যদি পানি বসে খাওয়াতে কোন উপকার না থাকে তবুও তা মানা সুন্নাহ। ডান দিকে কাত হয়ে শুলে কোন উপকার না থাকে তবুও সুন্নাহ হিসেবে মানতে হবে। বর্তমান সভ্যতা এই নিয়ে যুক্তি খুঁজে আগের মানুষ যখন শুনতেন সুন্নাহ সাথে সাথে মেনে নিতেন এটার ভালো মন্দ বিবেচ্য হত না।তবে যুক্তি এখন দেখা হয় বিশেষ করে দাওয়া’র কাজে। আমি মনে করি অনেক যুক্তি রয়েছে একাধিক বিয়ের ক্ষেত্রে
    – ছেলেদের যৌন আকাঙ্ক্ষা মেয়েদের তুলনায় অনেক বেশি এবং স্থায়ী তাই অনেক ছেলের চাহিদা একজন মেয়ে মিটাতে পারেনা। এটি প্রতিষ্ঠিত সত্যি হাজারো রিসার্চ রয়েছে এ নিয়ে। আশে পাশে তাকিয়ে অভিজ্ঞতা থেকেই বুঝতে পারা যায়।
    – যুদ্ধের পরবর্তী সময়ে একাধিক বিয়ের আয়াত নাজিল হয়, কারণ অনেক নারী বিধবা হচ্ছিল তাই তাদেরকে বিয়ে করার জন্য একাধিক বিয়ে করা জরুরি ছিল।
    – দুনিয়াতে স্বাভাবিক ভাবেই মেয়ের তুলনায় ছেলেরা অধিক এক্সিডেন্টালি মারা যায় তাই মেয়ের চাইতে ছেলের সংখ্যা কম। মেয়েদের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা ছেলের তুলনায় বেশি কার্যকর। যুদ্ধ সহ অন্যান্য তেও ছেলেরা বেশি মরে অর্থাৎ সব মিলিয়ে নারীদের সংখ্যা পুরুষের চাইতে বেশি।
    -অধিক সন্তান পাওয়ার জন্য

    সর্ব প্রথম ও সর্বশেষ হল এটি সুন্নাহ তাই যার সামর্থ্য রয়েছে সে সুন্নাহ পালনের জন্যই একাধিক বিয়ে করতে পারে।

– শুধু সুন্নাহ নয়। ইসলামের কোন ব্যাপারেই কোন আপত্তি নেই। ইসলাম এক পূনার্ঙ্গ জীবন বিধান। কিন্তু একটি প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। একজন পুরুষ যদি বেনামাজী হয়, মদ জুয়া বেটিং করে। স্ত্রী বা সন্তানের প্রতি কোন দায়িত্ব না করে তখনও কি এই সুন্নাহ সমভাবে অর্পিত থাকবে?

  • কিন্তু একটি প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে – এই কিন্তুটাই সমস্যা। এই কিন্তুটাকে দূর করতেই হবে। যেন কোন ‘কিন্তু’ আমার জান্নাতের পথ আটকে না দাঁড়ায়। ইসলামের সবকিছু সমভাবে সবার জন্য। এটা পরীক্ষার হল। এখানে কেউ ইচ্ছা করলে মদ খেতে পারে, কেউ চাইলে জিনা করতে পারে, এমনকি কেউ চাইলে শিরকও করতে পারে। যে মদ খায় তাকেও এখানে দ্বিতীয় স্ত্রী বা তৃতীয় স্ত্রী লাভের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হয় নাই। কিন্তু আখিরাতে তার দুনিয়ার কাজের হিসাব হবে। যার নেকের পাল্লা ভারী হবে সে জান্নাতে যাবে। আর যার গুনাহের পাল্লা ভারী হবে সে জাহান্নামে যাবে (যদি আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন সেটা ভিন্ন কথা)। মা-বাবা-স্বামী-সন্তান এসব কোন সম্পর্ক সেদিন কোন কাজে আসবে না।
  • যে ব্যক্তি তার প্রথম স্ত্রীর প্রতি ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করে না, সেও যদি দ্বিতীয় আরেকটি বিয়ে করে তাও সমাজের জন্য কল্যাণকর । কেননা হয়ত দেখা যাবে সে বিয়ে না করলে সেই মুসলিম বোনটির কোন বিবাহ হতো না । আর এভাবে সেই মুসলিম বোনটি বৈধভাবে তাহার শারীরিক চাহিদা মেটানোর একটি উপায় পেয়ে গেলেন যাতে সমাজের ‍উপর ইতিবাচক প্রভাব পড়ে থাকে । আরেক ভাই মন্তব্য করলেন।

– “আর যদি তোমরা ভয় কর যে, এতীম মেয়েদের হক যথাথভাবে পুরণ করতে পারবে না, তবে সেসব মেয়েদের মধ্যে থেকে যাদের ভাল লাগে তাদের বিয়ে করে নাও দুই, তিন, কিংবা চারটি পর্যন্ত। আর যদি এরূপ আশঙ্কা কর যে, তাদের মধ্যে ন্যায় সঙ্গত আচরণ বজায় রাখতে পারবে না, তবে, একটিই অথবা তোমাদের অধিকারভুক্ত দাসীদেরকে; এতেই পক্ষপাতিত্বে জড়িত না হওয়ার অধিকতর সম্ভাবনা।”

  • এটা আল্লাহ তায়ালার দেয়া গাইডলাইন। পুরুষরা এই গাইডলাইনের উপর আমল করার চেষ্টা করবে নিজ সাধ্যমত। সব আমলেরই গাইডলাইন আছে। কিন্তু এ গাইডলাইন দেখিয়ে অন্য কেউ তাকে বিরত রাখতে পারবে না। যদি সে গাইডলাইন ঠিকমতো ফলো না করে তাহলে আল্লাহ তাকে শাস্তি দেবেন বা নিজ দয়ায় ক্ষমা করবেন।
  • বোন অবশ্যই সে ব্যক্তি গুনাহগার হবেন, এবং তাকে বহুবিবাহ করার পূর্বেই আল্লাহ সাবধান করছেন তা যদি সে না মানে তবে আল্লাহ আর সে বান্দার মাঝে ফয়সালা হবে। মানুষ হিসেবে আমাদের অধিকার নেই তাকে মানা করা। যেমন একজন ব্যক্তির নেসাব পরিমাণ সম্পদ হল এখন যাকাত তার উপর ফরজ, যাকাত আদায় না করলে সে গুনাহগার হবে। এখন একজন কৃপণ বা মদ খোঁড় বা খারাব ব্যক্তিকে আমরা বলতে পারি না যে, তুমি এত বেশি সম্পদের অর্জন কর না কারণ তুমি তো যাকাত আদায় করতে পারবে না। বরং আমাদের বলতে হবে আল্লাহর দেয়া নেয়ামত হালাল ভাবে অর্জন করে তার যাকাত আদায় কর। তেমনি তুমি যদি পারো তবে একাধিক বিয়ে কর কিন্তু বিয়ের পরে সমতা রক্ষা কর। আমাদের কাজ উপদেশ দেওয়া। কোন সুন্নাহ’র প্রতি নিরুৎসাহিত করা না।
  • কিন্তু, কিন্তু, কিন্তু, কিন্তু!!!
    কিন্তুতে আটকে থাকলে আগে বাড়া সম্ভবপর হবে না। অনেক হাদিস শোনার সময় দেখেছি যে, আল্লাহর রাসূল কিছু বলার আগে সাহাবীদের সে বিষয়ে আগে কিছু জিজ্ঞাস করে নিতেন। প্রায় সব ক্ষেত্রেই তারা কোনো কিছু চিন্তা না করেই বলে ফেলতেন “আল্লাহ ও তার রাসূলই ভাল জানেন”। এরপর নবী করিম (সাঃ) সে বিষয় গুলো ভেঙে বলতেন।
    এখানে লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, সাহাবীদের মধ্যে অনেকেই হয়তো সেসব শুনে অবাক হতেন অথবা সে বিষয়ে কিছু না কিছু আশংকা (ধারণা) করতেন। যাইহোক, তাদের তাৎক্ষণিক সোজা জবাব হতো যে- “আল্লাহ ও তার রাসূলই ভাল জানেন”। এখানেই তারা কিছু না ভেবে শোনা মাত্রই আল্লাহ ও রাসূল (সাঃ)- এর বশ্যতা স্বীকার করতেন। এখান থেকেও আমরা তাদের ঈমানের বিষয়ে ভাল ধারণা পাই। তারা এতো সহজেই কোথাও কোনো “কিন্তু” দেখতেন না বা খুঁজতেন না। তারা ছিলেন প্রকৃত বিশ্বাসীদের দলে।

শেষ কথাঃ এখানে সমাজ কি বলে, বাংলাদেশে পুরুষের তুলনায় নারীর সংখ্যা কত, বা খিলাফত কায়েম হয়েছে কি না, বা কেউ ন্যায়সঙ্গত আচরণ করতে পারছে কিনা বা তার চরিত্র ও ধার্মিকতা সাহাবাদের মত কি না ইত্যাদি বিষয় বিবেচ্য নয়। তাই অদ্ভুত সব যুক্তি দিয়ে আল্লাহর আয়াতকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ঈমানহারা হতে সাবধান হন। বহুবিবাহ একটি সুন্নাহ এবং সুন্নতের অবশ্যই প্রচার প্রসার করা উত্তম কাজ। হাদিস অনুযায়ী একটি সুন্নত জিন্দা করার অনেক ফজিলত রয়েছে।

বহুবিবাহ একটি সুন্নাহ কিন্তু আজ ঈমান ও কুফুরের মাঝে পার্থক্য রূপে দাঁড়িয়ে আছে, কারন বর্তমানে আল্লাহর এই বিধানের প্রতি আত্মসমর্পণ করা নিয়ে সন্দেহ করা হচ্ছে। বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর।

কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ

Kaisar Ahmed

Ashraf Mahmud

Mohammad Nurul Amin Chowdhuri

Bashir Mahmud Ellias

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান